বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:০১ অপরাহ্ন

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: তারেক-বাবরের খালাসের রায় বহাল

নিজস্ব প্রতিবেদক, একুশের কণ্ঠ:: ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামির খালাস হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা ৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ নেতৃত্বাধীন ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।

আদালতে তারেক রহমান-বাবরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক, আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ মাসুদ।

আদালতে বিএনপির আইনজীবীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান রায়হান বিশ্বাস, অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম মুকুল, আজমল হোসেন খোকন।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। হামলার লক্ষ্য ছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা। এতে নিহত হন মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আইভি রহমানসহ ২৪ জন এবং আহত হন শতাধিক নেতাকর্মী। হামলার পর দুটি মামলা হয় একটি হত্যা মামলা ও অন্যটি বিস্ফোরক আইনে। ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নতুন করে তদন্ত শুরু করে সিআইডি, পরে ২০০৮ সালে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের পুনঃক্ষমতায় আসার পর আরও ৩০ জনকে নতুন করে আসামি করা হয়।

২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ মামলার রায় ঘোষণা করে। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া আরও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।

বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে হাইকোর্ট দীর্ঘ শুনানির পর ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর রায় ঘোষণা করে। রায়ে বলা হয়, ২১ আগস্টের হামলার তদন্ত পর্যাপ্ত ও স্বাধীনভাবে হয়নি। তদন্তে অসঙ্গতি ও দুর্বলতা ছিল, যার ফলে ন্যায়বিচার প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, মামলার নথিপত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে নতুন করে পেশাদার সংস্থার মাধ্যমে তদন্ত করতে।

রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টের খালাসের বিরুদ্ধে আপিল করে। তারা দাবি করেন, বিচারিক আদালতের দেওয়া সাজা বহাল রাখা উচিত। অন্যদিকে আসামিপক্ষ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে। আপিল বিভাগে মামলার শুনানি শুরু হয় ১৭ জুলাই এবং ধারাবাহিকভাবে ৫ দিন চলার পর রায় ঘোষণা করা হয়। এই রায়ের ফলে তারেক রহমান ও লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামি আপিলেও খালাসে সন্তুষ্ট থাকলেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com