বৃহস্পতিবার, ০২ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:১২ পূর্বাহ্ন

সংস্কার ও হত্যার বিচার নিশ্চিতের পর নির্বাচন হওয়া উচিত—মাওলানা মমতাজ

জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না, লালমনিরহাট প্রতিনিধি।। ‎রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন বলেছেন, দেশের স্বাধীনতা হাজারো শহীদ ও আহতদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত। এ দেশে চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজদের কোনো স্থান নেই। প্রয়োজনীয় সংস্কার, পিআর পদ্ধতির সংস্কার ও সকল হত্যার বিচার নিশ্চিতের পরেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন।

‎শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লালমনিরহাট-২ আসনের আদিতমারী অডিটোরিয়ামে দিনব্যাপী দায়িত্বশীল কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

‎তিনি বলেন, সামনে জামায়াতের কঠোর কর্মসূচি আসতে পারে। এসব কর্মসূচি সফল করতে সবাইকে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে এবং প্রয়োজনে শহীদি মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

‎তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, শাসনব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করলে জনগণের মধ্যে আপ্যায়ন বাড়বে এবং সত্যিকারভাবে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটবে। নির্বাচন-প্রক্রিয়ার প্রতি মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনা না হলে কোনো নির্বাচন দেশের জন্য ফলদায়ক হবে না। তাই প্রয়োজনীয় সব সংস্কার দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।

‎মাওলানা মমতাজ উদ্দিন আরো বলেন, কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে আইনি পথে তা অনুসরণ করে বিচারের মুখোমুখি করা হোক। তিনি সকল রাজনৈতিক দল, সংস্থা ও নাগরিক সমাজকে শান্তিপূর্ণ ও সাংবিধানিক উপায়ে রাজনৈতিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। তার ভাষায়, অধিকতর জনগণভিত্তিক ও অবাধ নির্বাচন বাস্তবায়নের জন্য সুষ্ঠু তদন্ত, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন ও সব পক্ষের সমতামূলক সুযোগ প্রয়োজন।

‎বক্তা কর্মশালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকাকেও গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত থাকুক—তবে তাদের কর্মকাণ্ড সবার কাছে সমভাবে গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ হওয়া দরকার।

‎তিনি স্থানীয় নেতৃত্ব ও যুবসমাজকে একজোট হয়ে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষা করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, শিক্ষা, রাজনৈতিক জ্ঞানের বিস্তার ও সচেতন নাগরিক অংশগ্রহণ ছাড়া স্থায়ী পরিবর্তন সম্ভব নয়। তরুণ-তরুণীদের মধ্যে জনস্বার্থ ও নৈতিক নেতৃত্ব গড়ে তুলে শান্তিপূর্ণ পুনর্গঠন সম্ভব।

‎কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বাণীতে জেলার বিভিন্ন সমাজকর্মী ও শিক্ষাবিদরাও বক্তৃতা দেন। তারা বলছেন—যুগোপযোগী ভোটার তালিকা, স্বচ্ছ ব্যালট বিতরণ, সিসিটিভি ও পর্যবেক্ষক উপস্থিতি নিশ্চিত করলে নির্বাচন প্রক্রিয়া অনেক বেশি বিশ্বাসযোগ্য হবে। কয়েকজন বক্তা আদালত ও তদন্ত সংস্থার স্বাধীনতা জোরদার করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

‎আয়োজকরা কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মতবিনিময় ও সমস্যা চিহ্নিত করে পরবর্তী পদক্ষেপের পরিকল্পনা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এসময় উপস্থিতরা বলেন, গণতন্ত্র রক্ষায় সকলের অংশগ্রহণ অনিবার্য এবং ন্যায়বিচারের জন্য রাজনৈতিক সহমর্মিতা ও আইনগত পদক্ষেপ দ্রুত প্রয়োজন।

‎কর্মশালা শেষে মাওলানা মমতাজ উদ্দিন স্থানীয় প্রশাসন, সংগঠক ও অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, দেশকে আগের চেয়ে বেশি সুবিচারপ্রিয় ও মুক্ত রাখা আমাদের সবার দায়।

‎দিনব্যাপী কর্মশালা লালমনিরহাট জেলা আমীর অ্যাডভোকেট আবু তাহেরের সমাপনী বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বিকেল সাড়ে ৪টায় শেষ হয়।

‎অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, আদিতমারী ও কালীগঞ্জ-২ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ও জেলা সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মো. ফিরোজ হায়দার লাভলু, জেলা সহকারী সেক্রেটারি হাফেজ শাহ আলমসহ জেলা ও উপজেলা জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com