বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:১০ অপরাহ্ন

অনির্দিষ্টকালের জন্য শাটডাউন যুক্তরাষ্ট্রে, ট্রাম্প প্রশাসন অচল হতে চলেছে !

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, একুশের কণ্ঠ:: অনির্দিষ্টকালের জন্য অচল হয়ে যেতে চলেছে আমেরিকার সরকার। মার্কিন সিনেট মঙ্গলবার প্রশাসনের তহবিল সংক্রান্ত বিল অনুমোদন করতে পারেনি। রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাটেরা এই বিল নিয়ে একমত হতে পারেননি। ফলে আজ থেকেই সরকারি কাজকর্ম বন্ধ হয়ে গিয়েছে। হোয়াইট হাউস আনুষ্ঠানিকভাবে আসন্ন ‘শাটডাউন’ ঘোষণা করে দিয়েছে। এর ফলে আটকে যাবে লাখ লাখ সরকারি কর্মচারীর বেতনও। বিমানযাত্রা থেকে শুরু করে বিনিয়োগ, গবেষণা বহু ক্ষেত্রে কোপ পড়েছে। শুধুমাত্র আপৎকালীন পরিষেবাগুলি সচল থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এর আগে আমেরিকার সরকারে ‘শাটডাউন’ হয়েছিল ছ’বছর আগে, প্রেসিডেন্ট হিসাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম দফায়।

আমেরিকার অর্থবর্ষের শেষ দিন ছিল আজ। ১ অক্টোবর থেকে আমেরিকায় অর্থবর্ষ শুরু হয়। চলে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। সেই হিসাবে আজই ছিল চলতি অর্থবর্ষের শেষ দিন। কিন্তু নতুন বিলের জন্য একমত হতে পারেননি সেনেটের সদস্যেরা। নতুন বিলের জন্য একমত হতে পারেননি সিনেটের রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাট সদস্যেরা। শেষ মুহূর্তে রিপাবলিকানেরা একটি সাময়িক তহবিল পাশ করানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সিনেট তাতে অনুমোদন দেয়নি। ওই বিল স্বাক্ষরের জন্য প্রেসিডেন্টের টেবিলে পাঠাতে গেলে যে পরিমাণ ভোটের প্রয়োজন হয়, তা মেলেনি। ডেমোক্র্যাটেরা সাময়িক তহবিলে অনুমোদন দেননি বলে হোয়াইট হাউস সূত্রে খবর। মার্কিন সিনেটে মোট সদস্য সংখ্যা ১০০। সরকারি তহবিল সংক্রান্ত বিল পাশ করাতে হলে তার পক্ষে অন্তত ৬০টি ভোট প্রয়োজন হয়। সিনেটে রিপাবলিকানদের সংখ্যা ৫৩।

বাজেট নিয়ে অচলাবস্থার জেরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘সরকার শাটডাউন’ শুরু হওয়ায় দেশব্যাপী উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে। পাঁচ বছর পর আবারও যুক্তরাষ্ট্র এ পরিস্থিতির মুখে পড়েছে। সিনেটে ব্যয় বাজেট বিল পাস নিয়ে দ্বন্দ্ব বাধায় এমনটি হওয়ার আভাস আগেই মিলেছিল।

কোনো কারণে কংগ্রেস যদি ব্যয় বিল পাস করতে ব্যর্থ হয় বা প্রেসিডেন্ট সেই বিলে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করেন, তখনই ঘটে ‘শাটডাউন’। এবারের শাটডাউনের জন্য ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানরা একে অন্যকে দোষারোপ করছেন।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের এটাই প্রথম বড় শাটডাউন। গত সোমবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প, ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এবং কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে ফেডারেল ব্যয় নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও তাতে কোনো অগ্রগতি হয়নি। বরং দুপক্ষই নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবুও যা আশা ছিল তা মঙ্গলবার স্তিমিত হয়ে যায়। শেষ মুহূর্তেও সিনেটে অর্থায়ন বিল পাস না হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হলো।

ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স রিপাবলিকান নেতাদের পাশে নিয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, ডেমোক্র্যাটরা সঠিক কাজ করছেন না। আপনি আমেরিকানদের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে বলতে পারেন না।

মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছে, শাটডাউনে জরুরি পরিষেবা চালু থাকবে। এ সংক্রান্ত কর্মীরা অচলাবস্থার বাইরে থাকবেন।

উল্লেখ্য, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২০১৮ সালে সর্বশেষ সরকার বন্ধ ছিল ৩৫ দিন, যা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দীর্ঘতম শাটডাউন হিসেবে রেকর্ড গড়েছিল। সেই শাটডাউন শেষ হয়েছিল এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলাররা বেতন ছাড়া কাজে না এসে বিমান চলাচল ব্যাহত করার হুমকি দিলে।

এবার শাটডাউন কতদিন স্থায়ী হবে, তা এখনো অনিশ্চিত। তবে একটি বিষয় স্পষ্ট, রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয় পক্ষই এই লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত এবং কেউই সহজে পিছু হটার লক্ষণ দেখাচ্ছে না। আমেরিকার সাধারণ মানুষ চূড়ান্ত সঙ্কটের মধ্যে পড়তে চলেছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com