বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:০৪ পূর্বাহ্ন
লালমনিরহাট প্রতিনিধি:: বিজিবি কর্তৃক আটক দুই ভারতীয়কে ছেড়ে দেয়ার একদিন পরেই লালমনিরহাট সীমান্তে রফিকুল ইসলাম টেরে (৪০) নামের এক বাংলাদেশি যুবককে গুলি করে হত্যা করলো ভারতীয় দুর্বৃত্তরা।
শুক্রবার (৭ জুলাই) বিকেলে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের সীমান্তঘেসা গ্রাম কুমারটারী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রফিকুল ইসলাম টেরে দুর্গাপুর ইউনিয়নের পুর্ব দীঘলটারী এলাকার মৃত হায়দার আলীর ছেলে।
এলাকাবাসী জানায়, রফিকুল ইসলাম টেরে তাদের নিজস্ব পাট ক্ষেত দেখতে সীমান্তবর্তী কুমারটারী এলাকায় ভারতীয় সীমান্তের ৯২৭ নং পিলারের কাছে যায়। এসময় রফিকুলের দুই বন্ধু রবিউল ও সোহেল তার সাথে ছিল। পরে ভারতীয় সীমান্তের নগরটারী গ্রামের লোকজন তাদের আটক করে মারপিট করে এবং রফিকুলকে গুলি করে। এ সময় রবিউল ইসলামকে গুরুতর আহত করে জাড়িধরলা নদীতে ভাসিয়ে দেয়। পরে রফিকুলের পরিবার দুজনকে উদ্ধার করে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ও বিজিবি ঘটনাস্থলে এসে রফিকুলের মরদেহ উদ্ধার করে আদিতমারী থানায় নিয়ে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মোগলহাটের দিঘলটারী এলাকার একাধিক লোকজন জানান, বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) দুই ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিব)র সদস্যরা আটক করার পরেও তাদের দুজনকেই ভারতে পুশ ব্যাক করে। ভারতীয় যে দুজনকে বিজিবি আটক করেছিল তারা দুজনেই প্রফেশনাল খুনি। দুর্গাপুর সীমান্তের কিছু মানুষ ভারত থেকে তাদের ভাড়া করে নিয়ে এসে এখানে হত্যাকান্ড ঘটায়। ঈদের আগেও এখানে একটি হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছিল।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মোজাম্মেল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ভারতীয় সীমান্তের ৯২৭ নং পিলারের কাছ থেকে ওই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে।
তবে এ ঘটনায় ১৫ বিজিবির ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল আহমেদ বজলুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রফিকুল ইসলাম টেরে নামে যে ব্যাক্তিকে গুলি করে মারা হয়েছে সেখানে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের কোন হাত নেই। শুক্রবার দুপুরের দিকে রফিকুলের দুই বন্ধু সোহেল ও রবিউল বাংলাদেশ সীমান্তে তাদের পাট ক্ষেতে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরে গুলির শব্দ শুনতে পায় পার্শ্ববর্তী এক বৃদ্ধ। পরে পাট ক্ষেত হতে ওই দুই বন্ধু বের হয়ে ওই বৃদ্ধকে বলে চাচা রফিকুলকে ভারতীয় লোকজন গুলি করেছে একে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে। এ কথা বলার পরপরই তিনজনই রফিকুলের লাশ ভেলায় করে নিয়ে আসে।
তিনি আরো বলেন, যদি ভারতীয় বিএসএফ রফিকুলকে মারে তাহলে সোহেল ও রবিউলকে মারল না? এ হত্যার সাথে টেরে বন্ধু রবিউল ও সোহেলের হাত থাকতে পারে। আগামীকাল ভারতের পঞ্চায়েত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। হয়তো সীমান্ত হত্যা চালিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এজন্য এই হত্যাকান্ড ঘটতে পারে। পুলিশ ওই দুইজনকে খুঁজতেছে তাদেরকে ধরতে পারলেই হত্যাকান্ডের সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে।