সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫, ০৩:৫৪ পূর্বাহ্ন

নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনে আদালতের নোটিশ

মিরণ খন্দকার, একুশের কন্ঠ : বাংলাদেশের নির্বাচনী আচরণবিধি ২০০৮-এর উদ্দেশ্য হলো নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ করা। এই আচরণবিধির মাধ্যমে প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে কিছু নীতিমালা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই নীতিমালাগুলো লঙ্ঘন করলে প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে।

গাজীপুর মহানগরের ১৮ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সফর আলী ১২ ডিসেম্বর বিকাল ৪ টায় নগপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আ ক ম মোজাম্মেল হক এর পক্ষে অনুষ্ঠিত এক নির্বাচনী প্রচারণা সভায় নির্বাচনের আচরণবিধির লঙ্ঘন ও অশালীন বক্তব্য দেন, তিনি বলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম রাসেলের কোন নেতাকর্মীদের ভোটের মাঠে প্রচারণা ও ভোটকেন্দ্রে অবস্থান করতে দেওয়া হবে না। এই ধরনের অশালীন আচরণ ও নির্বাচনী বিধি নিষেধ লঙ্ঘন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি ১৯৪, গাজীপুর ১ যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালত এর কার্যালয় থেকে সাবেক কাউন্সিলর সফর আলীকে সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ এর বিধান লঙ্ঘন বিষয়ে কারণ দর্শানো প্রসঙ্গে একটি আইনি নোটিশ দেন।

নোটিশটিতে বলা হয়, উপর্যুক্ত বিষয়ের প্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, আপনি জনাব সফর আলী সাবেক কাউন্সিলর ১৮ নং ওয়ার্ড, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন, গাজীপুর অদ্য ১২/১২ /২০২৩ইং তারিখ অপরাহ্ন ৪.০০ – ৫.০০ ঘটিকার সময় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ১৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এর কার্যালয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জনাব আ ক ম মোজাম্মেল হক এর পক্ষে অনুষ্ঠিত এক নির্বাচনী প্রচারণা সভায় ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেন এবং উক্ত বক্তব্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে হুমকি প্রদান করে বলেন যে, আসন্ন নির্বাচনের দিন/ভোট গ্রহণের দিন স্বতন্ত্র প্রার্থীর একজন এজেন্ট বা একজন কর্মীকেও আপনি নগপাড়া কেন্দ্রে থাকতে দিবেন না; যা দ্বারা সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থী আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ এর ১১ (ক) নং বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হয়েছে।

উক্ত ধারায় বর্ণিত আছে যে কোন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা উহার মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাহাদের পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি নির্বাচনী প্রচারণাকালে ব্যক্তিগতভাবে উস্কানিমূলক বা মানহানিকর কোন বক্তব্য প্রদান করতে পারিবেন না।

এমতাবস্থায়, উক্ত বিধিমালা সমূহ লঙ্ঘনের কারণে কেন নির্বাচন কমিশনে আপনার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রেরণ করা হবে না বা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হবে না তৎমর্মে আগামী ১৪/১২/২০২৩ খ্রিঃ তারিখ অপরাহ্ন ৩.০০ ঘটিকায় আপনি স্বয়ং অথবা আপনার প্রতিনিধির মাধ্যমে নিম্নের স্বাক্ষরকারীর কার্যালয়ে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য আপনাকে নির্দেশ প্রদান করা হলো।

(বুলবুল আহমেদ)

চেয়ারম্যান, নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি, নির্বাচনী এলাকা গাজীপুর ১ ও যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ , ২য় আদালত গাজীপুর।

সম্প্রতি, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অমান্য করে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে বেশ কিছু প্রার্থীকে আদালতের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এই নোটিশ প্রদান একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে নির্বাচনী আচরণবিধির গুরুত্ব সম্পর্কে প্রার্থীদের সচেতন করা সম্ভব হবে।

নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন নির্বাচনের সুষ্ঠুতা ও নিরপেক্ষতার জন্য হুমকিস্বরূপ। এই আচরণবিধি লঙ্ঘনের ফলে নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির সুযোগ তৈরি হয়। তাই, নির্বাচনী আচরণবিধির সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আদালত কর্তৃক প্রদত্ত এই নোটিশের মাধ্যমে প্রার্থী ও কর্মীদের অবশ্যই নির্বাচনী আচরণবিধির গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন হওয়া উচিত। এই আচরণবিধির নীতিমালাগুলো মেনে চলার জন্য প্রার্থী ও কর্মীদের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

আশা করা যায়, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে নির্বাচনী আচরণবিধির সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে এবং বাংলাদেশের নির্বাচন আরও সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com