সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ১১:৩৬ অপরাহ্ন

কালিগঙ্গা নদীতে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

নবাবগঞ্জের শোল্লায় কালিগঙ্গা নদীতে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক:: হাজার শ্রোতা আর উৎসুক জনতার ভীড়ে কালিগঙ্গা যেন রঙ্গীন হয়ে উঠেছে। বর্ষায় নদীতে টুইটুম্বর পানি না থাকলেও নৌকাবাইচ যেন থেমে নেই। বাংলা সনের ভাদ্র মাস শুরু হলেই খাল বিল নদী-নালা ও হাওরে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতায় মেতে উঠে।

সেই পুরনো দিনের ঐতিহ্য রক্ষায় ঢাকার নবাবগঞ্জের শোল্লায় কালিগঙ্গা নদীতে সোমবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে এক বর্ণাঢ্য নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। সিংজোর এলাকাবাসী এ বাইচের আয়োজন করে।

আজ দুপুর ৩টা হতেই পরিবার পরিজন নিয়ে কালিগঙ্গা নদীর খতিয়া হতে সিংজোর পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার জুড়ে বাইচ প্রেমীদের ভীড় জমে উঠে। শোল্লা খতিয়া ব্রিজের কোথাও তিল ধরার ঠায় নেই। ব্রিজের দু’পাশে দাঁড়িয়ে হাজারো নারী পুরুষসহ নানা বয়সী মানুষ বাইচ দেখতে দাঁড়িয়ে আছে। বাইচ উৎসবে মেতে উঠেছে নবাবগঞ্জের উত্তরাঞ্চল শোল্লা কৈলাইল ও মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার কয়েকটি গ্রামের মানুষ। কেউ এসেছে হেটে। আবার কেউবা নৌকা বা সীবোট নিয়ে ঘুরছে। নানা হই হুল্লোর আর নাচ গানে কালিগঙ্গা নদী যেন তার যৌবনে ফিরেছে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি থেকে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক।

বাইচ দেখতে আসা আলী নুর বলেন, এখন তো আগের দিনের মতো নেই। নদী খালে বিলে বাইচ মিলে না। মানুষ এখনো এটাকে গ্রাম্য বিনোদন মনে করে। তাই পরিবার নিয়ে দেখতে এসেছি।

এদিকে নৌকাবাইচকে ঘিরে নদীর দুই পারে বসেছে মেলা। বসেছে নাগর দোলাসহ বিভিন্ন খেলার প্রদর্শণী। এখানে তরুণ তরুনী ও শিশু কিশোররা কেনাকাটা করছে। কাকলী মন্ডল এসেছেন সিরাদিখান থেকে। বাইচ দেখা শেষে ছেলেকে নিয়ে খেলনার দোকানে কেনাকাটা করছে। তিনি বলেন, দাদা বর্ষায় এখন আনন্দ নেই। আগে গাঙ্গ জুড়ে পালের নৌকা যেতো। রঙ-বেরঙের সাজে বাইচের নৌকা যেতো। এখন বাইচের কথা শুনলে দেখতে মন চায় তাই এতো দূর থেকে এসেছি।

নৌকাবাইচ আয়োজক কমিটির পক্ষে আওলাদ হোসেন (তারেক) বলেন, সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা রেখে মানুষকে বিনোদন দেয়ার চেষ্টা করেছি। পুরস্কার হিসেবে বিজযীরা পাবেন মোটরসাইকেল, ফ্রিজ ও ১৪টি টেলিভিশিন।অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি থেকে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক। এসময় তিনি বলেন, গ্রামবাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য এ নৌকাবাইচকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এটা বাংলা সংস্কৃতির অংশ। মানুষ যেন এটাকে বিনোদন মনে করে চলতে পারে সকলের মাঝে এ চেতনাকে জাগ্রত করতে হবে। তাহলেই কোনো অপশক্তি এদেশের সংস্কৃতিকে বিকৃত করতে পারবে না।

এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুস সালাম, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবুল কালাম, জেষ্ঠ্য সহসভাপতি ওয়াহিদ মিয়া, সাবেক চেয়ারম্যান এরশাদ আল মামুন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন, রাসেল আহমেদ, গাজী শাহ আলম প্রমুখ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com