রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ০৮:১৬ অপরাহ্ন

স্বামী হত্যার দায় স্বীকার করলেন স্ত্রী কমলা

রাজবাড়ী প্রতিনিধি::

স্ত্রী কমলা দাস পা চেপে ধরে রাখে, বিল্লাল হাত চেপে ধরে রাখে, আলাল বুকের উপর উঠে বসে আর আজিজুল শ্বাসরোধ করে হত্যা নিশ্চিত করে। হত্যার পর গাছের সাথে রশি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখে।

দীর্ঘ ৪ বছর পর রাজবাড়ী জেলা সিআইডির পরিদর্শক শেখ মোঃ আক্তারুজ্জামান বৃহস্পতিবার নিহত ভ্যান চালক সুবির দাসের স্ত্রী কমলা দাসকে গ্রেফতার করে। পরে রাজবাড়ী আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্ধি গ্রহন করে।

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের ঠাঁকুর নওপাড়া গ্রামের ভ্যান চালক সুবির দাস (৪০) হত্যা সম্পর্কে আদালতে এ চাঞ্চল্যেকর স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্ধি প্রদান করে নিহতের স্ত্রী কমলা দাস। নিহত সুবির দাস উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের ঠাঁকুর নওপাড়া গ্রামের সুধির দাসের ছেলে।

স্বীকারোক্তিতে কমলা দাস বলেন, আমার ছেলে প্রসেনজিৎ দাস, চিরঞ্জিত দাস ও কন্যা লাবনী দাসকে বাড়ীতে রেখে লিবিয়া অবস্থান করি। সেখানে থাকাবস্থায় আমার স্বামীকে কিছু লোক ভুলবোঝায় তোর স্ত্রী সেখানে খারাপ কাজ করছে। এর একবছর পর ২০১৪ সালের জানুয়ারী মাসে আমাকে বাড়ীতে ফিরিয়ে আনে। দেশে আসার পর স্বামী সুবির আমাকে ভুল বুঝতে থাকে ও অবিশ্বাস করতে থাকে। বিদেশে তুই অবৈধ কাজ করেছিস এখানে অবৈধ কাজ করে টাকা এনে দিবি বলে দাবী করে। স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে অবৈধ কাজে নামতে বাধ্য হই।

বিদেশে যাওয়ার সময় স্বামী বিল্লাল, আলাল, আজিজুলদের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছিল। তারা বাড়ীতে আসতে থাকে এবং তার স্বামী তাকে তাদের সাথে অবৈধ কাজ করতে বাধ্য করে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে স্বামীকে হত্যার জন্য আজিজুলদের সাথে পরিকল্পনা করি।

পরিকল্পনা মাফিক ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর রাতে স্বামীকে বলি একটি লোক আসবে কিছু টাকা দিবে। একথা বলে রাত ১২টার দিকে বাড়ীর পাশের একটি মেহগনি বাগানে নিয়ে যাই। সেখানে পরিকল্পনা অনুযায়ী আমি পা চেপে ধরে রাখি, বিল্লাল হাত চেপে ধরে, আলাল বুকের উপর উঠে বসে আর আজিজুল শ্বাসরোধ করে হত্যা নিশ্চিত করে। হত্যার পর গাছের সাথে রশি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখে ওরা। এরপর বাড়ীতে এসে তার ভাই প্রবিরকে জানাই তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। পরদিন মেহগনি বাগানে সুবিরের লাশ পাওয়া যায়।

এব্যাপারে নিহতের ভাই প্রবীর কুমার দাস বাদী হয়ে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর বালিয়াকান্দি থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর একাধিক তদন্ত কর্মকর্তার হাত বদলের পর এস,আই জাকির হোসেন ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল আদালতে চার্জশীর্ট প্রদান করেন। চার্জশীটে মামলার বাদী প্রবীর কুমার দাস নারাজী দিলে মামলাটি সিআইডির উপর তদন্ত অর্পন করে। এ মামলার অন্যান্য আসামীরা বর্তমানে পলাতক রয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com