বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:১৯ অপরাহ্ন

বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপরে তিস্তার পানি, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, লালমনিরহাট থেকে:: উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এতে করে প্লাবিত হয়েছে তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়ি। বিপাকে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ।

সোমবার (১৪ আগস্ট) ভোর ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)।

জানা গেছে, রোববার রাত থেকে ভারতের গজলডোবা ব্যারেজের সবগুলো গেট খুলে দেওয়ায় প্রবল বেগে পানি আসতে শুরু করে। পানি বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশের তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি গেটের সবগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। তীব্র স্রোতে ব্যারেজ সংলগ্ন তিস্তা নদীর নিম্নাঞ্চলের কমপক্ষে ৩০ গ্রামে পানি প্রবেশ করে ঘরবাড়ি ৩ থেকে ৪ ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ২০ হাজার মানুষ।

এদিকে, লালমনিরহাটের তিস্তার দোয়ানী ব্যারেজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। সে কারণে দুর্গম চরাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রংপুর গংগাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী, নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার কালিগঞ্জ, ঝাড়সিংহেশ্বর, খগারচর, জুয়ার চর, বাংলাপাড়া, উত্তর খড়িবাড়ী, বাইশপুকুর ও জলঢাকা উপজেলার ফরেস্টের চর, ভাবনচুর, ডাউয়াবাড়ী, লালমনিরহাটের পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ফকিরপাড়া, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ি, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর খুনিয়াগাছ, রাজপুর এবং গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে।

ডিমলা উপজেলার ছোটখাতা গ্রামের আফজাল হোসেন বলেন, তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে বাড়ি ঘরে পানি প্রবেশ করেছে। গরু- ছাগল, হাঁস-মুরগি ও ছোট বাচ্চাদের নিয়ে বিপদে আছি। খালিশ চাপানী ইউনিয়নের মুন্সিপাড়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম বলেন, নদীর পানি বেড়েছে অনেক। ঘরে পানি ঢুকে থাকার মতো অবস্থা নাই। রাতে ঘুমাতে পারিনি।

ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, চরাঞ্চলের মানুষকে নিরাপদে সরে যেতে বলেছি। রাতে পানি বেড়ে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। পানিবন্দিদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে কাজ করছি আমরা।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. রাশেদীন বলেন, আগে থেকেই পানি বাড়ার পূর্বাভাস ছিল। রাত থেকে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। কোথাও কোনো সমস্যা হলে, বাধ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা মোকাবিলায় পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রস্তুত আছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com