বৃহস্পতিবার, ০২ অক্টোবর ২০২৫, ০২:৫৯ অপরাহ্ন

আজ বিজয়া দশমী, প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজার সমাপ্তি

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা (ফাইল ছবি)

নিজস্ব প্রতিবেদক:: সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার বিজয়া দশমী আজ। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপী এই শারদ উৎসব।

বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকালে সারাদেশের মণ্ডপগুলোতে অনুষ্ঠিত হবে বিহিত পূজা। এরপর হবে দর্পণ ও বিসর্জন।

বিজয়া দশমীতে সারাদেশে স্থানীয় আয়োজন ও সুবিধামতো সময়ে শোভাযাত্রার মাধ্যমে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে।

হিন্দুশাস্ত্র মতে, এদিন দেবী দুর্গা মর্ত্যে ছেড়ে কৈলাসে ফিরে যাবেন দোলায় চড়ে।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, মানুষের মনের অসুরিক প্রবৃত্তি, কাম, ক্রোধ, হিংসা, লালসা বিসর্জন দেওয়াই বিজয়া দশমীর মূল তাৎপর্য। এসব প্রবৃত্তি বিসর্জন দিয়ে একে অন্যের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই এ আয়োজনের উদ্দেশ্য।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্যানুযায়ী, বিসর্জনের উদ্দেশে ঢাকার ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে কেন্দ্রীয় বিজয়া শোভাযাত্রা বের হবে বিকাল ৪টায়। তার আগে ঢাকার পূজামণ্ডপের অধিকাংশ প্রতিমা এসে জমা হবে পলাশী মোড়ে। সেখান থেকে সম্মিলিতভাবে শুরু হবে বিজয়ার শোভাযাত্রা। এরপর সদরঘাটের ওয়াইজঘাটের বুড়িগঙ্গা নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে।

দেবীর বিদায়ের আগে সিঁদুর খেলায় মেতে উঠবেন নারীরা

দেবী দুর্গার বিদায়ের আগে মণ্ডপে মণ্ডপে সিঁদুর খেলায় মেতে উঠবেন নারীরা। দেবীর চরণের সিঁদুর নিয়ে নিজেদের রাঙিয়ে তুলবেন তারা। শাস্ত্রমতে, স্বামীর মঙ্গল কামনায় দশমীর দিন নারীরা দেবী দুর্গার সিঁথিতে দেওয়া সিঁদুর নিজের সিঁথিতে লাগিয়ে আশীর্বাদ নেন। পান ও মিষ্টি নিয়ে দুর্গা মাকে সিঁদুর ছোঁয়ানোর পর একে অপরকে সিঁদুর লাগিয়ে দেন তারা। সিঁদুর খেলা শেষে শেষবারের মতো দেবীর আরাধনা করেন তারা।

সিঁদুর খেলার বিষয়ে সূত্রাপুরের বাসিন্দা মণি সরকার বলেন, ‘এই উৎসব মূলত হিন্দু বিবাহিত নারীদের। স্বামীর দীর্ঘজীবন কামনায় এই সিঁদুর খেলা খেলে থাকেন নারীরা। দেবীর বিদায়ে প্রতিবছর আমাদের সিঁদুর খেলায় যেন অন্যরকম এক ভালোবাসা ফুটে ওঠে। এই দিনের জন্য আমরা অপেক্ষায় থাকি। আগামী দিনগুলোয় যেন রঙিন হয়ে ওঠে আমাদের জীবন সেই প্রত্যাশা করি।’

মহানবমীতে রাজধানীর পূজামণ্ডপগুলোয় বিষাদের সুর

বুধবার মহানবমীতে পুরান ঢাকার পূজা মণ্ডপগুলো ঘুরে দেখা গেছে, জাঁকজমকভাবে মহানবমী উদযাপন করেছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। তবে এদিন থেকেই প্রাণের উৎসবের মধ্যেই ভক্তদের মাঝে ছড়িয়েছে বিসর্জনের বিষাদ। অনেক ভক্তকে এদিন দেবী দুর্গার সামনে কান্না করতে দেখা গেছে।

মহানবমীতে পুরান ঢাকার শাঁখারি বাজার পূজা মণ্ডপে আসা দেবব্রত বিশ্বাস বিসর্জনের কথা মনে করে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে হবে শারদীয় দুর্গাপূজার সমাপনী। দেখতে দেখতেই শেষ হয়ে গেল প্রাণের উৎসবটি। আবার দেবী মায়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে একটি বছর।’

বিসর্জনের কথা বলতে গিয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন শাঁখারি বাজারের বাসিন্দা সুরঞ্জিত দাস। তিনি বলেন, ‘ষষ্ঠী থেকে নবমী পর্যন্ত পরিবারের সবাইকে নিয়ে বেশ আনন্দ করেছি। কিন্তু বিসর্জনের কথা মনে পড়তেই মনটা খারাপ হয়ে গেল। দেবী দুর্গা আমাদের ছেড়ে কৈলাসে ফিরে যাবেন।’

উল্লেখ্য, এবছর সারাদেশে ৩৩,৩৫৫টি পূজামণ্ডপ হয়েছে। এর মধ্যে রাজধানীতে মণ্ডপ ২৫৯টি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com