শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ০২:৫০ অপরাহ্ন
স্পোর্টস ডেস্ক, একুশের কণ্ঠ:: ১৬ বছর পর প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ওয়ানডে জিতে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ। অভিজ্ঞ অনেক ক্রিকেটারকে ছাড়াই তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে নিউজিল্যান্ডকে ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে টাইগাররা।
নেপিয়ারে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে তিন টাইগার বোলার শরিফুল ইসলাম, তানজিম সাকিব ও সৌম্য সরকারের বোলিং তোপে মাত্র ৯৮ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। ৯৯ রানেই লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১৫ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। কিউইদের বিপক্ষে আজ অর্ধশতক তুলে নিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দেখে শুনে খেলতে থাকেন টাইগারদের দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও এনামুল হক বিজয়। কিন্তু ইনিংসের পঞ্চম ওভারে চোখে কিছু একটা সমস্যা হচ্ছিল সৌম্যর। ঠিকঠাক দেখতে পাচ্ছিলেন না বলে ইঙ্গিত করছিলেন। পানিও দিয়েছিলেন। কিন্তু কাজ হয়নি। পরে ফিজিওকে ডেকে পাঠান। তার চোখ পর্যবেক্ষণ করে দেয়া হয় ড্রপ। তবে সমস্যার সমাধান হয়নি। তাতে ১৬ বলে ৪ রান করা সৌম্য বাধ্য হয়ে ছাড়েন ক্রিজ।
সৌম্যর পর ক্রিজে আসেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। বিজয়কে নিয়ে দেখশুনেই খেলতে থাকেন তিনি। ধীরে ধীরে টাইগাররা এগিয়ে যাচ্ছিল জয়ের দিকে। এর মাঝেই বাংলাদেশের সামনে সুযোগ আসে কিউইদের ১০ উইকেটে হারানোর। ১৯৮৭ সালের পর আর কখনও ১০ উইকেটে হারেনি নিউজিল্যান্ড। কিন্তু দলীয় ৮৪ রানে বিজয়ের বিদায়ে সেই সুযোগ হারায় টাইগাররা। ৩৩ বলে ৩৭ করে বিজয় উইলিয়াম ও’রোর্কের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে গেলে বাঙে ৬৯ রানের জুটি।
বিজয় যখন ফেরেন, তখন জয় থেকে কেবল ১৫ রান দূরে ছিল বাংলাদেশ। বাকি কাজটা লিটনকে সঙ্গে নিয়ে দ্রুতই শেষ করেছেন শান্ত। এরই মধ্যে নিজের হাফ সেঞ্চুরিটাও তোলে নেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার। কিউইদের আজ তিনি ৪২ বলে তুলে নেন ৫০ রান। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ৫১ রানের ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
এর আগে নেপিয়ারে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ১৬ রানেই প্রথম উইকেট হারায় কিউইরা। তানিজিম সাকিবের শিকার হয়ে শুরুতেই সাজঘরে ফিরে রাচিন রবীন্দ্র। ১২ বলে মাত্র ৮ রান করে তানিজিম সাকিবের বলে মুশফিকের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান সাজঘরে।
রাচিনের পর হেনরি নিকোলসকেও ফেরান তানজিম সাকিব। সাকিবের বলে মিড অনে অধিনায়ক শান্তর হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি। তানজিম সাকিবের পর কিউই শিবিরে আঘাত হানেন শরিফুল ইসলাম। একে একে সাজঘরে ফেরান টম লাথাম ও উইল ইয়ং ও মার্ক চ্যাপম্যানকে।
শরিফুলের বলে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান টম লাথাম। আউট হওয়ার আগে করেন ৩৪ বলে ২১ রান। টম লাথামের পথ ধরে সাজঘরে ফিরে যান উইল ইয়ংও। শরিফুলের বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান তিনি। তার বিদায়ে ৬১ রানেই ৪ উইকেট হারায় কিউইরা।
দলের বিপদ আরও বাড়িয়ে সাজঘরে ফিরে যান মার্ক চ্যাপম্যানও। তাকেও ফেরান শরিফুল। শরিফুলের বলে বোল্ড হয়ে মাত্র ২ রান করেই সাজঘরে ফিরে যান মার্ক চ্যাপম্যান।
শরিফুলের পর আবারও কিউই শিবিরে আঘাত হানেন তানজিম সাকিব। তুলে নেন নিজের তৃতীয় উইকেট। সাকিবের বলে ব্যাওয়ার্ড পয়েন্টে মেহেদী হাাসন মিরাজের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন টম ব্লান্ডেল। আউট হওয়ার আগে করেন ১৭ বলে ৪ রান।
তানিজম সাকিব আর শরিফুলের পর কিউই শিবিরে আঘাত হানেন সৌম্য সরকার। সৌম্যের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান জস ক্লার্কসন। আউট হওয়ার আহে করেন ২৩ বলে ১৬ রান। জস ক্লার্কসনের পর অ্যাডাম মিলনেকেও ফেরান সৌম্য। তিনিও বোল্ড হয়ে ফিরে সাজঘরে।
জস ক্লার্কসনের আর অ্যাডাম মিলনের পর সৌম্যের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে যান আদিত্য অশোকও। সৌমের বলে মুশফিকুর রহীমের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরের পথ ধরেন তিনি। তার বিদায়ে ৯৭ রানেই ৯ উইকেট হারায় কিউিইরা।
এর তিন বোলারের পর কিউই শিবিরে আঘাত হানেন মোস্তাফিজ। মোস্তাফিজের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে যান উইলিয়াম ও’রোর্ক। যার ফলে মাত্র ৯৮ রানেই অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড।
ওয়ানডেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে কম রান করান নতুন রেকর্ড গড়েছে তারা। এর আগে টাইগারদের বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে কিউইদের সর্বনিম্ন স্কোর ছিল ১৬২। যেটি ২০১৩ সালে মিরপুরের শেরে বাংলায় করেছিল তারা।