মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:০৫ পূর্বাহ্ন

লালমনিরহাটে প্রতিবন্ধি নারীর জমি দখলের চেষ্টা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি:: লালমনিরহাট সদর উপজেলায় ছকিনা বেগম নামে এক প্রতিবন্ধি নারীকে সরকারি ভাবে দেয়া ৪ শতক জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে এলাকার প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে। ওই জমিতে ঘর তৈরি করতে গিয়ে বার বার বাধার সম্মুখিন হচ্ছে ওই প্রতিবন্ধি নারী।

শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে সরেজমিনে গেলে দেখা যায় প্রতিবন্ধী ছকিনা বেগম একটি ভাঙা ঘরের পাশে ত্রপলের ছাউনি দিয়ে দুই কন্যা সন্তানকে নিয়ে কোন রকমে দিন যাপন করছেন।

এ ব্যাপারে ওই প্রতিবন্ধী নারীর ছোট চাচা রফিকুল ইসলাম ৬ জনকে আসামী করে লালমনিরহাট সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগ জানা যায়, সদর উপজেলার হারাটি ইউনিয়নের ডাঙ্গীটারি এলাকার প্রতিবন্ধি ছকিনা বেগম ভূমিহীন হওয়ায় লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাকে সরকারি খাস জমি ৪ শতক দেন। সে জমির উপর প্রতিবন্ধি ছকিনা ঘর তৈরি করতে গেলে এলাকার প্রভাবশালীদের প্রতিনিয়ত বাধার সম্মুখিন হচ্ছেন। বিষয়টি মৌখিক ভাবে লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উত্তম কুমার রায়কে জানানো হলেও এখনো পর্যন্ত কোন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন না করায় পরিবারটি অসহায় ভাবে জীবন যাপন করছেন।

প্রতিবন্ধি ছকিনা বেগম জানান, সদর ইউএনও তাকে বাড়ি করার জন্য ৪ শতক খাস জমি প্রদান করে। বিষয়টি এলাকার প্রভাবশালী মমতাজ উদ্দিন জানতে পেরে জমিটি মসজিদের জায়গা বলে জমি ছেড়ে দিতে বলে। জমি ছেড়ে না দিলে হাত পা ভেঙ্গে দেয়া হবে বলে হুমকী প্রদান করে। তিনি আরও বলেন, আমি একজন প্রতিবন্ধী। আমার পাঁচ মেয়ে সন্তান আছে। সন্তানরাও তার প্রতিবন্ধী। ইতিমধ্যে তিন মেয়েকে অনেক কষ্টে বিয়ে দিয়েছেন। আরও এক মেয়ে বিয়ের উপযুক্ত হয়েছে। এই ৪ শতক জমির উপর ত্রিপল দিয়ে কোন রকম রাত্রী যাপন করছি। আমাকে দেয়া সরকারী জমি আমি ঘর তুলতে গেলেই মমতাজ তার লোকজন দিয়ে বার বার বাঁধা সৃষ্টি করছেন। মমতাজ পাশের মসজিদের সভাপতি হওয়ায় ক্ষমতার জোড়ে ওই জায়গা দখল করে অন্যের নিকট মোটা টাকার বিনিময়ে বিক্রি করবেন জানতে পেরেছি। তিনি সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট এর ন্যায় বিচার দাবী করেন।

প্রতিবন্ধী নারীর ছোট চাচা রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার ভাতিজিকে দেয়া জমির পাশেই আমার ঘর। আমরা পাশাপাশিই থাকি। কিছুদিন আগে ওই মমতাজ ও তার লোকজন আমার বাড়ি ভেঙে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে আমি বাঁধা দিতে গেলে তারা আমার পরিবারের সবাইকে মারধর করে। এতে আমার স্ত্রী ও মেয়ে গুরুতর আহত হলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

অভিযুক্ত মমতাজ উদ্দিন তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, জমিটি মসজিদের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তাই ছকিনাকে সেখানে ঘর তুলতে নিষেধ করা হয়েছে।

লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত চলছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com