শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৫২ অপরাহ্ন
বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি::
‘হায়রে মানুষ রঙিন মানুষ,দম ফুরালে ফুস, তবুও তো ভাই, কারো নেই একটুখানি হুস’। সৈয়দ শামসুল হক রচিত কন্ঠ শিল্পী এন্ড্রো কিশোরের কন্ঠে গাওয়া গানের প্রথম কলি এটি। অভিভাবকবিহীন ষাটোর্ধ্ব বয়সের এক লোককে শীতের রাতে বাঘা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের সামনের মেঝেতে একটি কম্বল গায়ে শুয়ে থাকা দেখে,অনেকটাই মিল পাওয়া গেছে ওই গানের। হাসপাতালে ভর্তির পর বেডে মল-মুত্র ত্যাগ করার কারণে তার ঠাঁই হয়েছে বিছানা বিহীন মেঝেতে। তাকে সাহায্য সহযোগিতার হাত না বাড়িয়ে, অনেকেই প্রশ্ন রেখেছেন, লোকটি কে? জিজ্ঞাসাবাদে তার পক্ষ থেকে নাম পরিচয় জানা যায়নি। সব জিজ্ঞাসার একটি উত্তর পাওয়া গেছে জানিনা। তবে নাম বলেছে ফজলু। ১৭ জানুয়ারী বুধবার দুপুরে স্পর্শকাতর বিষয়টি ‘একুশে কন্ঠের’ নজরে এলে সেখান থেকে সরিয়ে আরেক জায়গায় নেওয়া হলেও ঠাঁই মিলে বিছানা ছাড়াই।
জিজ্ঞাসাবাদে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আদুজ্জামান আসাদ জানান, উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল আযম সোমবার সন্ধ্যায় (১৫-০১-১৮) অসুস্থ অবস্থায় তাকে বাঘা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে রেখে যায়। ভর্তির পর হাসপাতালের বেডে মল-মুত্র ত্যাগ করে, বের হয়ে আম গাছের নিচে গিয়ে শুয়ে থাকছেন। ধরে এনে হাসপাতালের বেডে শুইয়ে দিলেও কিছুক্ষণ পর বের হয়ে গাছ তলায় গিয়ে শুয়ে থাকছেন। রোগীটি মানষিক ভারসাম্যহীন বলে জানান এই চিকিৎসক। এদিকে সুইপারসহ জনবল সংকটে অভিভাবকবিহীন ওই রোগীকে নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন হাসপাতাল কর্র্তৃপক্ষ।
চেয়ারম্যান আজিজুল আযম জানান, চর এলকার পলাশী ফতেপুর গ্রামের একটি গম ক্ষেতে মল-মূত্র ত্যাগ করে অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় শুয়ে ছিল। স্থানীয়দের মাধ্যমে জানার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় পুলিশ প্রসাশনকে অবগত করে গ্রাম পুলিশের সহযোগিতায় বাঘা হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতালে ভর্তির আগে তার বড় বড় দাড়ি-মুচ ছিল। তাকে পরিস্কার পরিছন্ন করে নাপিত ডেকে চুল কেটে ছোট করে দেন। ওই সময় নাম বলেছে ফজলু। বাড়ি ফরিদপুর জেলার সদরপুর থানার এরশাদ নগর গ্রামে বলে জানিয়েছে। পরিবারে অন্যান্য সদস্যদের নাম জানতে চাইলে শুধু গনি বলে আর কোন প্রশ্নের উত্তর দেননি। পরে অনেক চেষ্টা করেও কোন কিছু জানা যায়নি। বিষয়টি শুনেছেন বলে জানান,উপজেলা নির্বাহি অফিসার শাহিন রেজা।