বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫, ০২:০৭ পূর্বাহ্ন

রাণীশংকৈলে অবৈধ দখলকারীর কবলে কুলিক নদী

রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি::

মানুষের মানবতাই চাপা পড়েছে অমানবিক ধৃষ্টতায়। চাপা পড়ে গেছে কোমল হৃদয়ের যত ভালো দিকগুলো। নদী দখল-বেদখলের খেলায় আজকের সুবিধাবাদী সমাজের মানুষগুলো। সরকারি জমি দখলের হলি খেলায় মাতোয়ারা থেকেছে সমাজের কিছু লোক। এই এক ধরনের লোকগুলোই এক সময় হাত বাড়ায় নদীর দিকে। প্রথমেই নদীর তীরগুলো দখলে নেওয়ার চেষ্টা।

এরপর পাড়ের একটু একটু করে দখল। তারপর আবার নদীর ভেতরের দিকে আগমন। এক সময় জিহ্বায় রস জমিয়ে নদীর মধ্যবুকেও বসবাস শুরু করে। ঠিক এমনই পরিস্থিতির শিকার হয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলের কুলিক নদীটির। এ উপজেলার রাজা টংকনাথের রাজবাড়ির পশ্চিম পার্শ্বে কুলিক নদীটি আধমরা হয়ে বহমান রয়েছে।

কোথাও কোথাও শুকনো বালু আর নদীর অনিশ্চিত হাঁটু পানি প্রমাণ করে আজ সে রোগাক্রান্ত জড়াজীর্ণ এক কুলিক নদী। বিশেষ করে দেখা যায় বড় পুল (ব্রিজ) এর দুই পাশ তাকালে। শুকনো কুলিকের পানি আটকিয়ে স্বাভাবিক গতি থামিয়ে অনেকের ধান চাষ করার ফলে কোথাও দেখা যায় ধুধু বালু। সে কারণে প্রতি বছর কুলিক হারায় তার নাব্যতা।

প্রভাবশালীরা এই নদীর দুই তীর নিজেদের আয়ত্বে রেখে ফসল রোপণ করে, এমনকি বাসযোগ্য করে রেখেছে নদী ভরাট করে। তীর ঘেঁষে গড়ে উঠেছে পাকা, আধাপাকা, স্থায়ী-অস্থায়ী, নানা ধরনের স্থাপনা। সিএস রেকর্ড অনুযায়ী নদীর অংশ থাকলেও আজ তা মানুষের তৈরি ব্যস্ততম শহরের অংশবিশেষ। নদীর নাব্যতা, নদীর চলমান গতি, নদীর সীমানা কোনোটার কোনো মূল্যই নেই এই দখলকারী মানুষ নামের সামাজিক প্রভাবশালী গোষ্ঠীর কাছে।

অবৈধ স্থাপনা, অবৈধ দখলকারীর সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিচয় কী এসব যদি পরিহার করা যায়, তবেই নদীকে তার জীবন ফিরিয়ে দেওয়ার কাজটি বাস্তবায়িত হতে পারে বলে মনে করেন সমাজের সচেতন মহল। এখানকার সচেতন মানুষ মনে করে কুলিক নদীর নাব্যতা ফেরাতে সরকারী প্রকল্পের মাধ্যমে ড্রেজিং করে সরকারের সম্পদ রক্ষা করা প্রয়োজন। নদী বাঁচলে একদিকে যেমন প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা পাবে, তেমনি অনেক মানুষের জীবিকা নির্বাহের পথও সুগম হবে। আর জীবন বাঁচলে সমাজ ও প্রকৃতিও বাঁচবে। কারণ, ‘সময় ও স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না’।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, ঠাকুরগাঁও জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, ‘কুলিক নদীটির প্রকল্প লিস্টে দেওয়া আছে এবং ওটার সার্ভে করা আছে। আশা করছি পাস হলে খননও হবে, উচ্ছেদও হবে’।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com