রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:২৫ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, একুশের কণ্ঠ:: সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আজ রোববার সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হবে বরেণ্য লোক ও লালনসংগীত শিল্পী ফরিদা পারভীনের মরদেহ।
এবিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন তার ছেলে ইমাম নাহিল।
তিনি জানান, শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মরদেহ বেলা ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে নেওয়া হবে। সেখানে বাদ জোহর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর মরদেহ কুষ্টিয়ার উদ্দেশে নেওয়া হবে এবং পরিবারের ইচ্ছা অনুযায়ী সেখানেই দাফন সম্পন্ন হবে।
ফরিদা পারভীন গতকাল শনিবার রাত ১০টা ১৫ মিনিটে রাজধানীর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি স্বামী ও চার সন্তান রেখে গেছেন।
দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। নিয়মিত ডায়ালাইসিসের অংশ হিসেবে গত ২ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে ভর্তি হন। ডায়ালাইসিসের পর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। বুধবার আরও অবনতি ঘটলে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ চেষ্টা সত্ত্বেও শনিবার রাতে তিনি না-ফেরার দেশে পাড়ি জমান।
‘লালনকন্যা’ খ্যাত ফরিদা পারভীন পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে লালন সাঁইয়ের গান মানুষের হৃদয়ে পৌঁছে দিয়েছেন। ১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর নাটোরের সিংড়া থানায় জন্ম নেওয়া এই শিল্পী ১৪ বছর বয়সে ১৯৬৮ সালে পেশাদার সংগীতজীবন শুরু করেন। প্রথমে নজরুলসংগীত ও দেশাত্মবোধক গান গেয়ে পরিচিতি পেলেও ১৯৭৩ সাল থেকে নিজেকে লালনসংগীতে নিবেদিত করেন।
লালনসংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৮৭ সালে তিনি একুশে পদক লাভ করেন। পরে ২০০৮ সালে জাপানের মর্যাদাপূর্ণ ফুকুওয়াকা পুরস্কারও অর্জন করেন। তার কণ্ঠে ‘এই পদ্মা এই মেঘনা’সহ বহু আধুনিক ও দেশাত্মবোধক গান জনপ্রিয়তা পায়।
ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সংগীতসুধাপ্রেমীরা বলছেন, লালনের গানের যে সম্রাজ্ঞী তিনি ছিলেন, তার মৃত্যুতে একটি যুগের অবসান হলো।