বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫, ০৮:০৮ অপরাহ্ন

পঞ্চগড়ে শীতের আমেজ শুরু

 পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে আগাম শীতের আমেজ শুরু হয়ে গেছে। এ জেলা থেকে হিমালয় অনেক কাছাকাছি হওয়ায় জেলাজুড়ে বইছে হিমেল হাওয়া। গত কয়েক দিন ধরে দিনের বেলা কিছুটা গরম অনুভূত গেলেও সন্ধ্যায় উত্তর দিক থেকে হিমালয়ের হিম বাতাস বইতে শুরু করে। মধ্যরাতের পর থেকে ভোররাত পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকে চারপাশ। দিন দিন কমে যাচ্ছে তাপমাত্রা। যা নভেম্বর মাসের শেষের দিকে আরও কমবে।

শনিবার (৬ নভেম্বর) সকালে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চলতি মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড। তবে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, টানা ১৩ দিন ধরে এই জেলায় সারাদেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে৷

জানা গেছে, গত কয়েক দিন ধরে জেলার ৫ উপজেলায় হিমেল হাওয়া আর শীত অনুভূত হচ্ছে। হিমালয়ের নিকটবর্তী হওয়ায় প্রতি বছরের ন্যায় এবারো নির্দিষ্ট সময়ের আগেই জেলায় শীতের আমেজ শুরু হয়েছে। কয়েকদিন ধরে সন্ধ্যার পর বইছে হিমেল হাওয়া। কুয়াশা আচ্ছন্ন ভোরে জমে থাকা শিশির বিন্দু জানান দিচ্ছে শীতের বার্তা। প্রতি বছর অন্যান্য জেলার তুলনায় এই জেলায় আগেভাগেই শীত অনুভূত হওয়ায় জেলার খেটে খাওয়া ও দরিদ্র মানুষেরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।

আবহাওয়া অফিস বলছে, গত এক মাসে জেলার তাপমাত্রা ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৪ ডিগ্রির ঘরে নেমেছে। তবে নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি বা শেষ দিকে তাপমাত্রা নিম্ন ও তীব্র শীত অনুভূত হবে। হিমালয়ের হিম বাতাস প্রবাহিত হওয়ার কারণে প্রতি বছর জেলায় কনকনে শীত অনুভূত হয় যা দীর্ঘ সময় ধরে থাকে। শুধু তাই নয় বছরের শীত মৌসুমে এ জেলায় দীর্ঘ সময় ধরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করে।

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নের পাথর উত্তোলন শ্রমিক আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন, শীতকাল আসলে আমাদের দুর্ভোগ বাড়ে। আমরা সারাদিন নদীতে নেমে পাথর ও বালু উত্তোলন করি। শীতে আমরা কাজ করতে পারি না। গত কয়েক দিন ধরে শীত অনুভূত হওয়ার কারণে আমরা চরম বিপাকে পড়েছি। আগে সকাল সকাল নদীতে নামলেও কয়েক দিন ধরে সূর্যের আলোর দেখার পর নামতে হচ্ছে।

একই কথা বলেন জেলা শহরের ভ্যানচালক শাহ আলম। তিনি বলেন, আমরা গরিব মানুষ। কয়েক দিন ধরে সন্ধ্যার পর থেকে ঠান্ডা বাতাস বইছে ও শীত অনুভূত হচ্ছে। যার কারণে সড়ক এখন আগেভাগেই ফাঁকা হয়ে যায়। আগের মতো যাত্রী পাই না।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় অক্টোবর-নভেম্বর মাসের শুরু থেকে সন্ধ্যার পর শিশির বিন্দু পড়ার কারণে শেষ রাতে শীত অনুভূত হয়। হিমালয়ের কাছাকাছি হওয়ায় হওয়ায় এই জেলায় তীব্র শীত অনুভূত হয়। নভেম্বর মাসের শুরু ও মাঝামাঝিতে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পায় এবং ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে দিকে শীতের তীব্রতা হ্রাস পায়। শনিবার সকালে জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা সারাদেশের এবং চলতি মৌসুমের মধ্যে সর্বনিম্ন।

তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন, শীত মৌসুমে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সবচেয়ে বেশি শীত অনুভূত হয়। শীতে যেন গরিব ও দুস্থরা দুর্ভোগে না পড়েন সেজন্য স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। শীতবস্ত্রের চাহিদা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে অসহায়দের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করে দিয়েছি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com