মাঘের জারোত হামরাগুলা মরি যাবার নাইগছে বাহে

editor
1. ২৯ জানুয়ারী, ২০২২ / ৩৩১ জন দেখেছেন

লালমনিরহাট প্রতিনিধি:: ‘জারোত হামরাগুলা মরি যাবার নাইগছে বাহে। মাঘের জারোত হামরাগুলা কাহেল হয়া পড়ছি। জারের ঠ্যালায় ঘর থাকি বাইরোত বেরবার পাবার নাগছোং না। জমিত যাওয়া নাইগবে, রোয়া গারা নাইগবে। বুধবার রাইত থাকি এমন হাড়-কাঁপনি জার পড়ছে। শীতোত সোককিছু ঢাকি আছে, কিছুই দ্যাখা যায় না।’

শনিবার (২৯ জানুয়ারী) বিকেলে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের চাঁপারতল গ্রামের সামাদ মিয়া।

‘মাঘের জারে বাঘ কান্দে’ রংপুর অঞ্চলের এই প্রবাদ বাক্যটি যেন সত্যি হয়ে দাঁড়িয়েছে উত্তরের সীমান্তবর্তী লালমনিরহাট জেলার মানুষের জন্য। মাঘের মাঝামাঝিতে এসে এই এলাকায় শীতের প্রকোপ বেড়েছে। তীব্র শীত ও কনকনে বাতাসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। এরসঙ্গে যুক্ত হয়েছে ঘন কুয়াশা। এ অবস্থায় জরুরী প্রয়োজন ছাড়া লোকজন বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন না। কিন্তু, খেটে খাওয়া মানুষের কথা ভিন্ন। সংসার চালাতে এই কনকনে শীত উপেক্ষা করে কাজের সন্ধানে বের হতে হচ্ছে তাদের।

একই গ্রামের সোলেমান আলী (৫০) বলেন, ‘জারের ঠ্যালায় ঘর থাকি বাইরোত যাবারে মন চাবার নাইগছে না। কাজ না করিয়াও কোনো উপায় নাই। কাজের ঠ্যালাত পরি ঘর থাকি বাইরাত যাওয়ায় নাইগছে। জারোত খুব কষ্ট নাইগছে। জমিত কাজ না করলে কাই খাবার দিবো। বউ ছওয়া নিয়া তাক হইলে উপাস থাকা নাইগবে।’
লালমনিরহাট সদর উপজেলার উত্তর সাপ্টানা গ্রামের কান্দ্রি বালা (৫৮) জানান, কয়েকদিন আগেও তেমন ঠান্ডা ছিলো না। বুধবার রাত থেকে হঠাৎ ঠান্ডা বাড়তে থাকে। এমন ঠান্ডা পড়েছে এতে তাদের জীবনযাপন কষ্টকর হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘জারের ঠ্যালাত হামরাগুলা জাইবরা টাইবরায় আগুন দিয়া গাও গরম কইরবার নাগছি। আগুন না তাপাইলে হামরাগুলা জারোত কাবু হয়া যামো। এ বছরোত এমন জার দেখাং নাই। খুব জার নাইগবার নাইগছে ভাই’।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের তাপমাত্রা রেকর্ড কিপার আনিছুর রহমান শনিবার দুপুরে বলেন, ‘বুধবার থেকে কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি থেকে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। কনকনে ঠান্ডার সঙ্গে আছে হিমেল বাতাস ও ঘন কুয়াশা।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে উপপরিচালক শামিম আশরাফ বলেন, ‘চলমান শীত আগামী ২-৩ দিন থাকলে কৃষিতে ক্ষতি হতে পারে। বোরো বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। শীতে কৃষক ও কৃষি শ্রমিকরা ঠিকমতো কাজ করতে না পারায় বোরো ধানের চারা রোপণ বিলম্বিত হতে পারে। বিশেষ করে সবজির ক্ষতির সম্ভাবনা বেশি।’

সংবাদটি শেয়ার করুন