শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ০২:০৯ পূর্বাহ্ন

নির্যাতনে রিকশাচালকের মৃত্যুর ১২ দিন পর মামলা

গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ দাদন ব্যবসায়ী ছয় ভাইয়ের রাতভর নির্যাতনে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে ছকু মিয়া নামে এক রিকশাচালকের মৃত্যুর ১২ দিন পর আদালতে মামলা করেছেন তার ছেলে মোজাম্মেল হক।

বুধবার (১৬ জুন) বিকেলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সাদুল্লাপুর) আদালতে এ মামলা করেন তিনি। পরে আদালতের বিচারক শবনম মুস্তারী সাদুল্লাপুর থানায় মামলা রেকর্ডভুক্ত করে আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, সাদুল্লাপুর উপজেলার পূর্ব দামোদরপুর গ্রামের ছয় ভাই আলমগীর, আংগুর, রনজু, মনজু, সনজু ও মন্টু মিয়া দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় দাদনের ব্যবসা করছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে ছয় ভাইয়ের সঙ্গে রিকশাচালক ছকু মিয়ার পারিবারিক ও দাদনের টাকা নিয়ে বিরোধ চলছিল। এছাড়া ছকুর ছেলের সঙ্গে মন্টু মিয়ার মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে পুনরায় বিরোধ সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে গত ১৫ মে সন্ধ্যা ৭টার দিকে ছকু মিয়ার বাড়িতে গিয়ে তাকে মারধর করেন ছয় ভাইসহ তাদের লোকজন। এসময় রনজু মিয়া উত্তেজিত হয়ে ছকুর স্পর্শকাতর স্থানে আঘাত করেন। আর মন্টু বুকের ওপর দুই পা দিয়ে পরপর কয়েকবার আঘাত করেন। এভাবেই রাতভর ছকুর ওপর ছয় ভাই ও তাদের লোকজন নির্যাতন চালায়। পর দিন গুরুতর আহত অবস্থায় ছকুকে পরিবারের লোকজন হাসপাতালে নিতে গেলে প্রভাবশালী ছয় ভাই বাধা দেন। ঘটনাটি স্থানীয় এক সংবাদকর্মীর নজরে আসে। পরে তিনি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ ফোন করে পুলিশকে বিষয়টি জানান। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ছকুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

এলাকাবাসী জানান, ঘটনার পাঁচদিন পর দামোদরপুর ইউপি চেয়ারম্যান সাজেদুল ইসলাম স্বাধীনের উপস্থিততে সালিশ বৈঠকে ছেলের প্রেমের খেসারত হিসেবে ছকু মিয়াকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সেই টাকার জন্য ছকুর একমাত্র ঘরটিও ১৫ হাজারে বিক্রি করে দেন দাদন ব্যবসায়ীরা। এরপর তাকে ভিটে ছাড়া করা হয়। পরে বাধ্য হয়ে ছকু মিয়া আশ্রয় নেন গাজীপুরে ছেলের বাসার। সেখানে হাসপাতালের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী তিনি চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ৩ জুন মারা যান।

এ বিষয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বিচারক এজাহার আমলে নিয়েছেন। আগামী ২৩ জুনের মধ্যে মামলা রেকর্ডভুক্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। নির্যাতনে মৃত্যু হয়েছে রিকশাচালক ছকু মিয়ার। নির্যাতনের ঘটনায় নিহতের ভিডিও বক্তব্যসহ পত্র-পত্রিকার কাটিং আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। আশা করছি ন্যায় বিচার পাবো।

সাদুল্লাপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা বলেন, এ বিষয়ে এখনও আদালতের কোনো নথি পাইনি। নথি পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com