শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫, ১১:২৮ পূর্বাহ্ন
পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ চলতি বছরের সেপ্টেম্বরেই যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হতে যাচ্ছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের স্বপ্নের পায়রা সেতু। দৃষ্টিনন্দন এ সেতু নির্মাণে ব্যয় সাশ্রয় হচ্ছে প্রায় ৪৫ কোটি টাকা। যা অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সেতু চালু হলে দক্ষিণ অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি নিরবচ্ছিন্ন সড়ক ব্যবস্থায় নতুন মাত্রা যুক্ত হবে। ফেরিতে আসা-যাওয়ার ভোগান্তি দুই মাস পড়েই শেষ বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, নির্মাণাধীন পায়রা সেতুতে পদ্মা সেতু থেকেও ৫০ মিটার বড় দুটি স্প্যান বসানো হয়েছে। নান্দনিক এক্সট্রাডোজ ক্যাবল বক্স গার্ডার নদীর মধ্যে মূল সেতুর ৬৩০ মিটার। এজন্য ২০০ মিটারের দুটি স্প্যান ও দুপাশে দুটি স্প্যান ১১৫ মিটার নির্মাণ করা হয়েছে।
এক হাজার ৪৭০ মিটার (চার হাজার ৮২০ ফুট) দৈর্ঘ্যের ও ১৯ দশমিক ৭৬ মিটার (৬৪ দশমিক ৮ ফুট) প্রস্থের এক্সট্রা বক্স গার্ডার। সেতুটি উভয় দিকে সাত কিলোমিটার জুড়ে নির্মাণ করা হবে অ্যাপ্রোচ সড়ক।
এছাড়া নদীতে জোয়ারের সময় পায়রা সেতু ১৮.৩০ মিটার উঁচু থাকবে। এতে নদীতে বড় জাহাজ চলাচলে কোনো সমস্যা হবে না। সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে আলোকিত হবে সেতুটি। ২০১৬ সালের ২৪ জুলাই পায়রা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
বরিশাল-পটুয়াখালী রোডের ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালক মনির বলেন, সেতুটি যদি আগামী দুই মাসের মধ্যে চালু হয় তবে আমাদের চেয়ে বেশি খুশি আর কেউ হবে না। নদী পাড়ি দিতে আর কোনো ঝামেলা হবে না।
লেবুখালী ফেরিঘাট এলাকার ফরাজি হোটেলের ম্যানেজার মো. করিম বলেন, সেতুর কাজ চলার কারণে ভার্সিটি স্কয়ার থেকে ফেরিঘাট পর্যন্ত রাস্তার বেহাল দশা। গরমের সময় ধুলা ওড়ে। বর্ষায় হাঁটু পর্যন্ত কাদা-পানিতে ডুবে থাকে। কর্তৃপক্ষ মাঝে মধ্যে শুধু ইটের খোয়া ফেলে নিজেদের দায়িত্ব শেষ করে।
পায়রা সেতু প্রকল্প পরিচালক (পিডি) মোহাম্মদ আবদুল হালিম বলেন, মূল ব্রিজের ব্যয় এক হাজার ১৭০ কোটি টাকা চুক্তি রয়েছে। এখনও ব্যয়ের সম্পূর্ণ হিসাব করা হয়নি। আগামী দুই মাসের মধ্যে সব হিসাব করা হবে। কাজের ধরনে আমাদের এতো টাকার প্রয়োজন হবে না। এর চেয়ে অনেক টাকা সাশ্রয় হবে। আমার ধারণা এক হাজার ১২৫ থেকে এক হাজার ১৩০ কোটি টাকার মধ্যে ব্রিজের নির্মাণ ব্যয় সম্পূর্ণ হবে।
নির্মাণাধীন সেতুর কাজের জন্য ফেরিঘাট এলাকায় ভোগান্তির বিষয় তিনি বলেন, বরিশাল প্রান্তে কোনো ধরনের ভোগান্তি নেই। পটুয়াখালী অংশে কিছু ভোগান্তি রয়েছে। সেতুর ডেভেনশনগুলো নিচু আর কাজ যেহেতু চলমান সে ক্ষেত্রে ফেরিঘাটে একটু ভোগান্তি থাকবে। সাধারণের ভোগান্তির জন্য কর্তৃপক্ষ দুঃখিত। দুই মাস পরে সব ভোগান্তি দূর হবে বলেও জানান তিনি। যান চলাচল সচল রাখতে সেতুর দুই পাড়ে কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করছে। ঠিকাদার সে ধরনের নির্দেশনা সব সময় দেওয়া হচ্ছে। আমরা প্রতিদিন প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করি। যাতে কোথাও মানুষের ভোগান্তি পোহাতে না হয়।
স্বপ্নের পায়রা সেতুতে যানবাহন চলাচলের তারিখ সম্পর্কে তিনি বলেন, ইনশাআল্লাহ। সব কিছু ঠিক থাকলে অক্টোবরের আগে সেপ্টেম্বর মাসেই যানচলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।