শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:৫৮ পূর্বাহ্ন
মুজিবুর রহমান বাবু, ই-কণ্ঠটোয়েন্টিফোর ডটকম ॥ নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে বুধবার ৭ সেপ্টেম্বর মালদ্বীপকে ৩-০ গোলে হারায় বাংলাদেশ। জোড়া গোল করেন আক্রমণভাগের সেরা তারকা সাবিনা। অন্য গোলটি মাসুরা পারভীনের। ফুটবলে বুধবার ৭ সেপ্টেম্বর রঙিন দিন পার করেছে বাংলাদেশ। দুটোই সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে।
একটি মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। আরেকটি ছেলেদের সাফ অনুর্ধ-১৭ চ্যাম্পিয়নশিপ। মজার বিষয় হচ্ছে, দুটো আসরেই বাংলাদেশ হারিয়েছে মালদ্বীপকে। নেপালে আজ দুর্দান্ত এক জয় দিয়ে মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়ন শুরু করেছে বাংলাদেশ দল। টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ৩-০ গোলে হারিয়েছে মালদ্বীপকে। ম্যাচে জোড়া গোল করেছেন সাবিনা খাতুন। ১টি গোল মাসুরা পারভীনের।
প্রতিপক্ষ মালদ্বীপ বলেই জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিল বাংলাদেশ। এর আগে দেখা হওয়া সাফের দুটি আসরেই মালদ্বীপকে হারিয়েছিলেন সাবিনারা। প্রতিটি ম্যাচেই দুটি করে গোল করেছিলেন বাংলাদেশের ‘গোলমেশিন’ সাবিনা। এ ছাড়া মালদ্বীপের ঘরোয়া ফুটবলে চার মৌসুম খেলার সুবাদে প্রতিপক্ষ দলটাকে বেশ চেনা তাঁর। ম্যাচের ১০ মিনিটের মধ্যে যখন মনিকা চাকমা, কৃষ্ণা রানী সরকাররা সহজ কয়েকটি গোলের সুযোগ নষ্ট করলেন, তখন ত্রাতার ভূমিকায় এগিয়ে এলেন সাবিনা।
শুরু থেকে আক্রমণাত্মক খেলা বাংলাদেশের সঙ্গে গতিতে স্কিলে বেশ পিছিয়েই ছিল মালদ্বীপের মেয়েরা। বেশির ভাগ সময় বল ঘুরেছে মালদ্বীপের অর্ধে। বাংলাদেশের গোলরক্ষক রুপনা চাকমাকে কখনোই কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়তে হয়নি।
ম্যাচের ৩১ মিনিটে সাবিনার বাড়িয়ে দেওয়া বলে কৃষ্ণা গোল করতে পারেননি। তাঁর শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। অথচ সামনে তখন মালদ্বীপের গোলরক্ষক আমিনাথ লিজা একাই! ঠিক পরের মিনিটে প্রায় ৪০ গজ দূর থেকে নেওয়া সাবিনার আগুনের গোলা শট জড়ায় জালে।
৩৪ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মাসুরা পারভীন। মনিকার বাড়িয়ে দেওয়া বলটি ধরতে গিয়ে বক্সের মধ্যে পড়ে যান কৃষ্ণা। তবে পাশেই দাঁড়ানো মাসুরার আলতো টোকায় স্কোর হয় ২-০। দুই মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল খেয়ে রীতিমতো দিশেহারা হয়ে পড়ে মালদ্বীপ। এরপর ৪০ মিনিটে মারিয়ার নেওয়া শট মালদ্বীপের গোলরক্ষক লিজার হাত ফসকে বেরিয়ে যায়। সুযোগসন্ধানী সাবিনা গোল করতে ভুল করেননি। এ পর্যন্ত ৬টি সাফের আসরে সব মিলিয়ে সাবিনার গোলসংখ্যা মোট ১৬।
দ্বিতীয়ার্ধে মালদ্বীপ খেলেছে রক্ষণাত্মক ফুটবল। তারপরও গোলের চেষ্টায় মরিয়া ছিলেন বাংলাদেশের মেয়েরা। কোচ গোলাম রব্বানী বদলি হিসেবে খেলিয়েছেন তহুরা খাতুন, সাজেদা খাতুন, ঋতুপর্ণা চাকমাদের মতো গতিময় ফুটবলারদের। কিন্তু তারপরও আর কোনো গোল পায়নি বাংলাদেশ। এর আগে দিনের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তান। ৩-০ গোলে হেরে আট বছর পর আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফেরাটা মোটেও সুখের হয়নি পাকিস্তানের মেয়েদের। ১টি করে গোল করেছেন দাংমেয় গ্রেস ও সৌম্যা গুগুলোথ। অন্য গোলটি আত্মঘাতী। ১০ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের বিপক্ষে গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবেন বাংলাদেশের মেয়েরা।
তবে মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ মানেই ভারতের একতরফা শ্রেষ্ঠত্ব। এখন পর্যন্ত হওয়া পাঁচটি আসরেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে দেশটির মেয়েরা। কিছুদিন আগে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা ভারতকে নিষিদ্ধ করার পর এবারের সাফে বাংলাদেশের শিরোপা জয়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়। কিন্তু কিছুদিন বাদেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ষষ্ঠ সাফেও খেলছে ভারত। যে কারণে প্রথমবার ট্রফি জিততে হলে নিজেদের সেরাটাই নিংড়ে দিতে হবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের। এর আগে পাঁচবার হওয়া মেয়েদের সাফে মাত্র একবার ফাইনাল খেলেছে বাংলাদেশ। তিনবার বিদায় নিয়েছে সেমিফাইনাল থেকে।