বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫, ১১:১০ অপরাহ্ন
মোঃ বিপ্লব, রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) থেকে::
দেশে লবণের সংকট নেই, কেবলই গুজব ছড়িয়ে মূল্য বাডানো হয়েছে। এখনো সারা বছরের চাহিদার তুলনায় বেশি লবণ সরকারের হাতে মজুদ রয়েছে। সম্প্রতি পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধির ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী লবণ সংকট দেখিয়ে দাম বাড়িয়ে বিক্রির পাঁয়তারা করেছিল- কথাগুলো উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী আফরিদা জানান। সারা দেশে এখনো চাহিদার তুলনায় ৩ লাখ ২৭ হাজার মেট্রিক টন লবণ বেশি মজুদ রয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) ঠাকুরগাঁও ও রাণীশংকৈলে লবণের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির চেষ্টায় ছডানো হয় গুজব। মানুষ পেঁয়াজের মতো লবণের দামও বাড়বে এমন আশঙ্কায় মুদি দোকানে ভিড় জমাতে থাকেন। এ সুযোগে অতিরিক্ত দামে ব্যবসায়ীরা লবণ বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সারা দেশে লবণের বার্ষিক চাহিদা ১৬ লাখ ৫৭ হাজার মেট্রিক টন। এর বিপরীতে এ বছর উৎপাদন হয়েছে ১৮ লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন। আর গত বছরের অবিক্রিত লবণ রয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার মেট্রিক টন। সব মিলিয়ে ১৯ লাখ ৮৪ হাজার মেট্রিক টন লবণ সরকারের হাতে মজুদ রয়েছে। বার্ষিক চাহিদার তুলনায় বেশি থাকা ৩ লাখ ২৭ হাজার মেট্রিক টন মিলিয়ে এখনো সাড়ে ৬ লাখ টন লবণ বেশি মজুদ রয়েছে সরকারের হাতে। আরও ৪/৫ লাখ মেট্রিক টন লবণ পাইকারি ও খুচরা বাজারে রয়েছে। এ বিষয়টি জেলা প্রশাসনকেও অবহিত করা হয়েেছ। গত কোরবানির ঈদের সময় চামড়া প্রক্রিয়াজাত করার ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে লবণ সংকট দেখিয়ে দাম বাড়ানোর চেষ্টা করেন চট্টগ্রামের কতিপয় ব্যবসায়ী। এবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে লবণ সংকট দেখিয়ে দাম বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। দেশবাসীকে গুজব থেকে সজাগ থাকতে হবে।
পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধির পর সোমবার সন্ধ্যা রাতে ঠাকুরগাঁও জেলা ও উপজেলার বাজারে লবণ সংকটের গুজব ছড়িয়ে বেশি দামে বিক্রি করা হয়। হঠাৎ করে লবণের দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা ভিড় করেন বিভিন্ন দোকানে। নিমিষেই লবণ সংকটের বিষয়টি শহর থেকে গ্রামেও ছড়িয়ে পড়ে। ফলে ব্যবসায়ীরা বেশি দামে লবণ বিক্রি শুরু করেন। রাণীশংকৈল বাজারে ৪শ’ টাকা বস্তা থেকে ৮শ টাকায় লবণ বিক্রি হয়েছে। ফলে লোকজন অতিরিক্ত দামে চাহিদার তুলনায় বেশি লবণ কিনে নেন।
এদিকে গুজবের সুয়োগ কাজে লাগিয়ে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির চেষ্টা করেন ব্যবসায়ীরাও। বেশি মুনাফার আশায় অনেকে দোকানের লবণ সরিয়ে নিয়েেেছন। এ অবস্থায় রাণীশংকৈল থানা পুলিশের একটি দল বাজার তদারকিতে গিয়ে ঘটনার সত্যতা খুঁজে পান।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক একেএম কামরুজ্জামান সেলিম জানান, ঠাকুরগাঁও জেলায় লবণের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। লবণ পাওয়া যাবেনা এরকম গুজবে কান না দেয়ার জন্য ঠাকুরগাঁও জেলার সম্মানিত নাগরিকদের অনুরোধ করা হল। কেউ কোনো প্রকার কারসাজি করলে জেলা প্রশাসন ঠাকুরগাঁও তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবে। সবাইকে শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য বিনীত অনুরোধ করা হল। রাণীশংকৈল থানা অফিসার ইনচার্জ আব্দুল মান্নান বলেন- আমার থানা এলাকায় কোনো দোকান মালিক যদি বেশি দামে লবণ বিক্রি করে তার বিরুদ্ধে কঠোর ভাবেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।