বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫, ০৩:৪৬ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, একুশের কণ্ঠ:: দেশের আকাশে ১৪৪৬ হিজরি সনের পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে ২৯ মে বৃহস্পতিবার থেকে পবিত্র জিলহজ মাস গণনা করা হবে। এ অনুযায়ী শনিবার (৭ জুন) পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন করা হবে।
বুধবার (২৮ মে) সন্ধ্যায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সভাকক্ষে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় ১৪৪৬ হিজরি সনের পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা সম্পর্কে সকল জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, বুধবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের আকাশে পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার সংবাদ পাওয়া যায়।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে তথ্য অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মোঃ নিজামূল কবীর, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মু. আঃ আউয়াল হাওলাদার, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মোঃ আয়াতুল ইসলাম, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম-সচিব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক মোঃ নাজিম উদ্দিন, বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসনের উপ-সচিব শামীম আহমেদ, বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মোঃ নূরুল করিম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি লোকমান হোসেন, চরমোনাই আহছানাবাদ রশিদিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সৈয়দ মোঃ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দাওয়া ও ইসলামিক শিক্ষা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আব্দুল্লাহ ফারুক, সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ওবায়দুল হক, জমিয়াতুল উলুমিল ইসলামিয়ার সহকারী অধ্যক্ষ আব্দুল গাফফার।
পবিত্র ঈদুল আজহা ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব। ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত এ দিনটির রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য।
ঈদুল আজহার আরেক নাম কোরবানির ঈদ। অনেক জায়গায় এই ঈদ বকরি ঈদ নামেও পরিচিত। হিজরি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, জিলহজ মাসের ১০ তারিখ ফজরের পর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত ঈদুল আজহা হাজির হয় কোরবানির বিশেষ বার্তা নিয়ে।
এই দিনে হজরত ইবরাহিম (আ.) তার প্রিয়পুত্র হজরত ইসমাঈল (আ.)-কে আল্লাহ তাআলার নামে স্বপ্নে জবাই করতে দেখেন। তাদের অতুলনীয় আনুগত্য এবং মহান পুণ্যময় ত্যাগের দৃষ্টান্ত দেখে আল্লাহ তাআলা পুত্র কোরবানির পরিবর্তে বাহ্যিকভাবে পশু কোরবানির আদেশ দেন।
পুণ্যময় এই দিনটিকে স্মরণ করেই তাই সব ধর্মপ্রাণ মুসলমান আল্লাহর নামে পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন। কোরবানির এই ঈদে পশু কোরবানি হলো ইবরাহিম (আ.)-এর অনুসরণে হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এটি তার উম্মতের সমর্থ ব্যক্তিদের জন্য আবশ্যক করেছেন। এটি পালনের মধ্য দিয়ে মুসলিমরা তাদের খোদাভিরুতা জানান দেন।
এই দিনটি মুসলমানদের মাঝে যে বার্তা পৌঁছে দেয়, তা হলো আল্লাহর প্রতি হজরত ইবরাহিমের (আ.) অতুলনীয় আনুগত্য এবং মহান পুণ্যময় ত্যাগ।
দিনটি আরো শিক্ষা দেয় মানুষের কুপ্রবৃত্তি হিংসা-বিদ্বেষ, গর্ব-অহংকার, কপটতা, পরশ্রীকাতরতা, পরনিন্দা দূর করার। নিজের সব পশু-প্রবৃত্তিকে কোরবানি করে পরিপূর্ণভাবে আল্লাহর কাছে নিজেকে সমর্পণ করার ত্যাগের শিক্ষা দেয় এই কোরবানির ঈদ।