মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:৩০ পূর্বাহ্ন
আব্দুল হানিফ মিঞা, বাঘা (রাজশাহী) থেকে॥ গত ২০১২ সালে ভাঙনের কবলে পড়ে কালিদাশখালি মৌজায় সরিয়ে নেওয়া হয় বিদ্যালয়টি। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর আটাত্তর লক্ষ টাকা ব্যয়ে বিদ্যালয়ের পাঁকা ভবন নির্মাণ করেন। বিদ্যালয়ের সেই পাঁকা ভবনটি যাচ্ছে পদ্মায়। ইতোমধ্যে ভবনের মধ্যে ঢুকে পড়েছে পদ্মা। যেকোন সময়ে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাবে। অবস্থার প্রেক্ষিতে অনিদিষ্টকালের জন্য ছুটি ঘোষনা করেছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর ফলে পড়ালেখা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বিদ্যালয়ের ৬’শ শিক্ষার্থী। একই সাথে ভাঙনের কবলে পড়ে বিলিন হতে চলেছে বিদ্যালয় সংলগ্ন বাজার।
গত ১৪ বছরে ২বার ভাঙনের কবলে পড়েছে চরাঞ্চলের চকরাজাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও চকরাজাপুর বাজার। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তার জানান, ১৯৯৮ সালেও ভাঙনের কবলে পড়ে বিদ্যালয় ও বাজার। ২০১২ সালের পর, এবারও ভাঙনের কবলে পড়ে পদ্মায় বিলিন হচ্ছে বিদ্যালয় ও বাজারটি। শুধু ওই বিদ্যালয় ও বাজারই নয়, পদ্মার পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে, ভাঙনের কবলে পড়েছে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নের-গোকুলপুর, জোতকাদিরপুর, কিশোরপুর, আলাইপুর, মালিয়ানদহ, চকরাজাপুর ইউনিয়নের- দিয়ারকাদিরপুর, টিকটিকিপাড়া, চকরাজাপুর, কালিদাসখালি ও লক্ষীনগর এলাকা।
স্থানীয়রা জানান, গত তিন সপ্তাহে ২০ কিলোমিটার ভাঙনে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে, ১০টি গ্রামের প্রায় দেড় হাজার বিঘা জমিসহ গাছপালা, পিয়ারা বাগান, পাট, আখসহ নানা প্রকার সবজি ক্ষেত। এবার ভাঙনের কবলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন-পদ্মার তীরবর্তী গোকুলপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম, আজিবার মালিথা, আস্তুল মালিথা, আব্দুল মতিন মালিথা, জোত কাদিরপুর গ্রামের মুনছুর মালিথা, কুদরত আলী, শমসের আলী, পাকুড়িয়ার হাফিজুর রহমান, নয়ন পীর, আসাদুজ্জামান, শরিফুল, আলাইপুরের-চাহার মন্ডল, নাজিম সরকার, নজু প্রামানিক, আজাহার, টুলু মন্ডল, তেথুল মন্ডল সোবহান মল্লিক, চকরাজাপুর ইউনিয়নের-জামাল উদ্দিন, শামসুদ্দিন রেন্টু, আজাদ শেখ, গোলাম মোস্তফা, মনছুর শেখ ও বাবলু দেওয়ানসহ অর্ধসহস্রাধিক কুষক।
ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল আযম ও ফকরুল হাসান বাবলু জানান, গত তিন দশকে ভাঙ্গনের কবলে পড়ে নদীতে বিলীন হয়ে যায় হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমি, বসতভিটা, রাস্তা-ঘাট ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ওই সময় থেকে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে নদী ভাঙ্গনে সর্বস্ব হারিয়ে সর্বহারা হয়েছে প্রায় সহস্রাধিক পরিবার। এই সব পরিবারের সব কিছু কেড়ে নিয়েছে পদ্মা। এদের অনেকেই বিভিন্ন স্থানে গিয়ে বসতবাড়ী গড়ে তুলে বসবাস করছেন।
উপজেলা নির্বাহি অফিসার শাহিন রেজা বলেন, সোমবার (৬-৮-১৮) বিদ্যালয় ও বাজারসহ ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোসাঃ নাসিমা খাতুন। পরিদর্শনকালে তিনি বিদ্যালয়ের জানালা-দরজা খুলে নিতে বলেছেন।