বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ০৬:০৭ অপরাহ্ন

বাঘায় পেরিলার প্রথম চাষেই সফলতার স্বপ্ন কৃষকের

বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি:: রাজশাহীর বাঘায় এই প্রথম পেরিলা (ভোজ্য তেল) চাষ হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্দ্যোগে ৩ বিঘা জমিতে পেরিলা চাষ হয়েছে। ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণে উপজেলার মনিগ্রাম ইউনিয়নের হেলালপুর ও পাকুড়িয়া ইউনিয়নের কিশোরপুর গ্রামে পরীক্ষা মূলক পেরিলা চাষাবাদ করা হয়েছে। জমিতে গাছ ও লতা পাতা দেখে আবাদে সফলতা আসবে বলে আশা করছেন কৃষকরা। এছাড়াও অন্য কৃষকদের মধ্যেও পেরিলা চাষের আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। অল্প পরিশ্রমে কম খরচে পতিত জমিতে পেরিলা চাষাবাদ লাভজনক বলে জানায় কৃষি অধিদপ্তর।

‘উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণে দেশের ১৭টি জেলায় প্রথম পেরিলার চাষাবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে বাঘা উপজেলাতেও এর চাষ করা হয়েছে। তিনি বলেন, খরিফ-২ মৌসূমে সাধারণত আম বাগানসহ বিভিন্ন ফল বাগান পতিত থাকে। যেখানে সাধারণত পানি জমে না এবং হালকা ছায়া পড়ে এমন জমিতে সহজেই পেরিলা চাষাবাদ করা যায়। মাত্র তিন মাসে এই ফসল ঘরে তুলে রবি ফসলে যেতে পারবেন কৃষকরা। যা হলো- জুলাই মাসে বীজতলায় বীজ বপণ করে ২৫-৩০ দিনের চারা মূল জমিতে রোপণ করতে হয়। তা হলো-আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে। পেরিলার পুষ্টি গুণ সম্পর্কে এই কৃষি কর্মকর্তা বলেন, সাউ পেরিলা-১ নামের নতুন জাতের এই পেরিলা ভোজ্য তৈল দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, জাপান, ভারত সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভোজ্য তেল হিসাবে ব্যবহার হয়। পেরিলা তেলের প্রধান বৈশিষ্ট্য উচ্চমাত্রায় ৫১% ওমেগা-৩ এবং ফ্যাটি এসিড বা লিনোলিনিক এসিড সমৃদ্ধ এবং ২২% লিনোলিক এসিড বা ওমেগা-৬ ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ। এটি ক্ষতিকারক ইউরেসিক এসিড মুক্ত (০%)ও ৯২% অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড। হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকরী।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ কামরুল ইসলাম বলেন, পেরিলা সাধারণত বীজতলায় থেকে সংগ্রহ পর্যন্ত প্রায় ৯০ থেকে ১০০ দিন সময় লাগে। খুবই কম পরিমাণ সার লাগে। রোগ বালাই নাই বললেই চলে। বিঘা প্রতি মাত্র ৩-৪ হাজার টাকা উৎপাদন খরচ হয়। বিঘায় প্রায় ৪ মণের মত ফলন পাওয়া যাবে। যার বাজারমূল্য প্রায় ২০ হাজার টাকা। পেরিলা চাষের জমি থেকে মৌ বাক্স স্থাপন করে মধু আহরণও সম্ভব। তাছাড়া, কচি পেরিলার পাতা শাক হিসেবে খাওয়া যায় এবং পেরিলার পাতার চা বানানো যায়।

সরেজমিন পরিদর্শন কালে দেখা যায়, পেরিলার জমিতে মৌমাছির আনাগোনা। সেখানে কথা হয়, কিশোরপুর ও হেলালপুরের পেরিলা চাষী সাজদার রহমান ও সোহেল রানার সাথে। তারা বলেন, যেখানে পেরিলা আবাদ করেছি,আগে সেই জমি খালিই পড়ে থাকতো। কৃষি অফিসের সহযোগিতায় প্রথম বারের মত আবাদ করেছি। কৃষিবিদ স্যাররা পেরিলা আবাদি জমি পরিদর্শনে এসে কখন কি করতে হবে পরামর্শ দেন। আর কয়েকদিন পর আবাদি ফসল ঘরে তুলবো। আশা করছি ভালো ফলন পাবো। পতিত জমিতে আমাদের ফসল দেখে অন্যরাও আগ্রহী হচ্ছেন বলে জানান তারা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com