বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৫৫ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক ॥
ঢাকা: জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থান চলাকালে আশুলিয়ায় ছয়জনের মরদেহ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার তৃতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ (১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫) অনুষ্ঠিত হবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলামসহ মোট ১৬ আসামির বিরুদ্ধে এই সাক্ষ্যগ্রহণ পরিচালনা করবে।
এর আগে গত বুধবার ট্রাইব্যুনালে মামলার দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ওই দিন শহীদ সজল-এর বাবা মো. খলিলুর রহমানকে অবশিষ্ট জেরা করেন স্টেট ডিফেন্স ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। এরপর আরও দুজন নতুন সাক্ষী তাদের জবানবন্দি দেন। প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর সাইমুম রেজা তালুকদার।
গত সোমবার প্রথম দিনের শুনানিতে শহীদ আস সাবুর-এর ভাই রেজওয়ানুল ইসলাম এবং শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজল-এর বাবা মো. খলিলুর রহমান সাক্ষ্য দেন। তবে সেদিন খলিলুর রহমানের জেরা সম্পন্ন হয়নি, যা পরবর্তীতে বুধবার শেষ করা হয়।
গত ২১ আগস্ট ট্রাইব্যুনাল এই ১৬ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। একই সঙ্গে সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আজকের দিনটি ধার্য করা হয়। ওই শুনানিতে আসামিদের অব্যাহতি চেয়ে করা আইনজীবীদের আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয় এবং উপস্থিত আট আসামিকে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পড়ে শোনানো হয়।
এসময় উপস্থিত আসামিদের মধ্যে সাতজন নিজেদের নির্দোষ দাবি করলেও, এসআই শেখ আবজালুল হক দোষ স্বীকার করেন এবং রাজসাক্ষী হতে চেয়ে আদালতে যা জানেন, সব জানানোর আগ্রহ প্রকাশ করেন। তার দোষ স্বীকারের অংশটুকু রেকর্ড করে আদালত এবং তাকে লিখিত আবেদন জমা দিতে বলা হয়। লিখিত আবেদন জমা দেওয়ার পর তিনি অ্যাপ্রুভার (রাজসাক্ষী) হন।
আদালতে পলাতক থাকা সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ আরও আট আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আট আসামি হলেন—ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, ঢাকা জেলা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলাম, পরিদর্শক আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক, এসআই আরাফাত উদ্দিন, এএসআই কামরুল হাসান, আবজাল এবং কনস্টেবল মুকুল।
উল্লেখ্য, গত বছর ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে ছয়জন তরুণ প্রাণ হারান। পরে তাদের মরদেহ একটি পুলিশ ভ্যানে তুলে আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়। এই নৃশংস ঘটনায় একজন জীবিত থাকলেও তাকেও পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে মারা হয়। এই বর্বরোচিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলাটি দায়ের করা হয়।