বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫, ১২:২৮ অপরাহ্ন

পৌরসভায় ১৩ বছরেও হয়নি ডাম্পিং ষ্টেশন

কলাপাড়া (কুয়াকাটা) প্রতিনিধি:: প্রাকৃতিক সুন্দর্যের লীলাভূমি কুয়াকাটা। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত। কুয়াকাটা দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র সৈকত যেখান থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দুটোই দেখা যায়। সে এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য- যা দেখার জন্য প্রতিদিন এখানে ভিড় জমায় দেশ-বিদেশের অসংখ্য পর্যটক।

২০১০ সালের পৌরসভা নির্মিত হলেও বর্জ্য ফেলার ডাম্পিং ষ্টেশন না থাকায় বর্জ্য ফেলা হচ্ছে যেখানে সেখানে। এতে দিন দিন রোগ জীবাণু ছড়াচ্ছে। ময়লা আবর্জনার কারনে শহরের মশা, মাছি ও দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ পৌরবাসী। এতে এলাকায় স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

দেশের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান পটুয়াখালীর কুয়াকাটাকে ১৯৯৮ সালে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সারা বিশ্বের পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কুয়াকাটা। কুয়াকাটার জিরো পয়েন্টের পাশে যেখানে-সেখানে ফেলা হচ্ছে খাবার হোটেলের বর্জ্য। দীর্ঘদিন ধরে খাবার হোটেলের পচাঁবাসি খাবারসহ সব ধরণের বর্জ্য পচে বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ফলে দুর্গন্ধে অতিষ্ট ব্যবসায়ী, পর্যটক ও স্থানীয়রা। এতে ব্যাপক সম্ভাবনাময় এ পর্যটন কেন্দ্রটির পরিবেশ মারাত্মক বিপর্যের মুখে পড়েছে। দেখ-ভালোর দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবী করেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।

হোটেলের এসব বর্জ্য ফেলার কারণে বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে মারাত্মক বিপর্যেয় মুখে পড়েছে সেখানকার পরিবেশ। চরম ভোগান্তিতে পড়েছে কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা দূর দূরান্তের ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকসহ স্থানীয়রা।

হোসেনপাড়া এলাকার সাইফুল, আশরাফুল ও চান মিয়াসহ অনেকে বলেন, পৌরসভা হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত কোনো মেয়রই আবর্জনা ফেলার জায়গা তৈরি করেননি। তাই ফাঁকা জায়গা, রাস্তা ও স্কুল-কলেজের পাশ দিয়ে ময়লা ফেলার কারণে দুর্গন্ধ হয়। এতে পথচারীরা চরম সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। রাস্তার দুই পাশে কুয়াকাটা পৌরসভা এলাকার আবাসিক ও হোটেল মোটেলের সব ধরণের বর্জ্য ফেলছে।

পৌর এলাকার বাসিন্দা বেলী খাতুন ও আছমা বেগম জানান, মানুষ ময়লা ফেলার জায়গা খুঁজে না পাওয়ায় যেখানে সেখানে ময়লা ফেলে। পৌরসভার এই ময়লাগুলোকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখার কারণে বাতাসে আশাপাশের বাড়িতে দুর্গন্ধে থাকা যায় না।

কুয়াকাটা পৌরসভার আবর্জনা পোড়ানোর দায়িত্বে থাকা ফারুক হোসেন জানান, ময়লা রাস্তার দুই পাশে ফেলার পর পেট্রোল দিয়ে পোড়ানো হয়।

বগুড়া থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক ইয়াসিন আহমেদ বলেন, এখানে বসে চা-পান করার মতো কোন অবস্থা নেই। দুর্গন্ধে এখানে দাড়াঁনোই তো যাচ্ছে না। খাবার হোটেলগুলো যে পরিবেশে রান্না করে তা আগে দেখলে এখানে খাবার খেতাম না।

আরেক পর্যটক আরাফাত রহমান বলেন, এখানে খাবার হোটেলগুলো এতো নোংরা পরিবেশে খাবার তৈরী করে দেখে আমি হতবাক হয়েছি। এই খাবার হোটেলগুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ বলে মনে করছি।

উপজেলা সেনিটারী ইন্সপেক্টর মিনাল চন্দ্র দেবনাথ বলেন, আমরা অল্প কয়েক দিন আগেই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরী এবং যত্রতত্র ময়লা ফেলার কারণে মোবাইল কোট পরিচালনা করে আসছি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কুয়াকাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদার জানায়, কুয়াকাটা পৌরসভা ময়লা- আবর্জনার ডাম্পিং ষ্টেশনের জন্য এখন ও জমি কিনতে পারেনি। বর্তমানে জমি ভাড়া করে এই জায়গা ময়লা-আবর্জনা পুরে ফেলা হয়। আমি যথা সাধ্য চেষ্টা করছি পৌরসভা যাতে ময়লা না হয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com