রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ০৪:৪৬ পূর্বাহ্ন

জামায়াতে ইসলামীর প্রথম ঐতিহাসিক সমাবেশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

জামায়াতে ইসলামীর প্রথম ঐতিহাসিক সমাবেশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

নিজস্ব প্রতিবেদক, একুশের কণ্ঠ:: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঐতিহাসিক জাতীয় সমাবেশ’ বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করতে যাচ্ছে। দলের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে রাজনৈতিক সমাবেশ। দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ১৯ জুলাই, শনিবার, দুপুর ২টা।

দল ঘোষিত সাত দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আয়োজিত এই সমাবেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থান দেশের ইতিহাসে গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হয়ে থাকবে। ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগ বৃথা যেতে পারে না। এই সমাবেশ গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

জামায়াত নেতারা জানিয়েছেন, সমাবেশ সফল করতে ইতোমধ্যে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে সাংগঠনিক তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ সরাসরি এসব কার্যক্রম তদারকি করছেন। সমাবেশের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় এক হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত থাকবেন।

সমাবেশস্থলে থাকবে মঞ্চ, এলইডি স্ক্রিন, পানীয় জলের ব্যবস্থা, চিকিৎসাসেবা, অস্থায়ী শৌচাগার, ওজু ও নামাজের স্থানসহ সব প্রয়োজনীয় সুবিধা। ঢাকার বিভিন্ন মোড়ে চলছে পোস্টারিং ও মাইকিং এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রচার জোরদার করা হয়েছে।

জামায়াত এই সমাবেশকে “ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক শক্তির মিলনমেলা” হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এজন্য বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী দল ও সংগঠনকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে জানিয়েছেন দলটির মিডিয়া প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। তার ভাষায়, আমরা চাই এই সমাবেশ একটি ঐক্যের বার্তা দিক।

দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার সমাবেশস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা নির্বাচনের সময় পেছানোর পক্ষে নই। চাই অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ অনুপস্থিত, যা গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য একটি বড় বাধা।

জামায়াত নেতারা মনে করছেন, এই সমাবেশের মধ্য দিয়ে দলটি রাজনৈতিক অঙ্গনে তাদের পুনঃউপস্থিতি ও শক্তিমত্তা প্রদর্শনের সুযোগ পাবে। অতীতের কিছু রাজনৈতিক কৌশলগত ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার তারা আরও ব্যাপক ও সুসংগঠিত প্রস্তুতি নিচ্ছে।

উল্লেখযোগ্য যে, ১৯৪১ সালে পাকিস্তানের লাহোরে প্রতিষ্ঠিত জামায়াতে ইসলামী পরবর্তীতে ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে একযোগে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করে। স্বাধীন বাংলাদেশে দলটি বহুবার রাজনৈতিক উত্তাপে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। তবে এই প্রথমবার তারা রাজধানীর কেন্দ্রস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বৃহৎ রাজনৈতিক সমাবেশ আয়োজন করতে যাচ্ছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই সমাবেশ শুধু জামায়াতের জন্যই নয়, বরং সমগ্র দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের জন্য একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হতে পারে। নির্বাচনের আগে এমন একটি পদক্ষেপ দেশের রাজনীতিতে নতুন মোড় সৃষ্টি করতে পারে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com