শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:০০ অপরাহ্ন

জাপান প্রথমবারের মতো নারী প্রধানমন্ত্রী পেতে যাচ্ছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক. একুশের কণ্ঠ:: জাপানের ক্ষমতাসীন দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) নতুন নেতা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন রক্ষণশীল জাতীয়তাবাদী সানায়ে তাকাইচি। নারী নেতৃত্ব যেখানে এখনো জাপানে বিরল, সেখানে এটি একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। এছাড়া এর মধ্য দিয়ে দেশটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো নারী প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হলো।

শনিবার (৪ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আজ শনিবার জাপানের শাসক দল এক বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বার তাদের নতুন নেতা নির্বাচনের জন্য ভোট দিয়েছে। এলডিপি প্রধান পদে প্রথম দফার ভোটে পাঁচ প্রার্থীর কেউই সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সিদ্ধান্ত গড়ায় রান-অফ ভোটে। দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে ৬৪ বছর বয়সী তাকাইচি পরাজিত করেন মধ্যপন্থি শিনজিরো কোইজুমিকে, যিনি আধুনিক জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে (৪৪) দলীয় প্রধান হওয়ার জন্য দৌড়ে ছিলেন।

তাকাইচি জাপানের সাবেক অর্থনৈতিক নিরাপত্তামন্ত্রী ছিলেন এবং এলডিপির ডানঘেঁষা রাজনৈতিক ধারা অনুসারী হিসেবে পরিচিত। আগামী ১৫ অক্টোবর পার্লামেন্টে আনুষ্ঠানিকভাবে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এলডিপি এখনও পার্লামেন্টের সবচেয়ে বড় দল হিসেবে অবস্থান বজায় রাখায় তাকাইচিই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে সাম্প্রতিক নির্বাচনে এলডিপি নেতৃত্বাধীন জোট দুই কক্ষেই পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে। ফলে সরকার পরিচালনায় বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যদের সহযোগিতা প্রয়োজন হবে।

এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জাপানি রাজনীতিতে এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সূচনা ঘটল, যেখানে দীর্ঘদিনের পুরুষ নেতৃত্বাধীন রাজনীতিতে নতুন এক অধ্যায় শুরু করতে যাচ্ছেন তাকাইচি।

এলডিপি দীর্ঘদিন ধরে জাপানের শাসক দল হলেও দলের ভেতরে সমস্যা দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন ছোট দল, বিশেষ করে যুব ভোটারদের মধ্যে, এলডিপির জনপ্রিয়তা হ্রাস পাচ্ছে। নতুন নেতা এলডিপির একটি সংকটাপন্ন দলকে নেতৃত্ব দিবেন।

তাকাইচি দেশের অর্থনৈতিক নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। নতুন প্রযুক্তি, অবকাঠামো, খাদ্য উৎপাদন এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তার অন্যান্য ক্ষেত্রে বিপুল রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগের মাধ্যমে আগামী এক দশকের মধ্যে অর্থনীতির আকার দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, পার্লামেন্টে এলডিপি-নেতৃত্বাধীন জোটের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায়, যেকোনো আইন পাস করতে গেলেই নতুন প্রধানমন্ত্রীকে বিরোধী দলগুলোর ভোটের ওপর নির্ভর করতে হবে। এর অর্থ হলো, এলডিপিকে তাদের নিজেদের অনেক নীতিগত অবস্থান থেকে সরে এসে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে এক ‘কঠিন রাজনৈতিক সমঝোতা’য় পৌঁছাতে হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com