বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫, ০২:১৭ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা ॥
সাংবাদিকদের রুটি-রুজী, জীবনের নিরাপত্তা এবং বিভুরঞ্জন সরকারের মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ প্রেস ইউনিটি-র উদ্যোগে এক সংবাদবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। একই সঙ্গে সাগর-রুণিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার দ্রুত বিচার নিশ্চিত করারও জোর দাবি জানানো হয়।
সংগঠনের সমন্বয়ক শান্তা ফারজানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে বক্তারা সাংবাদিকদের ওপর চলমান নির্যাতন, নিপীড়ন ও নিরাপত্তাহীনতার তীব্র নিন্দা জানান। এতে বক্তব্য রাখেন প্রেস ইউনিটির উপদেষ্টা ও দৈনিক জনতার সংবাদ-এর সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এম. শাহজাহান আলী, দৈনিক স্বদেশ বিচিত্রার সম্পাদক অশোক ধর, সাংবাদিক মুঈদ খন্দকার, দৈনিক পূর্বাভাস-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোমিন মেহেদী, সাঈদা জাহান, নূরুল ইসলাম, আশরাফুল আলম ও জাহিদুল ইসলাম। সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন নাহিদ হাসান, তারেক হোসেন বাপ্পী, রাজু হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, জামাল শিকদার, মুস্তফা মাহমুদ ও রাজিবুল ইসলাম সহ আরও অনেকে।
বক্তারা বলেন, সাংবাদিকতা বাংলাদেশের চতুর্থ স্তম্ভ হলেও এই পেশার মানুষেরা সবচেয়ে বেশি অবহেলিত, বঞ্চিত ও নির্যাতিত। তারা অভিযোগ করেন, যখন যে সরকার ক্ষমতায় আসে, তারাই সাংবাদিকদের নিয়ন্ত্রণ করতে চায় এবং অপরাধ ও দুর্নীতির খবর ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করে। এর ফলস্বরূপ সাগর-রুণির মতো চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের ১৪ বছর পেরিয়ে গেলেও খুনিরা এখনো অধরা।
বক্তারা সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকারের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিভুরঞ্জনের লাশ মেঘনা নদী থেকে উদ্ধার হলেও এটিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে তারা জানান। বক্তাদের দাবি, বিভুরঞ্জন সরকারের চোখে তখনো চশমা ছিল, যা আত্মহত্যা তত্ত্বের সঙ্গে বেমানান। তারা বলেন, এর আগেও সাংবাদিক তুহিনকে কুপিয়ে হত্যার পর তার চরিত্রহননের চেষ্টা হয়েছিল।
সভাপতির বক্তব্যে শান্তা ফারজানা বলেন, অতীতের সব সরকারের মতোই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও সাংবাদিকদের বাক স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি অবিলম্বে বাক স্বাধীনতা ও অবাধ সংবাদ প্রবাহ নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। একই সাথে তিনি চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের জন্য সরকারি বিশেষ ভাতার ব্যবস্থা করা এবং ‘সাংবাদিক নিরাপত্তা আইন’ বাস্তবায়নের দাবি জানান। তিনি সতর্ক করে বলেন, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হলে সরকারের অবস্থান নড়বড়ে হয়ে যাবে।
সংবাদবন্ধনে সাগর-রুণি ও তুহিনসহ অন্যান্য নিহত সাংবাদিকদের প্রকাশিত সংবাদের কপি প্রদর্শন করা হয়।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ প্রেস ইউনিটি ২০০৯ সালের ১৪ আগস্ট জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে যাত্রা শুরু করে।