বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫, ০৬:১১ পূর্বাহ্ন
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:: কুড়িগ্রামে দীর্ঘ ১১ বছর পর ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। অগামী ২৩ অক্টোবর তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। সম্মেলনের দিন যতই এগিয়ে আসছে দলের অভ্যন্তরে পরিবেশ তত উত্তপ্ত হচ্ছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক এম এ মতিনের নেতৃত্বে একাংশ এবং দলের সাধারন সম্পাদক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মন্টুর নেতৃত্বে অপর অংশ কার্যত এখন মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। উপজেলা থেকে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি পর্যন্ত উপদলীয় কোন্দল বিস্তৃত হয়েছে। এতে করে ত্যাগী ও পরীক্ষিতদের নেতৃত্বে আসা নিয়ে কর্মীদের মধ্যে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।
গত ৮ অক্টোবর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের ওপর হামলা এবং দলীয় নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে বলে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছে।উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তার ওপর সন্ত্রাসী হামলার জন্য সরাসরি দলের সংসদ সদস্য অধ্যাপক এম এ মতিনকে দায়ী করেছেন। তিনি জানান তার ওপর হামলার একদিন আগে স্থানীয় সংসদ সদ্যসের বাসায় বৈঠক হয়েছে। এরপরই আমার ওপর হামলা হয়।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের এ অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক এম এ মতিন বলেন, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট ও কাল্পনিক অভিযোগ। বরং দীর্ঘদিন ধরে চলা দলের ভিতর তার স্বেচ্ছাচারিতা নানা অপকর্মসহ দূর্নীতি আড়াল করতে তিনি নাটক সাজিয়েছেন।
এদিকে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের মধ্যে শেষ পর্যন্ত নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে উপর মহলের চাপিয়ে দেয়া কমিটি দায়িত্ব পাবে নাকি দলের কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে পরীক্ষিত ত্যাগী নেতাদের নির্বাচন করা হবে এনিয়ে কর্মীদের মধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা ও ইউনিয়ন কমিটির একাধিক কাউন্সিলর বলেন দলের দুঃসময়ের ত্যাগী নেতাদের নেতৃত্বে বসানোর ক্ষেত্রে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটের বিকল্প নেই। চাপিয়ে দেওয়া কমিটি দলের বিপর্যয় ডেকে আনবে। এদিকে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে গত ১৪ অক্টোবর পুলিশ পাহাড়ায় দলের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দলের দপ্তর সম্পাদক নিমাই সিংহ বলেন, ইতি পূর্বে চারটি ইউনিয়ন সম্পর্কে আপত্তি উঠলে তা জেলা কমিটি কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে নিস্পত্তি করা হয়েছে। এবার ১৩টি ইউনিয়ন একটি পৌরসভা ও উপজেরা কমিটি মিলে মোট ৫০৩ জন কাউন্সিলরের তালিকা চুড়ান্ত করা হয়েছে।
এবার সভাপতি হিসাবে সম্ভাব্য প্রার্থীরা হচ্ছেন, সংসদ সদস্য অধ্যাপক এম এ মতিন, অধ্যক্ষ আহসান হাবীব রানা, সাবক সভাপতি আব্দুল মজিদ হাড়ি, সৌমেন্দ্র প্রসাদ পান্ডে গবা, সাবেক সভাপতি মতি শিউলি এবং উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও দলের পৌর কমিটির সম্পাদক আবু সাইদ সরকার।
অন্যদিকে সাধারন সম্পাদক পদে সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন, বর্তমান সাধারন সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মন্টু,পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম,মন্জুরুল আলম বাবু সরদার,সাজাদুর রহমান সাজু তালুকদার, পৌর মেয়র মামুন সরকার মিঠু, রিয়াজুল ইসলাম সুজা ও স ম আল মামুন সবুজ। দলের সাধারন সম্পাদক গোলাম হোসেন মন্টু বলেন, ইতিমধ্যে সম্মেলন সফল করার জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। কোন ষড়যন্ত্রই সম্মেলন বানচাল করতে পারবে না।