শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:১০ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ প্রায় এক যুগ পরে বাহ্রা-কোমরগঞ্জ নৌকাবাইচে আনন্দে কাটালো স্থানীয় বাসিন্দারা। নবাবগঞ্জের বুক চিরে বইয়ে চলা ইছামতি নদীর দুই পারে হাজারো দর্শক। ইঞ্জিনচালিত ও পানসি নৌকা নিয়ে নদীতে মানুষের উপস্থিতি দর্শকের টান-টান উত্তেজনা মধ্যেই বাইচের নৌকার মাল্লারা হাক দিলেন, বৈঠা আর পানির শব্দে চপ চপ হেঁইয়ো রে হেঁইয়ো। দর্শকদের উল্লাস আর করতালি বাড়তি উৎসাহ দিলো মাল্লাদের।
শুক্রবার বিকেল ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার কোমরগঞ্জ-বাহ্রা এলাকাবাসীর যৌথ উদ্যোগে ইছামতী নদীতে আয়োজন করা হয় বাংলার ঐতিহ্য নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা। বিকেল থেকে কোমরগঞ্জ-বাহ্রা ইছামতি নদীর দু’পাড়ে হাজারো দর্শক উপভোগ করেন দীর্ঘ এক যুগ পর আয়োজন করা এ নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা। বাইচ দেখতে আশেপাশের এলাকা থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকা, সীবোড অসংখ্য মানুষ নদী জুড়েই মহড়ায় ব্যস্ত থাকে।
অনেকে নৌকাবাইচের পাশাপাশি নৌ-ভ্রমনের আনন্দ উপভোগ করেন। বাইচে আসা দর্শনার্থীরা ঢোল-তবলা নিয়ে নেচে-গেয়ে মাতিয়ে তুলেন পুরো অনুষ্ঠান ।দর্শকদের আনন্দ দিতে বাইচের নৌকা বর্ণিল সাজে সাজানো হয়। এসব নৌকায় এ অঞ্চলের সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়। বাইচের সময় মাঝি-মাল্লারা সরব কন্ঠে গেয়ে ওঠেন জারি ও ভাটিয়ালি গান।
আয়োজকদের পক্ষে জুম্মন আলী জানায়, নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে ঢাকা, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও সিরাজগঞ্জ থেকে করম আলী এক্সপ্রেস, লিটন-২, বলধারার ঐতিহ্য, লিটন-৩, তুফান, আব্দুল খালেক, খাঁনবাড়ী, মামা-ভাগ্নিনা, সোনারতরী, তুফান-২, সিকদার বাড়ীসহ বিভিন্ন নামের ১৫টি বড় নৌকা অংশ নেয়। সবাইকে পেছনে ফেলে প্রথমস্থান অধিকার করেন লিটন-২। তাঁদের পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয় একটি ১২৫সিসি হিরো গ্লামার মোটরসাইকেল। অন্য অংশগ্রহনকারীদের জন্য ছিল ফ্রিজ ও এলইডি টেলিভিশন।
নৌকাবাইচ ঐতিহ্যরক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লা বলেন, নৌকাবাইচ আমাদের বাঙ্গালির ঐতিহ্য। এটা যাতে হারিয়ে না যায়, আমরা কমিটির পক্ষ থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছি।
আয়োজক কমিটির সভাপতি আব্দুস সালাম বলেন, নতুন প্রজম্মের কাছে নৌকাবাইচ পরিচিতি করার জন্যই আমাদের এ উদ্যোগ। পাশাপাশি মানুষের বিনোদনও একটা বিষয়।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক। উপস্থিত ছিলেনÑ নবাবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কালাম খন্দকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এরশাদ আল মামুন, এ্যাড খলিল, আমজাদ হোসেন প্রমুখ।