শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ১১:২১ অপরাহ্ন

চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে দিশেহারা ৭ শতাধিক পরিবার

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:: কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নদী পাড়ের মানুষ। ফলে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিলেও শিশু ও মহিলাদের নিয়ে পড়েছেন বিড়ম্বনায়। ব্রহ্মপুত্র নদদ্বারা বেষ্টিত উপজেলার ৩টি ইউনিয়ন অষ্টমীর চর, চিলমারী ও নয়ারহাটের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

এসব এলাকার মানুষজন গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগী অল্পমূল্যে বিক্রি করতে পারলেও ঘর-বাড়ির আসবাবপত্র সরিয়ে নেওয়ার আগেই বাড়ি-ভিটা নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলের কারণে একদিকে বন্যার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, অন্যদিকে দেখা দিয়েছে তীব্র নদী ভাঙন। সব মিলিয়ে ওই অঞ্চলের কৃষিজীবি ও দিনমজুররা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। অনেকের স্থান হয়েছে সরকারী আবাসন ঘরে। তবে ভিটেমাটি হারানো বেশির ভাগ পরিবার এখনো মাথা গোঁজার স্থায়ী কোনো জায়গা পাননি।

নয়ারহাট ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, গত ২ মাসে তার ইউনিয়নের বজরা দিয়ার খাতা, উত্তর খাউরিয়ার চর, দক্ষিণ খাউরিয়ার চর, বাতাশী কাজল ডাঙ্গাসহ বিভিন্ন এলাকার ৫৩৫টি পরিবারের বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। অষ্টমীর চর ইউনিয়নের সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, তার ইউনিয়নে ৬৫টি পরিবার ও চিলমারী ইউনিয়নের সচিব সুমন বলেন, শাখাহাতী, বৈলমনদিয়ারখাতা, চড়ুয়াপাড়া, তেলিপাড়া ও গাজীরপাড়াসহ ইউনিয়ন জুড়েই ভয়াবহ ভাঙনের রুপ ধারন করেছে। বসতভিটা বিলিনের পর নিঃস্ব হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ওই ইউনিয়নের প্রায় ১১০টি পরিবার। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো বর্তমানে নদের কিনারের পাশেই পাটের শোলা ও টিন দিয়ে ছাপড়া ঘর উঠিয়ে স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

সরকারী আবাসনে আশ্রয় নেয়া সদ্য ভাঙনের শিকার শাখাহাতী চরের নুরুল হক জানান, ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে আমার ভিটে মাটি নদের পেটে চলে গেছে। এখন আপাতত আবাসণের ঘরে স্ত্রী সন্তান নিয়ে আশ্রয় নিয়েছি। কোথাও যাবার জায়গা নেই।

ওই এলাকার মল্লিক খাতুন বলেন, কয়েকদিনের মাথায় আমার বাড়িটি নদীতে ভেঙ্গে গেছে। আমি সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি। বাচ্চাদের নিয়ে খুবই কষ্টে আছি। আমরা রিলিফ চাইনা নদী ভাঙ্গন বন্ধ চাই।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রাফিউল আলম জানান, গতকাল স্থানীয় চেয়ারম্যানদের উপবরাদ্দ দেয়া হয়েছে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তার জন্য। আর যারা গৃহহীন হয়ে পড়েছেন তাদের পূর্নবাসনের জন্য চিন্তাভাবনা রয়েছে।

অপরদিকে চিলমারী ইউনিয়নে নদী ভাঙনের ফলে পল্লী বিদ্যুতের সাবমেরিন ক্যাবলের সঞ্চালন লাইন বন্ধ রয়েছে। লাইনটি চালু রাখতে ৬ থেকে ৭ হাজার জিও ব্যাগ নদীতে ফেলা হবে বলে জানান, কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)’র নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com