বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৩২ পূর্বাহ্ন

রাণীশংকৈলে সোনালী ব্যাংকের টাকা উধাও, ঘটনা ধামা চাপা দিতে ব্যাস্ত কর্তৃপক্ষ

রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি::

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে এক ব্যাংক থেকে গ্রাহকের টাকা উধাও হওয়ার পর ঘটনা ধামা চাপা দিতে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছেন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। তারা দোষীকে সনাক্ত করা বাদ দিয়ে আগে ঘটনা ধামা চাপা দিতেই একজোট হয়েছেন। তবে বিষয়টি এ প্রতিনিধি জানার পর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি করে সে গ্রাহকের টাকা ফেরত দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এছাড়াও সোনালী ব্যাংকের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তারা গ্রাহকদের বিভিন্নভাবে হয়রানী করেন এবং কোন ব্যক্তি যদি প্রকল্পের মোটা অংকের টাকা উত্তোলন করেন সে ক্ষেত্রে তাদের কাছে উৎকোচ চাওয়া হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ঘটনাটি গত বৃহস্পতিবার সোনালী ব্যাংক রাণীশংকৈল উপজেলা শাখায় ঘটেছে। গতকাল রোববার বিষয়টি সরজমিনে তদন্ত করতে ব্যাংকের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ আসবে বলে নিশ্চিত করেন ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক আলীম উদ্দীন। টাকা উধাও হওয়া গ্রাহক উপজেলার মুনিষগাঁও গ্রামের গিয়াস উদ্দীনের ছেলে শরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন সোনালী ব্যাংক শাখায় আমার ব্যক্তিগত ০২১০৪৮৩১ নং একটি একাউন্ডে ২লক্ষ টাকা জমা করি গত ১৬ জানুয়ারী। পরে টাকার প্রয়োজন হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার ব্যাংকে টাকা উত্তোলন করতে চেক দিলে কর্তৃপক্ষ বলে একাউন্টে চেকের পরিমাণ অনুযায়ী টাকা নেই। পরে এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হলে দেখা যায়,আর ডি আর এস নামক এনজিওর এর ইস্যুকৃত ৪২৫৩৬৯১ নং একাউন্টের চেক দিয়ে ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা ইতিমধ্যে উত্তোলন করা হয়েছে।

এদিকে আরডিআরএস এনজিওর হিসাব রক্ষক সারোয়ার আলম বলেন, আমি একই দিনে ৫টি চেক বহি ব্যাংক হতে নিয়ে আসি এতে একটি বইয়ের ৯টি পাতা দিয়ে ছিলেন জুনিয়র কর্মকর্তা জবাইদুর রহমান। এখন জানতে পারছি সে পাতা দিয়েই অন্যর একাউন্টের টাকা তোলা হয়েছে যার নম্বর ৪২৫৩৭০০। সারোয়ার আলম আরো বলেন, অন্যের একাউন্ট থেকে কে টাকা উত্তোলন করেছে তা আমার জানা নেই। তাছাড়া আইটি কর্মকর্তা চেক পাতাটি যাচাই না করে কেন টাকা দিলো তা আমার বোধগম্য নয়।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, ঘটনাটিতে ব্যাংকের একজন বে-সরকারী কর্মচারী(সিকিউরিটি সদস্য) জড়িত রয়েছে। এ বিষয়ে একাউন্ট হোল্ডার শরিফুল ইসলাম বলেন আমি ২লক্ষ টাকা ব্যাংকে জমা রেখে ছিলাম অথচ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আমাকে জানায় যে একাউন্টে শুধু ১০ হাজার ৫শত পঞ্চাশ টাকা রয়েছে। বিষয়টি শুনে আমি হতভম্ব হয়ে পড়ি। এ রকম একটি সরকারী ব্যাংকে জমানো টাকা উধাও হলে মানুষের ডিপিএস ফিসডিপোজিট ও কারেন্ট একাউন্টে জমা কৃত টাকার নিরাপত্তা কোথায়?

এ প্রসঙ্গে, আইটি কর্মকর্তা নিপূণ বর্ম্মনের মতামত নেওয়ার চেষ্ঠা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। ব্যাংকের ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম বর্তমানে ট্রেনিংয়ে থাকায় ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক আলীম উদ্দীন রোববার বলেন, ম্যানেজার স্যার ট্রেনিংয়ে গেছেন। জানামতে সেদিনেই বিষয়টি সমাধান হয়েছে গ্রাহক তার টাকা পেয়েছে। তাছাড়া বিষয়টি জানতে আজ উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষ আসার কথা রয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com