মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫, ০১:১০ অপরাহ্ন
বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি::
রাজশাহীর বাঘায় বইছে আসন্ন পৌর নির্বাচনী হাওয়া। তফসিল ঘোষনার পর দলীয় মনোনয়ন পেতে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা এখন যোগাযোগ করছেন জেলা ও কেন্দ্রের নেতাদের সাথে। দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হওয়ায় সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীদের কেউ কেউ দলীয় ফরম উত্তোলন করে কেন্দ্রে জমা দিয়েছেন। এখন তাদের অপেক্ষা কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের দিকে। আর মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করতে আগ্রহীরা। তবে নীরব রয়েছেন ভোটাররা।
স্থানীয় সরকার নির্বাচনে, বিশেষ করে মেয়র পদে ব্যক্তিত্ব সম্পূর্ন শিক্ষিত যোগ্য একজন প্রার্থী আশা করছেন ভোটাররা। তাদের মতে পৌরসভায় আধিপত্য বিস্তার না করে জনসেবায় নিজেকে বিলিয়ে দেন, এমন প্রার্থী চান তারা। অপরদিকে শঙ্কা প্রকাশ করে দলীয় মনোননয়ন প্রত্যাশী ও সমর্থকরা জানান, প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করা না হলে, দলে অন্তঃকোন্দলের মতো ঘটনা ঘটতে পারে। মেয়র প্রার্থীর মতো প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে দলীয় সমর্থনের প্রত্যাশায় রয়েছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরাও।
জানা গেছে, মেয়র প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ কৌশলগত অবস্থান নিয়ে পৌর আওয়ামীলীগের বর্ধিত সভায় প্রার্থীদের তালিকায় ৮ জনের নাম পাঠিয়েছে জেলায়। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের দোহাই দিয়ে কোন মন্তব্য করতে চাচ্ছেন না দলের স্থানীয় নেতারা। তবে দলীয় সুত্রে জানা গেছে, গত ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন চেয়ে ৬ জন প্রার্থী দলীয় ফরম উত্তোলন করে কেন্দ্রে জমা দিয়েছেন। এরা হলেন- বর্তমান মেয়র মুক্তার আলী, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি সাহীদুজ্জামান সাহীদ, সাধারন সম্পাদক মতিউর রহমান, যুগ্ন সাধারন সম্পাদক মাসুদ পারভেজ কলিন্স, জেলা যুব মহিলালীগের সহসভাপতি মীর হানুফা নছিম ও পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি রিবন আহম্মেদ বাপ্পি। এর আগে নির্বাচন অফিস থেকে মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেছেন রিবন আহম্মেদ বাপ্পি। এক্ষেত্রে আওয়ামীলীগ শিবিরেও নীরবে চলছে নির্বাচনী বৈতরণী।
আড়ানি পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি সাহীদুজ্জামান সাহীদ জানান, দলীয় মনোনয়ন ফরম উত্তোলন করে জমা দেওয়ার সময়সীমা রয়েছে ৮ ডিসেম্বর থেকে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
এদিকে পৌর নির্বাচন ঘিরে চাঙ্গা হচ্ছে বিএনপির রাজনীতি। জাতীয় ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে ২জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেছেন। এরা হলেন- সাবেক মেয়র ও আড়ানী পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি শিক্ষক নজরুল ইসলাম ও পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক সুজাত আহম্মেদ তুফান। গত নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী তোজাম্মেল হক প্রার্থী হবেন বলে নাম শোনা যাচ্ছে। গণসংযোগ কিংবা প্রচারণা যতই করুক না কেন দলীয় প্রার্থীর টিকেট লাগবে জেলা বিএনপির নেতাদের সিদ্ধান্তে। তা মাথায় রেখে সম্ভাব্য অনেক নেতা সভাপতির আর্শীবাদ পেতে দৌঁড়ঝাপ বাড়িয়েছেন। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সংসদ সদস্য প্রার্থী আবু সাঈদ চাদের আর্শিবাদপুষ্ট নেতাই মেয়র প্রার্থীর টিকেট পাবেন বলে এমন কথা শোনা গেলেও তা নাকচ করে উপজেলা ও পৌর বিএনপির অনেক নেতা জানান, বিএনপি তৃণমূলের দল। বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। তাই তৃণমূলের সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দিয়ে প্রার্থী মনোনয়ন দেবে বলে মনে করছেন তারা।
তবে এখন পর্যন্ত বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের প্রতিটি ইউনিটের প্রতিনিধিদের ভোটাভুটির মাধ্যমে পৌর নির্বাচনে প্রার্থীতা বাছাই করা হয়নি বলে জানান উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সহকারি অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন। উপজেলা বিএনপির আহহ্বায়ক ফকরুল হাসান বাবলু জানান, স্থানীয়ভাবে প্রার্থী বাছাই করা না হলেও সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে জেলার আহ্বায়ক, সদস্য সচিব, পৌরসভার আহ্বায়ক, সদস্য সচিব ও যুগ্ন সদস্য সচিবের সমন্বয়ে মিটিং করা হবে। তাদের মতামতের ভিত্তিতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্য থেকে ১ জনের নাম কেন্দ্রে পাঠানো হবে। সেই সিদ্ধান্ত মেনে, দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সবাই ভোটের মাঠে কাজ করবে।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল জানান, পৌর নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে জেলায় যে ৮ জনের নাম পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে যারা দলীয় মনোনয়ন চেয়ে ফরম উত্তোলন করে কেন্দ্রে জমা দিবেন, তাদের মধ্যে একজন দলীয় মনোনয়ন পাবেন। তবে কেন্দ্র থেকে এখনো দলীয় প্রার্থীর নাম আসেনি। তাই কারো বিষয়ে মন্তব্য করার কিছু নাই।
উপজেলা নির্বাচন অফিসার মুজিবুল আলম জানান, মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ তারিখ ২০ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র যাছাই-বাছাই ২২ ডিসেম্বর, প্রার্থীতা প্রত্যাহার ২৯ ডিসেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ৩০ ডিসেম্বর। ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৬ জানয়ারী। পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ১৩ হাজার ৮৮৪। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ হাজার ৮৭৮ ও নারী ভোটার ৭ হাজার ১০৬জন।