শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫, ০৫:১৩ অপরাহ্ন

রাজনীতিতে যোগ দিচ্ছেন তারেক কন্যা জাইমা রহমান

রাজনীতিতে যোগ দিচ্ছেন তারেক কন্যা জাইমা রহমান

অনলাইন ডেস্ক:: রাজনীতিতে যোগ দিচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যা জাইমা রহমান। ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পরিবর্তে অংশ নেবেন তার কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমান। তার এই কর্মসূচিতে অংশ নেয়ায় বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন উঠেছে, এবার কি সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে আসছেন তারেক কন্যা জাইমা। যদিও তার রাজনীতিতে পা রাখার বিষয়টি নিয়ে দল থেকে স্পষ্ট ধারনা পাওয়া যায়নি।

আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’ অনুষ্ঠানে বিএনপির তিন শীর্ষ নেতা আমন্ত্রণ পেয়েছেন। আমন্ত্রিতরা হলেন- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

১৯৫৩ সাল থেকে মার্কিন কংগ্রেসনাল কংগ্রেসের নেতৃত্বে জাতীয় প্রার্থনা প্রাতঃরাশ অনুষ্ঠিত হয়। এবারের অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকতে পারেন।

আলোচিত ঘটনা হলো, ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়েও যাচ্ছেন না বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে যাচ্ছেন তার কন্যা জাইমা রহমান। যার পরিচয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নাতনী, খেতাবপ্রাপ্ত চিকিৎসক জোবাইদা রহমানের একমাত্র কন্যা। এছাড়া ২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ৫ ফেব্রুয়ারির অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার উদ্দেশে রওনা দিবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

রাজনীতি বিশ্লেষক মহিউদ্দিন খান মোহন বলেন, যেহেতু জাইমা রহমান রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। সেহেতু তাকে রাজনীতিতে আসতেই হবে। আজ হোক কাল হোক, ভবিষ্যত প্রজন্মের দিক থেকে ভাবলেও তাকে রাজনীতিতে বেশি প্রয়োজন। ভারতের থেকে পাওয়া যায়, গান্ধীর পরিবারে থেকে ইন্দিরা গান্ধী থেকে রাজীব গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, রাহুল গান্ধী এসেছেন রাজনীতিতে। এদেশে জিয়া পরিবার থেকে সেই মোতাবেক জিয়াউর রহমান থেকে বেগম খালেদা জিয়া, সেখান থেকে তারেক রহমান এসেছেন। জাইমা রহমানকে তো রাজনীতিতে আসতেই হবে। তারেক রহমানের পরিবর্তে তিনি যদি ‘ন্যাশনাল প্লেয়ার ব্রেকফাস্ট’ অনুষ্ঠানে অংশ নেন, তবে এ ক্ষেত্রে তিনি বাংলাদেশকে উপস্থাপন করবেন। বিশ্বের গণমান্য ব্যক্তিদের সাথে কথাবার্তা বলবেন, যোগাযোগ হবে। এটা সুসংবাদ বলা যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন প্রবীণ রাজনীতিবিদ বলেন, ব্যারিস্টার জাইমা রহমান ছোট বেলায় লন্ডনে গিয়েছেন। সেখানে শিক্ষা জীবন পার করছেন। সেখানে তিনি নাগরিকত্ব পেয়েছেন কি না, এটা জানি না। উনি তারেক রহমানের পরিবর্তে জাইমা রহমান সে প্রোগ্রামে যাবেন, সেটা কোনো রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান নয়। তবে বিশ্বের অনেক দেশের প্রধানরা অংশ নেন এই প্রোগ্রামে। কথাবার্তা বলবেন, একটা যোগযোগ তৈরি হবে।

‘এ ছাড়া জাইমা রহমান ইয়াং, নতুন প্রজন্মের রাজনীতিতে তার প্রয়োজন আছে বলে করছে বিএনপি। এভাবে তার কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার বিষয়টি ‘ রাজনীতিতে গ্রহণযোগ্যতা ক্রীড়নক’ প্রবেশ হিসেবে জিয়া পরিবারের কৌশলের প্রক্রিয়া হতে পারে বলে – যোগ করেন এই রাজনীতিবিদ।

জাইমা রহমানের রাজনীতিতে আসাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য আবু নাসের মো. রহমতুল্লাহ। নয়া দিগন্তকে তিনি বলেছেন, একটি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান রাজনীতিতে আসবে এটা খুবই স্বাভাবিক। জাইমা রহমান বয়সে তরুণ। বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ রাখার জন্য জাইমা রহমান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে বলে মনে করেন তিনি।

আইনে শিক্ষা নিয়েছেন তারেক রহমান কন্যা জাইমা। লন্ডনে জীবন কাটাচ্ছেন বারা-মার সাথে। রাজনীতিক পরিবারে জন্ম হলেও রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচি দেখা যায়নি তাকে। লন্ডনে সর্বোচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছেন তিনি। এই প্রথম বাবার অবর্তমানের বৈশ্বিক আয়োজনে প্রথম অংশগ্রহণ করবেন।

দলীয় একটি সূত্র জানায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যোগ দিবেন না । তাঁর অবর্তমানে কন্যা জাইমা রহমান অংশ নিবেন। ভিসা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি চলছে। যেহেতু বিএনপির তিন শীর্ষ নেতা আমন্ত্রণ পেয়েছেন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি হিসেবে, সেহেতু বলা যায়, জাইমা রহমানের একটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব করবেন। এটা বলা যায়, রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রথম অভিষেক।

জানা গেছে, বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এ মুহূর্তে তার বড় ছেলে তারেক রহমানের যুক্তরাজ্যের বাসায় অবস্থান করছেন। তিনি সেখানে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। এমন অবস্থায় মাকে রেখে কোথাও যেতে চাইছেন না তারেক রহমান। এ কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট অনুষ্ঠানেও যাবেন না তিনি। তবে ওই অনুষ্ঠানে নিজে উপস্থিত হতে না পারলেও তার প্রতিনিধি হিসেবে মেয়ে জাইমা রহমানকে পাঠাচ্ছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যেতে জাইমা রহমানের ভিসা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি চলছে।

বিএনপি নেতাদের মতে, বৈশ্বিক আয়োজনে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে পা রাখবে জায়মা রহমান। তার দাদী বেগম খালেদা জিয়াও বিশেষ পরিস্থিতিতে বিএনপির হাল ধরেছিলেন। পুরোদস্তর রাজনীতিতে আসবেন কিনা তা নির্ভর করবে তার বাবা-মার সিদ্ধান্তের ওপর। বরাবরের মতো মা জোবাইদা রহমানকে সাথে নিয়ে বাবাকে সহযোগিতা করছেন এবং আগামীতেও করবেন এমনটাই ধারণা নেতাকর্মীদের।

উল্লেখ্য, ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’ অনুষ্ঠানটি ১৯৫৩ সাল থেকে প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট, সিনেটর, কংগ্রেস সদস্য, ব্যবসায়ী ও ১০০টিরও বেশি দেশের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করে থাকেন। এ অনুষ্ঠানটি একটি নির্দলীয় সংস্থা এবং রাজনৈতিক, সামাজিক ও ব্যবসায়িক অভিজাতদের একত্রিত হয়ে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করার এবং একত্রে প্রার্থনা করার জন্য একটি বিশেষ ফোরাম। এ ফাউন্ডেশন মার্কিন নীতিনির্ধারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বিশ্ব শান্তি ও ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com