মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫, ১০:৫০ অপরাহ্ন

বাঘায় মধুমাসে উপহারের আমে কুরিয়ার ব্যবসা জমজমাট

বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি::

মোটা পলিথিনে মোড়ানো ঝুড়িগুলো মৌসুমি আমে ঠাসা। কুরিয়ার অফিসের সামনে রাখা ঝুড়ি কিংবা কার্টুনভর্তি আম দেখেই বোঝা গেল এগুলো স্রেফ উপহারের জন্য রাখা হয়েছে। রাজশাহীর বাঘা থেকে প্রতিদিন এসব আম পাঠানো হচ্ছে, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরের আত্মীয়স্বজন,বন্ধু বান্ধবসহ বিভিন্নজনের কাছে। আমের মৌসুম ঘিরে কুরিয়ার সার্ভিসগুলোর ব্যাবসা চলছে পাল্লা দিয়ে। এর মধ্যে আমের কেনা-বেচা ঘিরে উৎসব শুরু হয়েছে রাজশাহীর বাঘায়।

আর দেশের বিভিন্ন জেলায় বাঘার সুস্বাদু আম পাঠাতে ব্যস্ত সময় পার করছে কুরিয়ার সার্ভিসগুলো। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, কেউ হিসেব নিচ্ছেন, কেউবা টাকা গুনছেন, কেউ কলম দিয়ে নম্বর-ঠিকানা লিখছেন। আর শ্রমিকরা আমের ঝুড়ি বেঁধে মাথায় করে পরিবহনের গাড়ি সাজাচ্ছেন। যেন দম ফেলার সময় নেই কারো। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভিড় থাকছে কুরিয়ার সার্ভিসগুলোতে। উপজেলায় ১২ টি কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে প্রতিদিন প্রায় ৪/৫’শ মণের বেশি আম যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। যার সিংহভাগ আম যাচ্ছে ঢাকায়। এরপর চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, যশোর, ফেনী, কুষ্টিয়া, পাবনা, দিনাজপুর, রংপুর, সৈয়দপুর,বগুড়াসহ বিভিন্ন জেলায়। সার্ভিস চার্জ হিসাবে তারা নিচ্ছেন, ঢাকার মধ্যে কেজি প্রতি ১২ টাকা আর ঢাকার বাইরে প্রতিকেজি ১৬ টাকা করে।

কুরিয়ারের ব্যবসায়ীরা জানান, গতবারের চেয়ে এবার অনেক মানুষ বেশি আম পাঠাচ্ছে। তারা জানান, করোনার কারণে এবার যান বাহনের ঝুঁকি না নিয়ে, বাড়িতে অবস্থান করে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আম পাঠাচ্ছেন তারা। আর এ কারনেই তাদের ব্যবসাও এবার ভালো হচ্ছে। পুরো মৌসুম শুরুর পর, তিন/চার সপ্তাহ ধরে আম পাঠানোর এ উৎসব চলছে কুরিয়ার সার্ভিসগুলোতে। এলাকায় খিরসাপাত নামে পরিচিত হিমসাগর আম এখন বেশি পাঠাচ্ছে। এর মাঝে ল্যাংড়াসহ আরো বিভিন্ন জাতের আম আসলে তাদের ব্যবসা আরো বাড়বে। দিন যতই যাচ্ছে ব্যাবসা আরো জমজমাট হয়ে উঠছে। তারা চেষ্টা করছেন ভালো সার্ভিস দেওয়ার।

সোমবার (১৫ জুন) ঢাকায় ছেলের বাসায় আম পাঠাচ্ছিলেন পাকুড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক সদস্য আব্দুস সামাদ। সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের সামনে কথা হলে তিনি বলেন, বিগত বছরের কোন কোন সময় ছেলে এসে নিয়ে গেছে। এবার করোনার কারণে আসতে পারেনি। এবার আম পাঠানোর জন্য সিরিয়ালই পাচ্ছেননা। শাহিন নামের আরেকজন জানান,’আমের মৌসুম এলেই আম কেনা আর পাঠানো নিয়ে অনেক বেশি ব্যস্ত থাকতে হয়। আম পেয়ে আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুরাও যেমন খুশি হন, ঠিক তেমনি তাদের কাছে আম পাঠাতে পেরে ভালো লাগে।

সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের বাঘা শাখার ব্যবস্থাপক শহিদুল ইসলাম জানান,গতবারের চেয়ে এবার বেশি আম পাঠাচ্ছে মানুষ। প্রতিদিন এখন ২৫০ থেকে ৩০০ ঝুড়ির মতো আম যাচ্ছে। এতে প্রায় ১০০ মণের উপরে আম থাকে। কন্টিনেন্টাল কুরয়িার সার্ভিসের ব্যবস্থাপক আশরাফ আলী বলেন,ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় আমাদের সার্ভিস রয়েছে। প্রতিদিন ১০০ থেকে দেড় মণ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাচ্ছি। গতবারের চেয়ে এবার ব্যবসা ভালো হচ্ছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com