সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:৩৬ অপরাহ্ন

মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে বলাৎকারের অভিযোগ তুলে বিপাকে আ’লীগ নেতা!

লালমনিরহাট প্রতিনিধি:: লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম গুচ্ছগ্রামের ডাঙ্গাপাড়া তা’লীমুল ইসলাম নূরানী হাফেজিয়া ও কওমী মাদ্রাসার এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে বলাৎকারের চেষ্টা অভিযোগ তুলে চরম বিপাকে পড়েছেন আ’লীগের এক নেতা। অভিযোগ মিথ্যা হলে ফেঁসে যেতে পারেন সেই আ’লীগ নেতা। এই মিথ্যা অভিযোগের আড়ালে আরও কোন ঘটনা থাকতে পারে তা তথ্যানুসন্ধান চালাতে গিয়ে গভীর ষড়যন্ত্রের আভাস পেয়েছেন পুলিশ। ঘটনাটি প্রাথমিক তদন্তে এটি ষড়যন্ত্রমূলক বলে বুঝতে পেরেছেন পুলিশ, তাই তদন্তে থলের বিড়ালটি বেড়িয়ে আসছে বলেও জেনেছেন থানা পুলিশ।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, রমজান মাসে মাদ্রাসা খোলা থাকার সুযোগে দহগ্রামের ওই মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক(হুজুর) লিয়াকত আলীর বিরুদ্ধে ৮ বছরের এক শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগ উঠে। সত্যতা খুঁজতে গিয়ে মাদ্রাসার সুপারিন্টেনডেন্ট রবিউল ইসলাম মাসুম বাচ্ছাটাকে ভুট্টাক্ষেতে নিয়ে গিয়ে স্বীকারোক্তি আদায় করার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে ওই শিক্ষার্থীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে যখন কোন কাজ হয়নি তখন ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে হুমকি প্রদশর্ণ করা হয় বলে নিন্দার ঝড় উঠে। এ ঘটনার জের ধরে পরদিন গত ১মে বিকেলে দহগ্রাম গুচ্ছগ্রাম বাজারে মাদ্রাসার সভাপতি গোলাম রব্বানী’র উপরে হামলা করেন ওয়ার্ড আ’লীগ নেতা সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান ও তার লোকজন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়। গাছা সহিদুল নামে এক লোক গোলাম রব্বানীকে বাজারে থাকা স্ট্যান্ড সাইনবোর্ড তুলে আঘাত করতে গেলে নিজের মাথায় আঘাত পেয়ে রক্তাক্ত হোন সহিদুল। এরপর আব্দুল জলিল নামে আরেকজনের হামলার শিকার হোন রব্বানী। এ সময় আত্মরক্ষার্থে মাদ্রাসার সভাপতি গোলাম রব্বানী একটি দোকানে আশ্রয় নিয়ে কোন রকমে প্রাণে রক্ষা পান।

এরপর উভয়পক্ষের লোকজন পাটগ্রাম হাসপাতালে ভর্তি হলে ওই রাতে হাসপাতাল থেকে গোলাম রব্বানীকে বিচারের কথা বলে বাড়ী যেতে বলা হয়। অথচ হাসপাতালে থেকে যান খলিলের লোকজন। উপজেলা আ’লীগের কয়েকজন নেতা এ বিষয়ে প্রথমে হস্তক্ষেপ করলেও পরে বুঝতে পারেন এটি ষড়যন্ত্র। তাই পরিকল্পিত ভাবে বলাৎকারের অভিযোগ তুলে মারামারির এ ঘটনায় পরেরদিন বাদী হয়ে খলিলুর রহমান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। বিষয়টি নির্বাচন কেন্দ্রিক পূর্বশত্রুতা, একই এলাকায় খলিল নেতার চাচাতো ভাই আরিফ হুজুরের আরেকটি মহিলা মাদ্রাসা থাকায় এই মাদ্রাসাটি ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র ও রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব বলেই প্রতিয়মান হওয়ায় থানা পুলিশ মামলাটি রেকর্ড হয়নি।

আ’লীগের প্রভাবশালী নেতা খলিলুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় কারও বিরুদ্ধে কোন ষড়যন্ত্র নেই।

অপরদিকে, মাদ্রাসার সভাপতি গোলাম রব্বানী জানান, এটা রাজনৈতিক শত্রুতা ছাড়া কিছুই নয়। ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাকে পরিকল্পিতভাবে হয়রানী করা ছাড়া আর কিছুই নয়।

পাটগ্রাম থানা ওসি সুমন কুমার মহন্ত জানান, অভিযোগ পেয়ে জিডিমূলে তদন্ত করা হয়েছে। তবে এটি মামলা করার মত বিষয় নয়। ঈদ মাত্র শেষ হলো। দুই একদিন পরে বিষয়টি মীমাংসার কথা বলেছেন দহগ্রাম ইউনিয়ন আ’লীগ সভাপতি সাফিউল ইসলাম বাবলু ও সাধারণ সম্পাদক সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান।

উল্লেখ্য, মূল অভিযুক্ত লিয়াকত হুজুরের নাম মামলার অভিযোগে নেই। আ’লীগ নেতা খলিলুর রহমান বাদীর অভিযোগে আসামীর তালিকায় আছেন-রবিউল হুজুর, গোলাম রব্বানি, মোঃ মগরুব আলী হাজী, আঃ জলিল হাজী, জহির উদ্দিন, আব্দুর রাজ্জাক ও অজ্ঞাত আরও ১০/১২ জন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com