বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:১০ অপরাহ্ন

ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিজেই রুগী!

ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরের সামনের গেট।

ভোলাহাট (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি:: চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার সোয়া লাখ মানুষের একমাত্র চিকিৎসা সেবার কেন্দ্রবিন্দু “ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স” এখন নিজেই রুগী! হাসপাতালটির ডাক্তার সঙ্কটের পাশাপাশি জনবল না থাকায় বিভিন্ন রুগীরা পড়েছে চরম বেকায়দায়। জরুরী ভিত্তিতে ডাক্তারসহ অন্যান্য জনগুরুত্বপূর্ণ পদে লোকবল না দিলে স্বাস্থ্যসেবা চরম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন সচেতনমহল ও এলাকাবাসী।

সরেজমিনে ঘুরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জানা গেছে, ভোলাহাট উপজেলার লক্ষাধিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার একমাত্র প্রতিষ্ঠান “ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স”। প্রতিষ্ঠানটিতে দীর্ঘদিন ধরে পর্যাপ্ত ডাক্তার তো নেই, যারা কর্মরত আছেন, তাদের ৫ জন। বিভিন্ন রোগের চিকিৎসাসেবা দেয়ার ডাক্তার ১৩ জন থাকার কথা ছিল। ডাক্তারগণ বেশীরভাগই অফিসে যোগদান করে বিভিন্ন স্থানের ক্লিনিকে চিকিৎসাসেবা দিয়ে মাস শেষে বেতন ভাতা যথারীতি তোলে থাকেন বলে প্রত্যক্ষ করা গেছে।

জানা গেছে, ৫০ শয্যার হাসপাতালে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসাসেবা দেয়ার জন্য ১৩ জন ডাক্তার থাকার কথা নিয়মানুযায়ী। সেখানে অতিরিক্ত দায়িত্বে নিয়োজিত গোমস্তাপুর উপজেলায় কর্মরত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাঃ মোঃ আব্দুল হামিদ সপ্তাহে দু’দিন সোম ও বুধবার অফিস করেন। বাকী ডাক্তারদের মধ্যে আরএমও, চক্ষু, মেডিসিন, গাইনী, নাক-কান গলা, চর্ম ইত্যাদিসহ প্রায় ডাক্তার নেই বললেই চলে।

সরেজমিনে আরো জানা গেছে, চিকিৎসাসেবা নিতে আসা ষাটোর্ধ্ব আব্দুস সামাদ জানান, আমি আজ বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বেলা ১টায় আমার ছেলে সামউল (৪২)কে বেলা ১১টায় মাঠে ধানের জমিতে বিষ দিতে গেলে হঠাৎ সাঁপে কামড় দেয়। আমি দ্রুতবেগে ভ্যানযোগে হাসপাতালে আনলে কর্তব্যরত জরুরী বিভাগের ডাক্তার ভ্যাকশিন নেই বলে রোগীকে রাজশাহী নিয়ে যেতে বলে। রোগীর অবস্থা বেগতিক ও মুখ দিয়ে রক্ত উঠতে থাকা অবস্থায় মাইক্রো ভাড়া করে রাজশাহী পাঠাই। এমনকি হাসপাতালে থাকা এ্যাম্বুলেন্সের কথা বললে তেলের অভাবে এ্যাম্বুলেন্স চলাচল বন্ধ আছে জানান।

হাসপাতালের অতিরিক্ত দায়িত্বে নিয়োজিত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাঃ মোঃ আব্দুল হামিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, হাসপাতালে সাঁপে কাটা রোগীর ভ্যাকশিন থাকার কথা বলেন। এ্যাম্বুলেন্সের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ্যাস্বুলেন্সের তেল যে ডিপোতে লোড করে সেখানে ১২ লক্ষাধিক টাকার বাকী হলে ডিপো কর্তৃপক্ষ তেল দেওয়া বন্ধ করার কারণে এ্যাম্বুলেন্স চলাচল বন্ধ রয়েছে বলে তিনি জানান।

হাসপাতালটি বর্তমানে কোন মতে জোড়াতালি দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে দপ্তরের কার্যক্রম। সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষেরও নজর নেই বললেই চলে। দেখার কেউই নেই! জরুরী ভিত্তিতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসারসহ বিভিন্ন রোগের ডাক্তার না দিলে চিকিৎসাসেবা ভেস্তে যাবে বলে গুঞ্জন উঠেছে। সেই সাথে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুনজর দেয়ার জোড়ালো দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও সচেতন মহল।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com