মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:০০ অপরাহ্ন
মুজিবুর রহমান বাবু, ই-কন্ঠ টোয়েন্টিফোর ডটকম ॥ মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ দুর্দান্ত খেলে গোলশূন্য। সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে দুই ধাপ এগিয়ে থাকা মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রীতি ম্যাচটি ড্র হয়েছে। মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে ভালো খেলেও প্রতিপক্ষের গোলমুখ খুলতে পারেনি বাংলাদেশের সুমন রেজা, জীবনরা।
বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের খেলা উপভোগ করেছেন সিলেটের দর্শকরা। গ্যালারিতে দর্শকের উপস্থিতি হলো বেশ। আগামী ২৯ মার্চ সিলেটে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামে জামাল ভুঁইয়ারা। সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে শুরু ফিফার এই আন্তর্জাতিক প্রীতি ফুটবল ম্যাচ।
দুর্দান্ত খেলেও জয় নিতে পারলো না বাংলাদেশ। সাবাস বাংলাদেশ ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠল গ্যালারির চারদিক থেকে। শুরু থেকে মঙ্গোলিয়ার উপর আধিপত্য করল বাংলাদেশ। কিন্তু গোল থাকল অধরা সোনার হরিণ হয়েই।
২১ বছর আগে শক্তিমত্তায় অনেক এগিয়ে থেকেও মঙ্গোলিয়ার সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করেছিল বাংলাদেশ। সেটি ছিল বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ, যা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০০১ সালে, সৌদি আরবে। ২১ বছর পর এবার সেই মঙ্গোলিয়া এবারই প্রথম খেলতে এল বাংলাদেশ, তখন শক্তিমত্তায় (ফিফ র্যাঙ্কিংয়ে) তার প্রতিপক্ষের চেয়ে দুই ধাপ এগিয়ে (মঙ্গোলিয়া ১৮৪, বাংলাদেশ ১৮৬)।
চাওয়া পূরণ হয়েছে মঙ্গোলিয়ার। ২১ বছর আগে ড্র’তে শেষ হয়েছিল বাংলাদেশ-মঙ্গোলিয়ার ম্যাচ। মঙ্গলবারও তাই হলো। তফাৎ একটাইÑ সেবার ম্যাচে হালিখানেক গোল হয়েছিল, আর এবার কোন গোলই হয়নি!
নতুন বছরে বাড়ির উঠানেও প্রত্যাশিত শুরু পেল না বাংলাদেশ। বাংলাদেশ কোচ হিসেবে জয়হীন থাকলেন কাবরেরাও। বছরের প্রথম ম্যাচে কদিন আগেই মালদ্বীপের মাঠে ২-০ গোলে হেরে এসেছে দল। সিলেটে সেই হারের ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার চাওয়া ছিল, কিন্তু তা পূরণের জন্য দরকারি গোল ছিল না সুমন-জীবন কারো পায়ে! স্বস্তি বলতে, মঙ্গোলিয়ার কাছে অপরাজিত থাকল বাংলাদেশ।
২০০২ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রথম লেগে ৩-০ গোলের জয়ের পর দুই দলের ফিরতি লেগ ২-২ ড্র হয়েছিল। দুটি পরিবর্তন এনে একাদশ সাজান হাভিয়ের কাবরেরা। ৪-১-৪-১ ফরমেশনে বিশ্বনাথ ঘোষ ও বিপলু আহমেদের বদলে রিমন হোসেন ও আতিকুর রহমান ফাহাদকে খেলান তিনি।
আক্রমণভাগে সুমন রেজা, রাকিব ও ইব্রাহিমরা বারবার চেষ্টা করে মঙ্গোলিয়ার রক্ষণ তছনছ করলেও গোলমুখ খুলতে পারেনি। পুরো ম্যাচ মঙ্গোলিয়া খেলেছে রক্ষণাত্মক কৌশলে শেষ পর্যন্ত তারা রক্ষণদূর্গ ঠিক রেখে বাংলাদেশকে রুখে জয়ের সমান ড্র নিয়ে দেশে ফিরতে পারছে।
দ্বিতীয়ার্ধেও শুরুর দিকে বাংলাদেশের খেলায় ছিল না চেনা ধার। ৬১তম মিনিটে সুমনকে তুলে অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ড নাবীব নেওয়াজ জীবনকে নামান কাবরেরা। সুমনের গোলের অপেক্ষা আরও বাড়ল। একমাত্র গোলটি তিনি করেছিলেন গত অক্টোবরে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নেপালের বিপক্ষে ১-১ ড্র ম্যাচে। ৪ মিনিটে মাঠে একটি কুকুর ঢুকে পড়ে! ফলে খেলা বন্ধ থাকে কিছুক্ষণ।
৪১ মিনিটে আবারও গোলবঞ্চিত হয় বাংলাদেশ। সোহেল রানা পাস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বক্সের ওপর থেকে শরীর ঘুরিয়ে শট নেন সুমন। বল গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে ক্রসবার কাঁপিয়ে ফিরে আসে। এর কিছুক্ষণ পরই জামাল ভুইয়ার পাস বক্সে হেড নেন ইয়াসিন, পোস্টের খুব কাছে বল নিজের আয়ত্বে নিয়ে সুমন যে শটটি করেন, তা হতাশ করে দর্শকদের।
৬২ মিনিটে দূর থেকে ইয়াসিনের দূরপাল্লার শট আটকে দেন মঙ্গোলিয়ার গোলরক্ষক। ৭১ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে রিমনের ক্রসে জামাল ভুইয়ার টাচ ফিস্ট করেন প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক।
৭৫তম মিনিটে দুটি পরিবর্তন আনেন কাবরেরা। রাকিব ও জামালকে তুলে বিপলু ও জাফর ইকবালকে নামান। সিলেটের ছেলে বিপলু লাইনের পাশে আসতেই গ্যালারির উচ্ছ্বাস আরও বাড়ে। ৪ মিনিট পর জাফরের পাসে বিপলুর ভলি যায় বাইরে।
বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত হতাশার গোলশূন্য ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়ে।