শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:৫৭ পূর্বাহ্ন
কালিয়াকৈর প্রতিনিধি::
গত রমজান ঈদে নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে ঈদযাত্রার জন্য ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চারলেনের উড়াল সড়ক, সেতুসহ কয়েকটি ওভারপাস খুলে দেওয়া হয়। এরপর এখানে আর যানজটের চিত্র দেখা যায়নি। কিন্তু নতুন করে একটি উড়াল সড়ক ও একটি আন্ডারপাস নির্মাণ কাজ চলমান থাকায় এবং বৃষ্টির কারণে মহাসড়কের কিছু কিছু স্থানে বেহাল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এবার ঈদে (কোরবানী ঈদ) যানজটের আশঙ্কা করছেন এখান দিয়ে চলাচলরত চলাচলকারী মানুষ।
মঙ্গলবার সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে ও চলাচলকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড়। উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত। এখান দিয়ে প্রতিদিন দেশের উত্তরবঙ্গের ১১৮টি রোডের হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। ঈদে যানবাহনের চাপ আরো বৃদ্ধি পায়। দুটি ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবের ছুটিতে এই পথে গ্রামের বাড়িতে ফিরেন অসংখ্য ঘরমুখো মানুষ। কিন্তু এমন কেউ নেই এই চন্দ্রা ত্রিমোড়ে যানজটে আটকা পড়ে নাজেহাল হননি। একই চিত্র ছিল গাজীপুরের কোনাবাড়ীও। অবশেষে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের উদ্যোগে এডিবি’র অর্থায়নে সাউথ এশিয়া রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন প্রজেক্টের আওতায় গত ২০১৬ সালে জানুয়ারী এ মহাসড়কটি চারলেনের কাজ শুরু হয়। ৫৫৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে গাজীপুর ভোগড়া বাইপাস মোড় থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে গত ২৫ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোনাবাড়ি ও চন্দ্রা উড়াল সড়কসহ কয়েকটি সেতু উদ্বোধনের পরপরই যানচলাচলের চিত্র সম্পূর্ণ পাল্টে যায়। এসব উড়ালসড়ক, সেতু খুলে দেওয়ার পর এ মহাসড়কে আর কোনো যানজট চোখে পড়েনি। কারণ কোনাবাড়ি ও চন্দ্রা ত্রিমোড়ে যানবাহন আর থামছে না। গাজীপুরের দিক থেকে উত্তরবঙ্গের দিকে আবার উত্তরবঙ্গের দিক থেকে গাজীপুরের দিকে যে পরিবহনগুলো যাবে, তারা উড়ালসড়ক ব্যবহার করে চলে যাচ্ছে। কোথাও তাদের থামতে হচ্ছে না। অন্যদিকে যে পরিবহনগুলো উত্তরবঙ্গের দিক থেকে সাভারের নবীনগর হয়ে ঢাকা প্রবেশ করবে আবার ঢাকার দিক থেকে সাভারের নবীনগর হয়ে উত্তরবঙ্গের দিকে যাবে, তারা চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় উড়ালসড়কের নিচ দিয়ে চলে যাচ্ছে। ফলে কোনাবাড়ি ও চন্দ্রা চিমোড়ে চিরচেনা সেই যানজট দেখা যাচ্ছে না। উড়ালসড়ক ও সেতু খুলে দেওয়ায় যানজট মুক্ত এ মহাসড়ক। যদিও সংশ্লিষ্টদের দাবি, এবার ঈদেও এ মহাসড়ক দিয়ে নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরবে ঘরমুখো মানুষ। আর মাত্র কয়েক দিন পর পবিত্র ঈদুল আযহা। কিন্তু এ মহাসড়কের উপজেলার সফিপুর এলাকায় নতুন করে উড়াল সড়ক ও খাড়াজোড়া এলাকায় আন্ডারপাস নির্মাণ কাজ চলছে। অপরদিকে বৃষ্টির পানি জমে চলমান চারলেন উন্নয়নের কাজের স্থলে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এবার কোরবানী ঈদে যানজটের আশঙ্কা করছেন এখান দিয়ে চলাচলরত চলাচলকারীরা। তাদের দাবি, এসব সমস্যা রোধ করে মহাসড়কটি নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক করার।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ও সাউথ এশিয়া সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) প্রজেক্টের এক নম্বর প্যাকেজের প্রকল্প ব্যবস্থাপক শাহানা ফেরদৌস বলেন, ঈদযাত্রায় মানুষের দুর্ভোগ যেন না হয়, সে জন্য ঈদের এক সপ্তাহ আগে সড়কের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে। এছাড়া সড়কের ছোট-খাটো সংস্কার কাজ চলমান থাকবে। তবে এবার ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হবে।
সালনা (কোনাবাড়ি) হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান জানান, গত ঈদে উড়ালসড়ক সেতু খুলে দেওয়ার পর কোনাবাড়ি ও চন্দ্রা ত্রিমোড়ে আর কোনো যানজট নেই। তবে চারলেন কাজ চলমান থাকায় কিছু স্থানে যানবাহনের ধীরগতি হলেও এবার ঈদে যানজট পড়বে না। এছাড়া যেখানে গাড়ির ষ্টেশন আছে, সেখান ছাড়া আর কোথাও গাড়ি থামবে না। যানজট যাতে না লাগে এবং ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাতে দুর্ভোগ না হয়, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।