সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:০০ অপরাহ্ন
রিপোর্টার, ই-কণ্ঠ টোয়েন্টিফোর ডটকম ॥ ৮ মে রবিবার পাপন জানালেন, দেশের স্বার্থে যখনই প্রয়োজন হবে টেস্টে খেলতে হবে মুস্তাফিজকে। এদিন টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হককে নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন তিনি। আলোচনা শেষে পাপন যা বের করেছেন তা হচ্ছে, এই মুহূর্তে ১০ দিন টেস্ট খেলার মানসিক দৃঢ়তা তৈরি হয়নি ক্রিকেটারদের। আর সে কারণেই সিরিজের প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ দল ভাল করতে পারলেও অধিকাংশ সময়ই দ্বিতীয় টেস্টে বিপর্যস্ত হয়। দক্ষিণ আফ্রিকায় সাম্প্রতিক ভরাডুবি নিয়ে যেমন চুলচেরা আলোচনা হয়েছে, তেমনি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আসন্ন টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশ দলের পরিকল্পনা নিয়েও পরামর্শ করেছেন তারা।
কোনো এক সংস্করণে মনোনিবেশ করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আরেকটি খারাপ হয়ে যায়। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) চায় সিনিয়র ক্রিকেটাররাও নিজে থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে নির্দিষ্ট সংস্করণে মনোনিবেশ করুক। যদি নিজে থেকে সরে না দাঁড়ায়, সব সংস্করণেই খেলতে চায়— তাহলে সেই সিদ্ধান্ত নেবে ক্রিকেট বোর্ড।
বেশ কিছুদিন ধরেই মুস্তাফিজুর রহমানের টেস্ট খেলার অনীহা নিয়ে তীব্র আলোচনা হচ্ছে। শনিবার টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করেছেন সেজন্য। আর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বেশ আগেই জানিয়েছিলেন প্রয়োজন হলেই এ বাঁহাতি পেসারকে টেস্ট খেলতে হবে এবং বোর্ডই নির্ধারণ করবে কে কখন কোন ফরমেটে খেলবে।
বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘অলরেডি তো রিয়াদ টেস্ট থেকে সরে আসছে, তামিম টি-টোয়েন্টি খেলছে না, মুশফিক এখনো খেলছে, বাট ওর চিন্তা-ভাবনা জানা যাবে, ও কি চিন্তা-ভাবনা করছে, আমরা জানতে পারবো।’ এমনটাই জানিয়েছেন ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। ৮ মে রবিবার কোচিং স্টাফ ও টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হকের সঙ্গে বৈঠকের পর গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এ কথা বলেন বিসিবি সভাপতি।
নিজ থেকেই টেস্ট ক্রিকেট ছেড়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তামিম ইকবাল খেলছেন না টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট। মুশফিকুর রহিম দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবেন বলে মনে করেন পাপন। সাকিব আল হাসানের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি তিনি। ক্রিকেটারদের সরে দাঁড়ানোর ব্যাপারে বোর্ড হস্তক্ষেপ করবে না। তাদের কষ্ট দিতেও চান না বলে জানান বিসিবি সভাপতি। সরতে হবে নিজ থেকে।
বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘আমাদের এই প্লেয়ারগুলোকে আমরা চাই না তারা মন খারাপ করে যাক, আমরা চাই তারা হাসিমুখে যাক। নিজেরা সিদ্ধান্ত নেক, যত তাড়াতাড়ি তারা নিজেদের সিদ্ধান্ত নিতে পারবে ততই ভালো। কিন্তু একটা সময় তো আসবে যদি সিদ্ধান্ত না নেয়, তখন আমাদেরকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমাদের বলতে আমি না, কোচিং স্টাফ, ম্যানেজমেন্ট, সবাইকে নিয়ে একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
এর পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে বিসিবি সভাপতির মন্তব্য, ক্রিকেটে একটা বিরাট পরিবর্তন আসছে। টি-টোয়েন্টিতে যদি আপনার মনোযোগ থাকে তাহলে আপনার অন্য একটা ফরম্যাটে মনোযোগ বা পারফরম্যান্স খারাপ হওয়া অস্বাভাবিক কিছু না। অনেক ভালো টেস্ট প্লেয়ার দেখবেন যারা টি-টোয়েন্টিতে মনোনিবেশ করছে টেস্টে তাদের পারফরম্যান্স হয়নি এবং তারা আস্তে আস্তে সরে আসছে। এটা খুবই ন্যাচরাল।’
প্রায় ১৬ বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের জার্সি পরে প্রতিনিধিত্ব করেছেন সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম। একটানা অপরিহার্য ক্রিকেটার হিসেবে খেলে যাওয়া এই সিনিয়ররা ইতোমধ্যেই সাকিব-মুশফিক ৩৫ ছুঁয়েছেন, ৩৩ পেরিয়েছেন তামিম। দীর্ঘদিন খেলার ধকল কাটাতে এখন তারা দুয়েকটি ফরমেট থেকে নিয়মিতই বিশ্রামে যাচ্ছেন।
এ বিষয়টাকে স্বাভাবিকভাবেই নিচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এই মুহূর্তে টি২০ থেকে সাময়িক বিরতি কাটাচ্ছেন তামিম, সাকিব নিয়মিতই টেস্ট ক্রিকেট থেকে বিশ্রাম নিচ্ছেন। তবে ব্যতিক্রম মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ আগেই টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন। কোন ফরমেট নিয়ে এই সিনিয়র ক্রিকেটারদের চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত থাকলে তা আগেভাগেই জানতে চায় বিসিবি। রবিবার এমন কথাই জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
সিনিয়রদের মধ্যে মুশফিক-সাকিব সব সংস্করণে খেলে থাকেন। তবে সাকিবকে পাওয়া যায় না সব সময়। তাই তার ব্যাপারে নির্দিষ্ট কিছু বলতে পারেননি বিসিবি সভাপতি।
সেই চ্যালেঞ্জ আবার বাংলাদেশ দলের সামনে। আগামী রবিবার থেকে শুরু শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ।