বৃহস্পতিবার, ৩১ Jul ২০২৫, ১১:২২ অপরাহ্ন

৪০ বছর পর মিনতি ফিরে পেলেন আপন ঠিকানা

নাটোর প্রতিনিধিঃ মিনতি বেগম (৪৭)। ৪০ বছর আগে হারিয়ে গিয়েছিলেন। অবশেষে রোববার (১৭ অক্টোবর) শাহরুখ নয়ন নামে এক তরুণের উদ্যোগে পরিবার-পরিজন ফিলে পেয়েছেন তিনি। মা-বাবা ও স্বজনদের কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত মিনতি ও তার পরিবারের লোকজন।

মিনতি নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের রানীগ্রাম এলাকার মো. বাছের আলীর মেয়ে। ছয় বছর বয়সে হারিয়ে যান তিনি।

মিনতির ভাই তাছের আলী জানান, তারা চার ভাই-বোন ছিলেন। তার মধ্যে মিনতি সবার ছোট ছিল। মিনতির বয়স যখন ছয় বছর তখন তার চাচাতো বোন জামাইয়ের সঙ্গে ময়মনসিংহে বেড়াতে যায়। সেখানে দুলা ভাইয়ের সঙ্গে ঘুরতে ঘুরতেই স্টেশনে হারিয়ে যায় মিনতি।

পরে সেখানকার মসলেম উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি তাকে তার বাসায় নিয়ে যায়। সেখানেই বড় হয় মিনতি। মিনতি বড় হওয়ার পর গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকার ব্যবসায়ী বুরহান উদ্দিনের সঙ্গে তার বিয়ে দেওয়া হয়। মিনতি চার মেয়ের মা। তার মধ্যে তিন মেয়ের বিয়ে হয়েছে।

শাহরুখ নয়ন জানান, তার বাড়ি উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের মকিমপুর এলাকায়। তিনি চাপিলা ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য জনাব আলীর ছেলে। ঢাকা কলেজে পড়াশোনা করেন তিনি। পড়াশোনারত অবস্থায় পরিচয় হয় মিনতির মেয়ের জামাইয়ের সঙ্গে। তার মেয়ের জামাইয়ের কাছেই শোনেন মিনতির জীবনের গল্প। এরপর তিনি মিনতির সঙ্গে কথা বলেন। জানতে পারেন রাজশাহীর কাছিকাটা গ্রামে মিনতির বাসা। এতটুকু ছাড়া মিনতি আর কিছুই বলতে পারে না।

তিনি আরও জানান, মিনতি যখন হারিয়ে যায় তখন বৃহত্তর রাজশাহী জেলা ছিল। যেহেতু নিজ উপজেলাতে কাছিকাটা গ্রাম রয়েছে এজন্য তিনি কাছিকাটা গ্রামের পথে-প্রান্তরে মিনতির বর্তমান ছবিসহ লিফলেট বিতরণ করেন। এভাবেই সন্ধান করতে করতে রানীগ্রাম এলাকা থেকে একটি ফোন আসে মিনতির বিষয়ে।

মিনতি মোবাইল ফোনে তাদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তিনি ছোটবেলার কিছু চিহ্ন ও স্মৃতি কথা বলেন। সেই সূত্র ধরে আপন ঠিকানার সন্ধান পায় মিনতি। এরপর মিনতিকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

মিনতি বেগম বলেন, ৪০ বছর পর তার আপন ঠিকানা ও মা-বাবা-ভাই-বোনকে দেখতে পাবো তা কখনও কল্পনাও করতে পারিনি। নিজের মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজনদের কাছে পেয়ে অনেক ভালো লাগছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com