বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫, ১০:২৭ পূর্বাহ্ন
বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি::
পৈত্রিক সুত্রে পাওয়া .১৬ শতাংশ জমিতে ঘর বাড়ি তুলে বসবাস করছিলেন বাঘা উপজেলার উত্তর সোনাদহ গ্রামের বাসিন্দা সাজেদা বেগম (৪০)। মৌখিক ভাগ বাটোয়ায় তার অংশ মোতাবেক পাওয়া জমিতে এক বছর ধরে ঘরবাড়ি তুলে বসবাস করছিলেন তিনি। স্থানীয় এক প্রভাবশালি অন্য শরীকদের কাছে ক্রয়সুত্রে মালিকানা দাবি করে সেই জমিতে থাকা বসতবাড়ি উচ্ছেদ করে জমি দখলে নিয়ে চাষ করেছেন। এর ফলে এক সপ্তাহ ধরে আশ্রয়হীন রয়েছে পরিবারটি। এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেও কোন ফল পাননি বলে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী সাজেদার স্বামী আক্তার হোসনে বলেন, ৭ মেয়ে ও ২ ছেলে রেখে মারা যান স্ত্রীর বাবা সোলেমান হোসেন। তিনি মারা যাওয়ার পর অংশ মোতাবেক.২১ শতাংশ জমি পাবে স্ত্রী। মৌখিক ভাগ বাটোয়ারায় একটি দাগে.১৬ শতাংশ জমি দেওয়া হয়েছে। বাটোয়ারা রেজিষ্ট্রি না হওয়ায় মৌখিকভাবে বাটোয়ারা করে জমিটি ভোগ দখল করতে দেন অন্য ওয়ারিশরা। সেই জমিতে ঘর বাড়ি তুলে বছরখানেক ধরে বসবাস করছিলেন। এমতাবস্থায় শৃত শ্বশুর শ্বাশড়ির আত্মার মাগফেরাতের জন্য সেই জমিতে থাকা ৭ টি আম গাছের আম ভোগ দখলের জন্য কট বন্দুক রেখে কোরআন খতমের আয়োজন করা হয়। গাছগুলো কট বন্দুক নেন একই উপজেলার সোনাদহ গ্রামের মৃত চমৎকারের ছেলে মহিদুল ইসলাম। চলতি বছরের ৩ অক্টোবর হঠাৎ করে ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে তাদের ঘরবাড়ি ভেঙে দিয়ে জমি দখল করে চাষাবাস করেন মহিদুল ইসলাম। তার অনুপস্থিতিেিত বাঁধা দিতে গিয়ে তাদের মারধরের স্বীকার হয়েছেন স্ত্রী। খবর পেয়ে আড়ানি বাজার থেকে বাড়িতে ফেরার পথে তাকেও মারধর করে মহিদুল ইসলামের লোকজন। দখলের সময় ঘরের টিনসহ অন্যান্য মালামাল কিছুই রেখে যাননি বলে বাদির পক্ষ থেকে এ দাবি করা হয়েছে। এ বিষয়ে সাজেদা বেগম বাদি হয়ে মহিদুল ইসলাম সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে বাঘা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
সাজেদা বেগম জানান, ওয়ারিশদের কেউ কেউ অন্য কয়েক দাগের জমি বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। পুলিশ জানায়,ওই গ্রামের এক খতিয়ানের একটি দাগের .২১ শতাংশ জমি নিয়ে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে।
সরেজমিন শনিবার (১২ অক্টেবর) গিয়ে দেখা যায়, জমিটি দখলে নিয়ে চাষবাস করা হয়েছে। এক কোণে সামান্য জমি চাষবাস বাদে রাখা আছে। জমি দখলের সময় বাড়ির মালামাল সরিয়ে দেওয়ার সময় সেখানে ছিটিয়ে পড়া ধান-গমের চারাও গজিয়ে উঠেছে। ওই জমিতে বসবাস করছিলেন সাজেদা বেগম ও তার স্বামীসহ পরিবারের ৬ সদস্য।
মহিদুল ইসলাম ক্রয় সুত্রে ওই জমিটির মালিকানা দাবি করে বলেন, মৃত ব্যাক্তির পাঁচ ওয়ারিশের কাছ থেকে তিনি জমিটি খরিদ করেছেন। সাজেদার অংশ মোতাবেক দাগের এক কোণে রাখা হয়েছে।
অভিযোগ তদন্তকারি অফিসার এএসআই জয়নাল আবেদিন বলেন, সেখানে একটি ছাপরা ঘরছিল। ঘরের টিনসহ অন্যমালামাল ফেরত দিতে বলা হয়েছে। বিষয়টি সমাঝোতার জন্য আগামী ১৪ অক্টোবর ভোটের পর বাদি-বিবাদি উভয়কে থানায় ডেকে নিবেন। সমাঝোতা না হলে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন।