মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ০৭:০২ পূর্বাহ্ন

হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী গরু দিয়ে হাল চাষ

টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য গরু-লাঙ্গলের সাথে কৃষকের সেই মিতালীর দৃশ্য এখন বিরল। দিন দিন নতুন যন্ত্র আবিষ্কারের ফলে সারাদেশ থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে বাঙ্গালী’র চিরচেনা সেই গরু-লাঙ্গল দিয়ে জমি চাষের চিত্র।হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী গরু দিয়ে হাল চাষ।

টাঙ্গাইলে গরু দিয়ে এখন আর কৃষকদের কুয়াশাচ্ছন্ন ভোরে জমি চাষ করতে মাঠে দেখা যায় না। কৃষক এখন ট্রাক্টর বা পাওয়ার টিলার নিয়ে মাঠে গিয়ে অল্প সময়ে জমি চাষ এবং মই দিয়ে ফসল আবাদ করছেন। সে সময় গরু-লাঙ্গল ছাড়া জমি চাষ করার কথা চিন্তাই করা যেতো না। কৃষকের জমি চাষ আর মই দেওয়ার দৃশ্য সবার নজর কাড়তো। বিজ্ঞানের ক্রমাগত উন্নতির কারণে গরু-লাঙ্গলের স্থান দখল করে নিয়েছে ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলারসহ বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্রপাতি।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বহেড়াতৈল ইউনিয়নের যোগীর কোফা গ্রামের কৃষক সোলাইমান মিয়া(৫৫) ও সরোয়ার মিয়া(৫০) গরু দিয়ে হালচাষ করছেন। বাঁশের ফালা দিয়ে তৈরি করা ধারালো লাঙ্গল কাঠের হাতল আর জোয়ালের মাধ্যমে গরুর কাঁধে বেধে দিয়ে জমিতে হাল চাষ করছেন তারা।

যোগীর কোফা এলাকার কৃষক সোলাইমান মিয়া বলেন, বাপ দাদারাও গরু দিয়ে হালচাষ করতো, তাদের দেখে আমি করছি।গরু দিয়ে হালচাষ করলে ফলনও ভালো হয়। পোকায় আক্রমণ করে না, ধানও হয় বেশি। গরুর গোবর জমিতে পড়লে জৈব সার হয়। গতবছর গরু দিয়ে হালচাষ করেছিলাম ফলন ভালো হয়েছিল। এবছর ট্রাক্টর দিয়ে সরিষা আবাদ করেছিলাম। পোকায় সরিষা নষ্ট করে ফেলছে। আমাদের কৃষকদের জন্য গরু দিয়ে হাল চাষ করাটা উত্তম। আমরা ফলনও ভালো পাই।

একই এলাকার কৃষক সরোয়ার মিয়া বলেন, ২৫ বছর ধরে গরু দিয়ে হালচাষ করি। গরু দিয়ে হাল চাষ করলে ধানের ফলন ভালো হয়। ধান বড় হয়, ধানে চিটা হয় না। ধান ফলন হয় বেশি তাই গরু দিয়ে হালচাষ করি। নিজের জমিও চাষ করি, অন্য কৃষকদের জমিও চাষ করি। প্রতি শতাংশ জমি হাল চাষের জন্য ১৫ টাকা করে নেই।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com