বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫, ০২:৫৮ পূর্বাহ্ন

উলিপুরে ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে শিক্ষক বরখাস্ত

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:: কুড়িগ্রামের উলিপুর আদর্শ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে সহকারী শিক্ষক (গ্রাস্থাগারিক) মৃনাল কান্তি ক্ষত্রিয়কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

বুধবার (২ নভেম্বর) উলিপুর আদর্শ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌস কবীর স্বাক্ষরিত একটি পত্রে যার স্মারক নং- ১৬/২২ অত্র বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক(গ্রাস্থাগারিক) মৃনাল কান্তি ক্ষত্রিয়’র বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ ও তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উলিপুর পৌর এলাকার পূর্বশিববাড়ি খালি ভিটা গ্রামের জনৈক দরিদ্র এক হিন্দু পরিবারের শিশু কন্যা উলিপুর আদর্শ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির নিয়মিত শিক্ষার্থী। ঘটনার দিন গত ২৭ সেপ্টেম্বর ওই বিদ্যালয়ের গ্রাস্থাগারিক পদে কর্মরত মৃণাল কান্তি রায় দুপুর আড়াইটার দিকে ওই বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া মাত্র দু’জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে হিন্দু ধর্ম ক্লাস করাচ্ছিলেন। এ সময় বিশেষ কারণে একজন শিক্ষার্থী হঠাৎ করে অন্য একটি রুমে গেলে শিক্ষক মৃণাল কান্তি সুযোগ বুঝে সেখানে থাকা জনৈক শিক্ষার্থীর উপর জোরপূর্বক শ্লীলতাহানীর অনৈতিক তৎপরতায় লিপ্ত হন। এসময় ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে শিক্ষার্থী ব্রেঞ্চে পড়ে যায়। এরপর কোমলমতি ওই শিক্ষার্থী বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকাকে অবহিত করেন। শিক্ষার্থীর ভাষ্যমতে এসময় ওই শিক্ষিকা তাকে বিষয়টি অন্য কাউকে জানাতে নিষেধ করেন এবং ঘটনাটি তাৎক্ষণিক প্রধান শিক্ষককে অবহিত করেন। ঘটনার পর থেকে শিশু শিক্ষার্থীকে বেশ কয়েক দিন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত দেখে প্রধান শিক্ষক ২ জন নারী ও ১ জন পুরুষ সহকারী শিক্ষককে ওই শিক্ষার্থীর বাড়িতে পাঠান কোমলমতি ওই শিশু শিক্ষার্থী উপস্থিত শিক্ষকদের মাঝে ধর্ম ক্লাসের সময় তার উপর চালানো মৃণাল কান্তি রায়ের অনৈতিক কর্মকান্ডের কথা বর্ণনা করে আগামীতে ওই বিদ্যালয়ে পড়বে না বলে সাফ জানিয়ে দেন। তখনই ঘটনাটি ওই শিক্ষার্থীর দাদু এবং কাকা জানতে পারে। শিক্ষার্থীর মা ও বাবা দরিদ্র হওয়ায় ঢাকায় বেক্সিমকো কোাম্পানির একটি প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন। বিষয়টি জানার পর শিক্ষার্থীর কাকা অমৃত রায় নিজে বিদ্যালয়ে এসে গত ২০ অক্টোবর ঘটনার প্রতিকার চেয়ে প্রধান শিক্ষক বরাবর আবেদন করেন। পরবর্তীতে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও প্রধান শিক্ষক স্পর্শ কাতর বিষয়ে কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় শিক্ষার্থীর পরিবার বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এরপরই তার পরিবারের লোকজন স্থানীয় কাউন্সিলের শরণাপন্ন হন এবং তার সহযোগিতায় বিদ্যালয় থেকে ওই শিক্ষার্থীর ছাড়পত্র নেন বলে জানান শিক্ষার্থীর কাকা অমৃত রায়। এদিকে মেয়েদের স্কুলে এমন চরিত্রহীন গ্রাস্থাগারিক নিয়োগ দেয়ায় শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে উলিপুর আদর্শ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌস কবীর জানান, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে ম্যানেজিং কমিটির সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক সহকারী শিক্ষক(গ্রাস্থাগারিক) মৃনাল কান্তি ক্ষত্রিয়কে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

উলিপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহ্ মোঃ তারিকুল ইসলাম জানান, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সহকারী শিক্ষক(গ্রাস্থাগারিক) মৃনাল কান্তি ক্ষত্রিয়কে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com