সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:৩৩ পূর্বাহ্ন

বাঘায় শেষ মূহুর্তে গরু ক্রয়-বিক্রয় করতে দৌড়ঝাপ, চরাঞ্চলের গরু যাচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন হাটে

বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাঘায় কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয় করতে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন ক্রেতা বিক্রেতারা। ছুটছেন স্থানীয় হাট-বাজার ও গ্রামে গ্রামে। শেষ মূহুর্তে কোরবানির পছন্দের গরু কিনতে ক্রেতাদের ভিড়ে জমে উঠেছে পশু হাটগুলো । অপরদিকে উপজেলার চর এলাকার অধিকাংশ গরুগুলো বিক্রির জন্য নেওয়া হচ্ছে, ঢাকাসহ দেশের অন্য কোন হাটে।
রাজার সাড়ে ৩লাখ টাকা দিয়ে কেনা গরু ৩টির দাম উঠেছে ৬ লাখ টাকা। আরো বেশি দামে বিক্রির আশায় রাজধানীর হাটে নিবেন তিনি। আসলাম আলী, ২টা গরু কিনেছেন ৪ লক্ষ টাকায়। ৬লক্ষ টাকা হলে বিক্রি করবেন বলে জানান। সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা দিয়ে ৩টি গরু কিনে ১সপ্তাহ আগে ২টা বিক্রি করেছেন ২,লাখ ৩৮ হাজার টাকায়। যেটা আছে,সে গরুটি প্রায় ২ লাখ টাকায় বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন লক্ষীনগর গ্রামের জমসের আলী। একই গ্রামের তমছু মোল্লা ৬টা গরুর মধ্যে ২ টা বিক্রি করেছেন ২লাখ ৯২ হাজার টাকায়। বিক্রি করা গরু ২টি তার কেনা ছিল ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকায়। কালিদাশখালি গ্রামের হজরত আলীর ২টি গরু বিক্রি করেছেন ৩লাখ ১৮ হাজার টাকায়। গরু ২টি কিনেছিলেন ২লক্ষ টাকা দিয়ে।
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চরাঞ্চলের প্রায় ২ হাজার মানুষ কোরবানির আগে পালন করা গরুগুলো শহরের হাটে নিচ্ছেন বিক্রির জন্য। মালিকদের নিবিড় পরিচর্যায় গরুগুলো সুন্দর ও আকর্ষণীয় চেহারায় রূপ নিয়েছে। কোরবানির হাটগুলোতে দেশি গরুর চাহিদা বেশি থাকায় চরাঞ্চলের ১০ গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ দেশি গরু পালনের দিকে আগের চেয়ে বেশি মনোযোগ দিয়েছেন। ভারতীয় গরু আসা কমে যাওয়ায় এখন চরের প্রায় মানুষই গরু পালনে জোর দিয়েছেন।
চর এলাকার তমছু মোল্লা জানান, চরাঞ্চলের ১০ গ্রামের ৬০ শতাংশ লোক কোরবানির আগে বিক্রির জন্য উন্নতজাতের এঁড়ে বাছুর ক্রয় করে মোটাতাজাকরণ প্রকল্প গ্রহণ করেন। পরে এসব গরু স্থানীয় হাটসহ দেশের বড় বড় শহরের হাটে বিক্রি করেন। কোরবানির আগে ২/১ জন এলাকা থেকে বিক্রি করলেও অনেকেই বেশি দাম পেতে ঢাকাসহ দেশের অন্য কোন হাটে নিচ্ছেন পালন করা গরুগুলো বিক্রির জন্য।
এবার গরুর আমদানি বেশি থাকায় ক্রেতারাও তাদের পছন্দের গরু কিনতে পারছেন বলে জানালেন গরু ক্রেতা আব্দুল হানিফ। চর চকরাজাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুল আযম বলেন, চরের বেশিরভাগ মানুষ গরু পালন করে কোরবানির আগে বিক্রি করে অত্যন্ত লাভবান হচ্ছে। তবে ভারত থেকে মাঝে মধ্যে গরু আসছে আবার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। গরু আমদানি বন্ধ হয়ে গেলে আগামীতে খামার বৃদ্ধি পাবে ও অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে। গরুর খামার ব্যবসায় সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে অনেকেই এ পেশায় আসতে উৎসাহিত হবেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলাম বলেন, উপজেলার চরাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি বাড়িতে গরু পালন করে। আসন্ন কোরবানির ঈদে খামারিরা যদি ন্যায্য দামে গরু বিক্রি করতে পারেন তাহলে লাভবান হবেন এবং খামার ব্যবসায় আগ্রহী হবেন। পুষ্টিকর খাদ্য খাইয়ে গরু মোটাতাজা করতে প্রাণিসম্পদ অফিসের পক্ষ থেকে তাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com