শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৩৪ পূর্বাহ্ন
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: প্রচন্ড গরমে দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে ঠাকুরগাঁওয়ের জনজীবন। টানা ভ্যাপসা গরম আর অনাবৃষ্টির কারণে মানুষের প্রাণ প্রায় ওষ্ঠাগত। গরম বাতাস শরীরে লাগছে আগুনের হলকার মতো। ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই! শিশুরা ছাড়াও গরমে সবচেয়ে বেশি কাবু হয়ে পড়ছেন বৃদ্ধরা।
গরমের সঙ্গে পাল¬া দিয়ে শুরু হয়েছে অসহনীয় লোডশেডিং। তীব্র গরম আর অসহনীয় তাপমাত্রার কারণে দিনের বেলায় শহরে লোকজনের চলাচল অন্য সময়ের চেয়ে অনেকটাই কম।
কর্মজীবী মানুষ বাইরে বের হলেই অতিরিক্ত ঘামে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন। ক্লান্তি দূর করতে কেউ পান করছেন ডাবের পানি, কেউবা খাচ্ছেন শসা, ক্ষীরা। তাই প্রচন্ড গরমে আনারস, ঠান্ডা পানীয় আর ডাবের পানি বিক্রি বেড়ে গেছে বহুগুন। লাচ্ছি জুস আর কোমল পানীয়ের ব্যবসাও বেশ জমজমাট।
ঠাকুরগাঁও শহরের মোড়ে মোড়ে ঠান্ডা পানির লেবুর শরবত, আনারস বিক্রি করছেন নিম্নবিত্ত মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। পিপাসায় কাতর মানুষ রাস্তার ধারের এসব খাবার খেয়ে আবার অসুস্থও হয়ে পড়ছেন কেউ কেউ। গরমে এর সাথে যোগ হয়েছে ডায়রিয়া। হাসপাতালে প্রতিদিন বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আলতাফ হোসেন জানান, আগামী তিন-চার দিনে তেমন একটা বৃষ্টির দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা কম। এমনকি তাপমাত্রা আরো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাই বেশি। সোমবার ঠাকুরগাঁও জেলায় তাপমাত্রা ছিল ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়াও কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ার কারণেই তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। বৃষ্টি হলেই গরম কমে যাবে।
এদিকে অতিরিক্ত গরমের কারণে সর্দি-কাশি, জ্বর, ডায়রিয়া হচ্ছে। এমন অবস্থা যে, ঘরে ঘরে জ্বরের রোগী পাওয়া যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। প্রতিদিনই হাসপাতালগুলোতে পানিবাহিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা: শাহজাহান নেওয়াজ বলেন, ঘরের পরিবেশ যতটা সম্ভব ঠান্ডা রাখা গেলে ডায়রিয়া ও শ্বাসজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কম থাকবে। এ ছাড়া গরমে শিশুদের বেশ সাবধানে রাখতে হবে। রোদে যাতে বেশি ঘোরাঘুরি না করে তা দেখতে হবে। ঘেমে গেলে শরীর মুছে দিতে হবে। অধিক ঠান্ডা পানির পরিবর্তে স্বাভাবিক তাপমাত্রার অথবা হালকা ঠান্ডা পানি পান করতে হবে। পাশাপাশি সুতির হালকা কাপড় পরতে হবে।
ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডাঃ আবু মো: খায়রুল কবির প্রচন্ড এই গরমে সবাইকে প্রচুর পানি ও খাওয়ার স্যালাইন গ্রহণের পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘সুস্থ থাকতে হলে রাস্তার ধারে ফুটপাতে খোলা জায়গায় বিক্রি করা শসা, আখের রস, আনারস, লেবুব শরবতসহ সব ধরনের খোলা পানীয় পান থেকে বিরত থাকতে হবে। গরমে বাইরের খাবার খাওয়া একেবারেই উচিত নয়।’