মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:০০ পূর্বাহ্ন

নারী এনজিও কর্মীর ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেন যুবলীগ নেতা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি:: লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় শ্যালকের সাথে বিয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এক নারী এনজিওকর্মীর ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে শ্যামল চন্দ্র(৩৮) নামে এক যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে।

এ ব্যাপারে শনিবার (২৭ মার্চ) বিকেলে টাকা উদ্ধার ও ন্যায় বিচার চেয়ে আদিতমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী এনজিও কর্মী রবিতা রানী।

অভিযুক্ত শ্যামল চন্দ্র উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের মহিষাশ্বহর বড়াইবাড়ি গ্রামের মৃত নিরঞ্জন রায়ের ছেলে। তিনি ওই ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক।

ভুক্তভোগী রবিতা রানী কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার পুটিমারী এলাকার মৃত বীরেন্দ্রনাথ রায়ের মেয়ে। তিনি স্থানীয় এনজিও আরডিআরএস বাংলাদেশ আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ব্রাঞ্চে কর্মরত।

থানায় দায়ের করা অভিযোগে প্রকাশ, আরডিআরএস বাংলাদেশ নামে স্থানীয় একটি এনজিও’র আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা শাখায় কর্মরত রয়েছেন রবিতা রানী। এনজিওটির ঋন প্রদান ও কিস্তি আদায় নিয়ে পরিচয় ঘটে যুবলীগ নেতা শ্যামলের সাথে। পরিচয়ের এক পর্যয়ে শ্যালক মোহন চন্দ্রের সাথে ওই এনজিও কর্মীর বিয়ের প্রস্তাব দেন যুবলীগ নেতা শ্যামল চন্দ্র। বিবাহযোগ্য শ্যালক মোহন চন্দ্রের অফিস সহকারী পদে মহিষাশ্বহর উচ্চ বিদ্যালয়ে চাকুরীর কথা রয়েছে। এজন্য কিছু টাকা প্রয়োজন। টাকা হলে চাকুরী হয়ে যাবে। চাকুরী হলেই রবিতার সাথে শ্যালকের বিয়ে দিবেন যুবলীগ নেতা। তার এমন প্রস্তাবে রাজি হন এনজিও কর্মী রবিতা রানী।

সেই অনুযায়ী ছেলের চাকুরীর জন্য ২০১৯ সালের ১০ নভেম্বর থেকে ২০২০ সালের ১৭ জুন পর্যন্ত বিভিন্ন অজুহাতে এনজিও কর্মী রবিতা রানীর কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন যুবলীগ নেতা শ্যামল। গত মাসে বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করার কথা থাকলেও তা না করায় অবশেষে চাকুরীর জন্য নেয়া ৫ লাখ টাকা ফেরৎ চাইলে উল্টো এনজিও কর্মীকে হুমকী দেন যুবলীগ নেতা শ্যামল চন্দ্র। তার অব্যহত হুমকীতে রবিতা রানী এনজিও’র চাকুরীও ছেড়ে দেন বলেও অভিযোগ করেন।

শ্যালকের সাথে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে হাতিয়ে নেয়া টাকা উদ্ধার করতে স্থানীয় ভাবে বৈঠক বসলে আজ কাল বলে টালবাহনা করেন। অবশেষে নিরুপায় হয়ে টাকা ৫ লাখ উদ্ধার ও প্রতারক শ্যামল চন্দ্র এবং তার শ্যালক মোহন চন্দ্রের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় লিখিত একটি অভিযোগ দায়ের করেন রবিতা রানী।

ভুক্তভোগি রবিতা রানী বলেন, বিয়ের প্রস্তাব দেয়ায় ছেলের চাকুরীর জন্য ৫লাখ টাকা দিয়েছি শ্যামলকে। বিয়ে তো করলই না। এখন খোঁজ নিয়ে দেখি তার শ্যালকের অনেক আগে বিয়ে হয়েছে। মোহন নামে যে শ্যালকের পরিচয় দিয়ে কথা বলেছি তা শ্যামল নিজেই। মুলত প্রতারনা করে টাকাগুলো হাতিয়ে নিয়েছে। ভাল ছেলের সাথে বিয়ের আশায় ধার-দেনা করে টাকা দিয়েছি। টাকাও নেই, বিয়েও হলো না। এসব বিষয়ের প্রমান স্বরুপ তার সাথে কথা বলার মোবাইল রেকর্ড রয়েছে। টাকা ফেরৎ না দিলে যুবলীগ নেতা শ্যামলের বাড়িতে বিষপানে আতœহত্যার হুমকী দেন তিনি।

অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা শ্যামল চন্দ্র বলেন, আমি যুবলীগের ইউনিয়ন কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক। টাকা নিয়েছি, তার কি প্রমাণ আছে? কোন স্বাক্ষী নেই। মুলত আমার অভিযোগের কারনে রবিতা রানী চাকুরী চ্যুত হয়েছেন। তাই প্রতিশোধ নিতে এ অভিযোগ দায়ের করেছেন।

আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com