বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫, ১২:৫৩ অপরাহ্ন
লালমনিরহাট প্রতিনিধি:: লালমনিরহাট জেলার তিস্তা, ধরলা, রত্নাই, স্বর্ণামতি, শিংগীমারী, সানিয়াজান, ত্রিমোহনী, সাকোয়া, মরাসতি, ধোলাই, গিদারী, ছিনাকাটা নদীগুলোর পগিত চরে এখন বোরো ধানের আবাদের ধুম পড়েছে।
জানা যায়, বর্ষা মৌসুমে যেখানে ছিল থৈ থৈ পানি আজ সেখানে পানি শুকিয়ে চর পড়ে গেছে। আর স্থানীয় কৃষকেরা প্রতি বছরই সেখানে বোরো ধান আবাদ করে থাকেন।
সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, স্থানীয় কৃষকেরা নদীগুলোর এই সব চরে বোরোর আবাদে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে। প্রতি বছরই এসব পতিত চর থেকে কৃষকরা প্রচুর পরিমাণ ধান উৎপাদন করে থাকেন। শুষ্ক মৌসুমে কৃষকরা সেচের মাধ্যমে আবাদ করে থাকেন। নদীগুলোর মধ্যে ধানের চারা গুলো যেন সৌন্দর্যের অন্য আরেক রূপ।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, লালমনিরহাট জেলার ৫টি উপজেলায় ৭২টি চরাঞ্চল রয়েছে। এসব চরের মোট জমির পরিমাণ ২৬ হাজার ৬শত ৭৬ একর। এর মধ্যে আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ২০ হাজার ৪শত ৮৬ একর। আর ৩১ হাজার ৬শত ৩৭টি কৃষি পরিবার এসব জমি চাষাবাদ করে জিবিকা জির্বাহ করে থাকে।
তবে স্থানীয় কৃষকদের দাবি, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যের প্রায়নদ্বিগুণ জমি চাষ হয়। যার মধ্যে রয়েছে গিস্তা, ধরলা, রত্নাই ও স্বর্নামতি এ চার নদীর জমিও।
তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, নদীতে আনুমানিক ১০ হাজার একরেরও বেশি জমিতে বোরো আবাদের বাম্পার ফলন হয়েছে। এসব জমিতে প্রতি একরে গড়ে দুই টন করে বোরো ধান উৎপাদনের আশা করছেন চাষীরা। এ হিসাব মতে, ১০ হাজার একর জমিতে দুই হাজার টন ধান উৎপাদন হওয়ার কথা।
গোকুন্ডা ইউনিয়নের গিস্তা চরে বোরো ধান চাষী কাশেম আলী, মুকুল হোসেন বলেন, নদীর পানি যখন কমে যায়, তখন আমরা নদীর দুই পাড়ের মাটিগুলো সমান করে বোরো ধানের চাষ করি। যা অন্য ধানের আগেই পাকে। এ ধান চাষে পরিশ্রম ও ব্যয় খুবই কম। উৎপাদনও হয় ভালো।
ধরলা পাড়ের ফুলগাছ গ্রামের মোঃ হযরত আলী বলেন, আমাদের জমি দিয়েই নদী বয়ে গেছে। এসব
জমিতেই এলাকার ক্ষুদ্র চাষীরা বোরো ধান চাষ করে। এজন্য আমাদেরকেও ধানের ভাগ দিয়ে থাকেন তারা। এতে জমি তো পতিত থাকছে না, ফসলও ফলছে।
ফুলগাছ ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শহীদুল ইসলাম খন্দকার বলেন, নদীর বুক জুড়ে বোরো ধান চাষ হয়েছে। যা বাড়তি খাদ্য হিসেবে দেশের মোট খাদ্যে যোগ হবে। আমাদের সোনার মানুষ, যারা সোনা ফলায় তাদের কাছে আমরা চির কৃতজ্ঞ।