বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫, ১০:০৫ অপরাহ্ন

সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি দৌলতপুর সাব রেজিস্ট্রি অফিস

দৌলতপুর(কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি করে আসছে একটি সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের হাতে দীর্ঘদিন ধরে জিম্মি হয়ে আছে এখানকার দলিল লেখক ও সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ।

অনুসন্ধানে উঠে এসেছে দৌলতপুরের সদ্য বদলি হওয়া সাব রেজিস্টার আনোয়ার হোসেন, সাব রেজিস্ট্রি অফিসের বড় বাবু মুন্নি আরা খাতুন, এবং দলিল লেখক সমিতির সদ্য সাবেক সভাপতি বিল্লাল হোসেন ও স্ট্যাম্প ভান্ডার নুরুজ্জামান এখানকার দলিল লেখক ও সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে দীর্ঘদিন ধরে দলিল রেজিস্ট্রিতে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে আসছে। অভিযোগ আছে এই সিন্ডিকেটের পিছনে থেকে মদদ যোগাচ্ছে উপজেলা আওয়ামী লীগের দু একজন প্রভাবশালী নেতা।

সাধারণ দলিল লেখক ও সেবা নিতে আসা মানুষের অভিযোগ এখানে দলিল রেজিস্ট্রি করতে আসলে দলিল প্রতি ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা অতিরিক্ত গুনতে হয় তাদের।
এসব চাঁদাবাজি বন্ধে উপজেলার আওয়ামী ও যুবলীগের নেতৃবৃন্দরা অনেকবার আন্দোলন করলেও কোন সুফল আনতে পারেনি। তাছাড়া ওই সিন্ডিকেটের মুল হোতা নুরুজ্জামান নুরুর আছে নিজস্ব পোশা ক্যাডার বাহিনী। সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কেউ কোন কথা বললেই তার উপর শুরু করে অত্যাচার।

এদিকে গত সোমবার বদলির আদেশ হয় দৌলতপুরের সর্বাধিক দুর্নীতিগ্রস্থ সাব রেজিস্টার আনোয়ার হোসেনের। আর সেখানেই বাধে বিপত্তি। সোমবার অফিসে এসে সাব রেজিস্টার আনোয়ার হোসেন বলেন আমি বদলি হয়ে গেছি আর কোন দলিল রেজিস্ট্রি আমি করবো না।

এ সময় সাধারণ দলিল লেখক ও সেবা নিতে আসা মানুষ ফিরে যায়। অথছ ঐদিন দুপুর পর থেকে স্থানীয় একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে গোপনে ১শ’টিরও বেশি দলিল রেজিস্ট্রি করেন সাব রেজিস্টার। পরদিন মঙ্গলবারও তিনি একই পন্থায় কিছু ব্যক্তির দলিল রেজিস্ট্রির প্রস্তুতি নেয়। এ সময় উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদেরের এক আত্মীয় দলিল করতে আসেন। অথচ সাব রেজিস্টার তার দলিল করবে না বলে জানান।

এ সময় যুবলীগ নেতা আব্দুল কাদের অফিসে গিয়ে দেখে টাকার বিনিময়ে অন্যান্য লোকের দলিল রেজিস্ট্রি হচ্ছে। তিনি তখন এই ঘটনার প্রতিবাদ জানালে ওই সিন্ডিকেটের ক্যাডার বাহিনীরা শুরু করে হট্টগোল। পরে থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের বলেন, দীর্ঘদিন ধরে একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এখানে চাঁদাবাজি হয়ে আসছে। আমি নিজেও একাধিক বার এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছি। ঘটনার দিন আমার এক আত্মীয় একটা দলিল রেজিস্ট্রির জন্য আসেন কিন্তু তার দলিলটা রেজিস্ট্রি করেনি সাব রেজিস্টার তখন আমি গিয়ে দেখি গোপনে অনেকগুলো দলিল রেজিস্ট্রি করছেন তিনি।

তখন আমি এই ঘটনার প্রতিবাদ জানালে এই সিন্ডিকেটের ক্যাডার বাহিনীরা হট্টগোলের সৃষ্টি করে এবং আমাকে লক্ষ করে ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে। এ ব্যাপারে ওইসব সিন্ডিকেটের সদস্য ও দৌলতপুরের সদ্য বদলিকিত সাব রেজিস্টার আনোয়ার হোসেনের মুঠো ফোনে ফোন দিলে নাম্বার বন্ধ পাওয়ার কারণে বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্য এই মাসের প্রথম সপ্তাহে আগের দুর্নীতিগ্রস্থ দলিল লেখক সমিতির কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করে সাধারণ দলিল লেখকরা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com