শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ০৭:৩০ অপরাহ্ন

শক্তিমান চাকমার শেষকৃত্যানুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে ব্রাশফায়ারে নিহত ৫

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি:: গুলিতে নিহত রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (এমএনলারমা) সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট শক্তিমান চাকমার শেষকৃত্য অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে গাড়িবহরে দুর্বৃত্তদের ব্রাশফায়ারে ৫ জন নিহত ও ৯ জন আহত হয়েছেন। ৪ মে শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার বেতছড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহতদের মধ্যে ইউপিডিএফ গনতান্ত্রিকের প্রধান তপন জ্যোতি চাকমা ওরফে বর্মা রয়েছেন। নিহত অন্যরা হলেন সুজন চাকমা, টনক চাকমা ,সেতু লাল চাকমা ও মাইক্রো চালক মো: সজিব। নিহতদের সংখ্যা বাড়তে পারে। আহতদের সকলে গুলিবিদ্ধ।

রাঙ্গামাটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম জানান , খাগড়াছড়ি থেকে একটি মাইক্রোবাস নিয়ে নানিয়ারচর যাচ্ছিলেন তারা। গাড়িটি বেতছড়ির কাঠাল বাগানে পৌছালে মাইক্রোবাসে একদল দুর্বৃত্ত হটাৎ ব্রাশফায়ার করে। এতে গাড়িটির চালক গুলিবিদ্ধ হলে মাইক্রোবাসটি নিয়ন্ত্রন হারিয়ে উল্টে সড়ক থেকে ছিটকে পড়ে।

পরে এলাকাবাসী ও আইন শৃংখলাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে ৩ জনের লাশ এবং গুলিবিদ্ধ ১১ জনকে উদ্বার করে।
আনুমানিক বেলা পোনে ২টার দিকে হতাহতদের খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেয়া হয়।

এরমধ্যে ২ জন মারা যায়। নিহত সেতু লাল চাকমা (৪০) ও মাইক্রো চালক মো: সজিব (৩৬) এর লাশ খাগড়াছড়ি হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৮জনকে খাগড়াছড়ি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এরমধ্যে আশংকাজনক অবস্থায় ৪জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়।

নানিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন তালুকদার জানিয়েছে, আইন শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এলাকায় সেনা বাহিনী ও পুলিশ টহল রয়েছেছে।

খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি শাহাদাত হোসেন টিটু নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে অফিসে যাওয়ার পথে শক্তিমান চাকমাকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ওই ঘটনার এখনও পর্যন্ত কাউকে আটকের খবর পাওয়া যায়নি।

অ্যাডভোকেট শক্তিমান চাকমা ২০১০ সালে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি থেকে বেরিয়ে গিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (এম এন লারমা) নামে গঠিত নতুন দলে যোগ দেন। সংস্কারপন্থি এই নেতা ছিলেন ওই সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি।

শক্তিমানকে হত্যার জন্য ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টকে (ইউডিপিডিএফ) দায়ী করে তার সংগঠন। শুক্রবার পাঁচজনকে হত্যার ঘটনাতেও একই অভিযোগ করা হচ্ছে।

ইউপিডিএফের (গণতান্ত্রিক) মিডিয়া উইংয়ের দায়িত্বে থাকা লিটন চাকমা সাংবাদিকদের বলেন, “শক্তিমান চাকমাকে হত্যা করার পর তপনজ্যোতি চাকমা বর্মাকে হত্যার মধ্য দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে একক সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য তারা (ইউপিডিএফ) একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে।”

ইউপিডিএফ থেকে বেরিয়ে গিয়ে নতুন দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা ইউপিডিএফের (গণতান্ত্রিক) নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন তপনজ্যোতি চাকমা বর্মা।

খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি শাহাদাত হোসেন টিটু জানান, আহতদের মধ্যে আটজনকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর চারজনকে ভর্তি করে বাকি চারজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠাতে বলেছেন আরএমও নয়নময় ত্রিপুরা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com